বাংলাদেশ রেলওয়ে

প্রথম দিন লক্ষ্যমাত্রার ৯০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে চলাচল করলো ট্রেন

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম ব্যুরো

দীর্ঘ ৬৭ দিন পর যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ  রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সক্ষমতার ৫০ শতাংশ কম যাত্রী নিয়ে ট্রেনগুলো যাত্রী পরিবহনের কথা ছিল। কিন্তু প্রথম দিনে লক্ষ্যমাত্রার ৯১ শতাংশ যাত্রী পরিবহন করেছে রেলের বিভিন্ন ট্রেন। তবে আগামীতে ট্রেনের যাত্রী পরিবহন লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ পূরণ হবে বলে মনে করছেন রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা। 

বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে সাধারণ ছুটি শুরু হলে দেশে রেলওয়ে সেবা বন্ধ হয়ে যায় ২৫ জানুয়ারি থেকে। এর মধ্যে ৩১  মে থেকে সক্ষমতার ৫০ শতাংশ টিকিট বিক্রি সাপেক্ষে ট্রেন সেবা সীমিত পরিসরে চালু হয়। প্রথমদিন চলাচলকারী ৬টি ট্রেনের নির্ধারিত ৫০ শতাংশ টিকিট ছিল ২১৯০টি। কিন্তু প্রথমদিন এসব ট্রেনের টিকিট বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ২টি। ৩০ মে দুপুর থেকে শুধুমাত্র অনলাইনে টিকিট বিক্রি কার্যক্রম শুরু হলে প্রথমদিনের অর্থাৎ ৩১ মে’র প্রতিটি ট্রেনের অধিকাংশ টিকিটই বিক্রি হয়ে যায়। এর মধ্যে পঞ্চগড় এক্সপ্রেসের টিকিট বিক্রি হয় ৪৪৮টির মধ্যে ৪৪৮টি (৭৯৪ নং ট্রেন)। এছাড়া লালমনি এক্সপ্রেসের ২৮৫/২৮৫ (৭৫২ নং ট্রেন), চিত্রা ৪৩৩/৪৩৩ (৭৬৩ নং ট্রেন), কালনী ২৭৩/২৬৬ (৭৭৪ নং ট্রেন), সুবর্ণ এক্সপ্রেস ৪৫৪/৩৫৫ (৭০২ নং ট্রেন), সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ২৯৭/২১৬টি (৭৮৭ নং ট্রেন) টিকিট বিক্রি হয়। 

রেলের সিনিয়র তথ্য অফিসার মো. শরিফুল আলম বণিক বার্তাকে বলেন, প্রথম দিন সত্ত্বেও রেলে যাত্রী সংখ্যা আশানুরূপ হয়েছে। রেল ভ্রমণের ক্ষেত্রে যাত্রীরা শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন করছে। এমনিতে রেলওয়ে নিরাপদ বাহন হিসাবে স্বীকৃত।

সাধারণ ছুটি ১৫ জুন পর্যন্ত প্রত্যাহারের পর ৩০ মে সীমিত পরিসরে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের ঘোষণা দেয় রেলওয়ে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি  মোতাবেক সামাজিক দূরত্ব বজায়  রেখে  ট্রেন চালানো হবে। দুটি গ্রুপে ভাগ করে রেলওয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হবে। এর মধ্যে ৩১ মে চলাচলকারী ৮ জোড়া ট্রেনের মধ্যে রয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের সুবর্ণ এক্সপ্রেস (৭০১/৭০২) ও  সোনার বাংলা এক্সপ্রেস (৭৮৭/৭৮৮), ঢাকা-সিলেট রুটের কালনী এক্সপ্রেস (৭৭৩/৭৭৪), ঢাকা-বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রুটের পঞ্চগড় এক্সপ্রেস (৭৯৩/৭৯৪), ঢাকা-রাজশাহী রুটের বনলতা এক্সপ্রেস (৭৯১/৭৯২), ঢাকা-লালমনিরহাট রুটের লালমনি এক্সপ্রেস (৭৫১/৭৫২), চট্টগ্রাম-সিলেট-চট্টগ্রাম রুটের  উদয়ন ও পাহাড়িকা এক্সপ্রেস (৭২৩/৭২০) এবং ঢাকা-খুলনা রুটের চিত্রা এক্সপ্রেস (৭৬৩/৭৬৪) ট্রেনগুলো। 

অপর দিকে ৩ জুন থেকে চলাচলকারী ১১ জোড়া ট্রেনের মধ্যে রয়েছে ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ বাজার রুটের তিস্তা এক্সপ্রেস (৭০৭/৭০৮), ঢাকা-বেনাপোল রুটের বেনাপোল এক্সপ্রেস (৭৯৫/৭৯৬), ঢাকা-চিলাহাটি রুটের নীলসাগর এক্সপ্রেস (৭৬৫/৭৬৬), খুলনা-চিলাহাটি রুটের  রূপসা এক্সপ্রেস (৭২৭/৭২৮), খুলনা-রাজশাহী রুটের কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস (৭১৫/৭১৬), রাজশাহী-গোয়ালন্দঘাট রুটের মধুমতি এক্সপ্রেস (৭৫৫/৭৫৬), চট্টগ্রাম-চাঁদপুর রুটের মেঘনা এক্সপ্রেস (৭২৯/৭৩০), ঢাকা-কিশোরগঞ্জ রুটের কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস (৭৮১/৭৮২) এবং ঢাকা-নোয়াখালী রুটের উপকূল এক্সপ্রেস (৭১১/৭১২), ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ বাজার রুটের ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস (৭৪৩/৭৪৪) এবং ঢাকা-কুড়িগ্রাম রুটের কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস (৭৯৭/৭৯৮) ট্রেনগুলো।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের সময় সীমিত পরিসরে চলাচলরত ট্রেনগুলোর জন্য যাত্রীদের কঠোর স্বাস্থ্য নির্দেশনা পরিপালন করা হচ্ছে। শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপের জন্য যাত্রীকে মাস্ক পরিহিত অবস্থায় ট্রেন ছাড়ার ন্যুনতম এক ঘণ্টা আগে স্টেশনে আসতে হবে।  ট্রেনের অভ্যন্তর ও প্ল্যাটফর্মে হকার বা কুলি পণ্য বিক্রি করবে না। ট্রেনের ক্যাটারিং সার্ভিসও বন্ধ রাখা হবে। ভিড় এড়াতে স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম টিকিট বিক্রি বন্ধ থাকবে এবং প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করতে যাত্রীকে আবশ্যিকভাবে টিকিট প্রদর্শন করতে হবে। আগে নির্ধারিত ট্রেনের ১০ দিন আগে অগ্রিম টিকিট বিক্রি হলেও বর্তমানে ৫ দিন আগেই অগ্রিম টিকিট ক্রয় করতে পারবে যাত্রীরা।  স্বাস্থ্যবিধি কঠোর ভাবে পরিপালনের জন্য সাময়িক ভাবে মাসিক ও স্বল্প দূরত্বের স্টেশনগুলো যেমন ঢাকা বিমানবন্দর, জয়দেবপুর, নরসিংদীতে  কোন ট্রেন যাত্রা বিরতি করবে না।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন