সম্প্রতি দেশের বন্যা পরিস্থিতিতে ছয় মাসের খাদ্য সহায়তাসহ ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে মানবাধিকার ও পরিবেশ-প্রতিবেশ সুরক্ষা বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করা সামাজিক সংগঠন প্রাণ ও প্রকৃতি সুরক্ষা মঞ্চ। আজ মঙ্গলবার সংগঠনটির আহ্বায়ক ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানান।
তিনি বলেন, ‘উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে না হতেই এবারে আগস্ট-সেপ্টেম্বরের দিকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বন্যা বা জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি হলে দেশের অর্ধেকেরও বেশী জনগোষ্ঠী দুর্ভোগের শিকার হবে।’
ভাটির দেশ হিসেবে উজানের ঢলের পানি হতে সৃষ্ট বন্যা আমরা এড়াতে পারবো না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অতীতে বন্যা এতোদিন দীর্ঘস্থায়ী হতো না; বলাইবাহুল্য নদীবিনাশী বাঁধ, যেখানে-সেখানে স্লুইস-কালভার্ট-সেতু তৈরি করে অবকাঠামোকেন্দ্রিক যে উন্নয়ন আমরা বাস্তবায়ন করে চলেছি, তার ফলে বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে; প্রকৃতপক্ষে পানি সহজভাবে সাগরে পড়তে না পেরে আটকে যাচ্ছে, আর বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে, যা বন্যার নামে প্রকৃতপক্ষে জলাবদ্ধতা তৈরি করছে।’
ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া উল্লেখ করেন, একে কভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীর কারণে দেশের শ্রমজীবী, ভূমিহীন, দিনমজুর প্রভৃতি নিম্ন আয়ের মানুষেরা খুবই কষ্টে আছেন। তার উপর বন্যা মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে। মানুষের জীবন-জীবিকা একেবারে চরমতম বিপর্যয়ের কবলে পড়েছে। দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটানোর খাবার সংকটের পাশাপাশি সুপেয় পানির হাহাকার পড়েছে। ক্ষেতের ফসল, গবাদিপশু-পাখি ও মৎস্যখামারীদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। যা খাদ্য নিরাপত্তার জন্যে বড় ধরনের হুমকি। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বানভাসী মানুষকে রক্ষায় ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। বন্যা পরিস্থিতি অনেক ক্ষেত্রে ত্রাণ বিলি ব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত করছে।
এই দুর্যোগে মানুষকে টিকিয়ে রাখাই এখন একটি বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করে সংগঠনটি। একারণে পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে এই বন্যাকে জাতীয় দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্যে কমপক্ষে ছয় মাসের জন্যে খাদ্য সহায়তা ও পুনর্বাসনের জন্যে দীর্ঘমেয়াদী কার্যক্রম গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছে প্রাণ ও প্রকৃতি সুরক্ষা মঞ্চ।
