বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, বাণিজ্য সফলতায় বাংলাদেশের নারীরা অনেক এগিয়ে গেছে। বাংলাদেশ সরকার নারীদের দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। দেশের জনশক্তির প্রায় অর্ধেক নারী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার এ বিপুল নারী জনশক্তিকে উৎপাদনশীল কাজে লাগাতে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ফলে অনেক নারী বাণিজ্য করে সফল হয়েছেন। গত মঙ্গলবার আইটিসি জেনেভা অফিসের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বাংলাদেশ সময় গভীর রাতে জাতিসংঘ (ইউএন) এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) উদ্যোগে আয়োজিত ‘সি ট্রেড আউট লুক’
শীর্ষক এক ভার্চুয়াল হাই লেভেল পলিটিক্যাল ফোরামের আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
বাণিজ্যমন্ত্রী তার আলোচনায় বলেন, স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম এন্ট্রাপ্রেনিউর্সের (এসএমই) মাধ্যমে উদ্যোক্তা নারীদের ঋণ ও প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। ফলে বিশেষ করে কুটির শিল্পে নারীদের অগ্রযাত্রা চোখে পড়ার মতো। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় নারী উদ্যোক্তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে এবং প্রয়োজনে বিভিন্ন সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। এ কারণে বাংলাদেশে নারী উদ্যোক্তা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাণিজ্য ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে।
টিপু মুনশি বলেন, কুটির শিল্পে বাংলাদেশের নারীরা বেশ সফলতা পেয়েছে। ঢাকাসহ জেলায়গুলোয় নারী চেম্বার অব কমার্স গড়ে উঠেছে। শিল্প খাতের প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার ঋণের মধ্যে শতকরা ২০ ভাগ ঋণ এসএমইর মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তাদের দেয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রফতানিতে পৃথিবীর মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এ খাতে প্রায় ৪৫ লাখ শ্রমিক কাজ করছে। এর প্রায় ৮০ ভাগই নারী। চলমান কভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবেলায় এ নারী কর্মীদের সুরক্ষা প্রদানের জন্য বেতন খাতে সরকার ৫ হাজার কোটি টাকা নামমাত্র সুদে সরবরাহ করেছে। গৃহীত ঋণের কিস্তি প্রদান স্থগিত করা হয়েছে। সরকারের নানামুখী গৃহীত পদক্ষেপে বিশ্ব মন্দা অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশের অর্থনীতি সচল রয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকার এরই মধ্যে জরুরি, স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। পর্যায়ক্রমে তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
জাতিসংঘ ২০১৬ সালে নারীর ক্ষমতায়নে বিশেষ সফলতার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’
পদকে ভূষিত করে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষের ব্যবধান কমানোর সফলতায় উইম্যান ইন পার্লামেন্ট (ডব্লিউআইপি) ২০১৪ সালে ‘ডব্লিউআইপি গ্লোবাল ফোরাম অ্যাওয়ার্ড’
এবং নারী শিক্ষায় সফলতার জন্য তিনি ‘ট্রি অব পিস’
অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন।
ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সেন্টারের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক ডরোথি টেম্বোর সঞ্চালনায় যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টারি আন্ডার সেক্রেটারি অব স্টেট এবং প্রধানমন্ত্রীর নারী শিক্ষা বিষয়ক বিশেষ দূত বারোনেস সাগ সিবিই, ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর সিনেটর এবং শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী পাউলা গোপি-স্কোন, নেগারিয়ার নারী বিষয়ক এবং সোস্যাল ডেভেলপমেন্টমন্ত্রী ডামে পাউলিন টালেন এবং কানাডার ক্ষুদ্র বাণিজ্য, এক্সপোর্ট প্রমোশন অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড বিষয়ক মন্ত্রী মেরি এনজি বক্তব্য রাখেন।