সরকার পতনের সময় উদ্ভূত সংকটময় পরিস্থিতিতে পালিয়ে
যাওয়া বন্দিদের মধ্যে এখনো ৯০০ পলাতক। মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) কারা মহাপরিদর্শক
(আইজি প্রিজন্স) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ৬ আগস্ট দেশের কয়েকটি কারাগারে
বিশৃঙ্খলা-বিদ্রোহ করে বন্দিরা। একই সঙ্গে ব্যাপক ভাংচুর, দাঙ্গা হাঙ্গামা ও অগ্নিসংযোগের
মাধ্যমে কারাগারগুলো থেকে মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন, বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত বন্দিসহ
বিচারাধীন মামলার দুই হাজারের বেশি বন্দি পালিয়ে যায়। এদের মধ্যে অনেককে পুনরায় গ্রেফতার
করা হলেও এখনো পলাতক রয়েছে ৯০০ জন।
আইজি প্রিজন্স বলেন, কয়েকটি কারাগার থেকে
গোলাবারুদ লুটের ঘটনাও ঘটে এবং কয়েকটি কারাগার থেকে পালানোর সময় কয়েকজন বন্দির মৃত্যুসহ
অনেক কারা কর্মকর্তা এবং কারারক্ষী গুরুতর আহত হন। অগ্নি সংযোগ এবং ব্যাপক ভাংচুরের
ফলে দুটি কারাগারে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। অনেক কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসস্থলও
ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে সেনাবাহিনীর তাৎক্ষণিক সহায়তায় কারা বিভাগ অন্যান্য
কারাগারগুলো সুরক্ষিত রাখতে সক্ষম হয়।
তিনি আরো বলেন, পরে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির
উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া অধিকাংশ বন্দিকেই কারাগারে ফেরত নিয়ে
আসা সম্ভব হয়। এর মধ্যে কিছু বন্দি স্বেচ্ছায় এবং বাকিদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায়
গ্রেফতার করা হয়। এ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এরই মধ্যে কারাগারের লুটকৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদের
উল্লেখযোগ্য অংশও উদ্ধার করা হয়েছে, অবশিষ্টগুলো উদ্ধারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর
তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
আইজি প্রিজন্স বলেন, কারাগারকে সেবাগ্রহণকারীদের
আস্থাভাজন হিসেবে গড়ে তোলাসহ একটি প্রকৃত সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের
পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এরেই মধ্যে প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা প্রণয়নসহ দক্ষতা এবং
যোগ্যতার ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো পদায়নের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ
সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন করে স্থবির পদোন্নতির ক্ষেত্রে গতিশীলতা আনয়নসহ জনবল বৃদ্ধির
ন্যায় ন্যায্য দাবিগুলোর বিষয়ে নানামুখী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
এছাড়া দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের
বিষয়ে যথাযথ তদন্তপূর্বক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার কার্যক্রমও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে
বলে জানান তিনি। এক্ষেত্রে কারা বিভাগ নিশ্চয়তা দিচ্ছে যে, এখন থেকে কারা বিভাগের কোনো
কর্মকর্তা-কর্মচারীর দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুততার সঙ্গে কঠোর
পদক্ষেপ নেয়া হবে।