যৌথ অভিযান

পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্রের ৩২ শতাংশ উদ্ধার হয়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : বণিক বার্তা

সরকার পতনের পর থানায় হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি লুট হওয়া অস্ত্রের ৩২ শতাংশ এখনো উদ্ধার হয়নি। এর মধ্যে রয়েছে এসএমজি, এসএমটি, রিভলবার, শটগানসহ ১১ ধরনের অস্ত্র। পাশাপাশি সন্ধান পাওয়া যায়নি খোয়া যাওয়া গোলাবারুদের অর্ধেকেরও। দ্রুততম সময়ের মধ্যে পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারলে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে পুলিশের থানা রয়েছে ৬৩৯টি। এর মধ্যে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ৪৫০টি থানা জনরোষের শিকার হয়। লুট করা হয় পুলিশের ৫ হাজার ৮২৯টি আগ্নেয়াস্ত্র। এর মধ্যে রাইফেল ১ হাজার ১৪৭টি, টি ০৮ মডেলের রাইফেল ১০টি, টি ৫৬ মডেলের এসএমজি ২৫১টি, টি ৫৬ মডেলের এলএমজি ৩২টি, টি ৫৪ মডেলের পিস্তল ১ হাজার ৫৫৬টি, এসএমটি ৩৩টি, শটগান ২ হাজার ১৯০টি, গ্যাসগান ৫৯৩টি, টিয়ার গ্যাস লঞ্চার ১৪টি এবং সিগন্যাল পিস্তল তিনটি। এসব অস্ত্রের মধ্যে গত ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত উদ্ধার করা হয় ৩ হাজার ৭৬৩টি। উদ্ধার না হওয়া ২ হাজার ৬৬টি অস্ত্রের সন্ধান পেতে দেশজুড়ে শুরু হয় অস্ত্র উদ্ধারের যৌথ অভিযান।

পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ৪ সেপ্টেম্বর থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে দেশজুড়ে অভিযান শুরু হয়। যৌথ অভিযানে রয়েছে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী, কোস্টগার্ড ও র‍্যাব। গতকাল পর্যন্ত ১০ দিনের যৌথ অভিযানে ১৪৪টি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। এর মধ্যে রিভলবার আটটি, পিস্তল ৪১টি, রাইফেল ১১টি, শটগান ১৭টি, পাইপগান পাঁচটি, শুটারগান ১৯টি, এলজি ১০টি, বন্দুক ২২টি, একে ৪৭ একটি, গ্যাসগান একটি, চাইনিজ রাইফেল একটি, এয়ারগান একটি, টিয়ার গ্যাস লঞ্চার একটি, এসএমজি তিনটি ও এসবিবিএল তিনটি। এ হিসাবে এখনো পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্রের মধ্যে ১ হাজার ৯২২টি এখনো উদ্ধার হয়নি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ও প্রাণহানি ঘটে। শেষ তিনদিন (শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতা ছাড়ার আগে-পরে) থানা, ফাঁড়িসহ পুলিশের বেশকিছু স্থাপনায় হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। অনেক জায়গায় অস্ত্রসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ও নথি লুট হয়। এসব ঘটনায় পুলিশের প্রায় সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। থানার নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্যমতে, ১৫ আগস্ট থেকে সব থানায় কার্যক্রম চালু হয়। লুট হওয়া এসব অস্ত্রের পাশাপাশি লাইসেন্স স্থগিতের পর যেসব অস্ত্র থানায় জমা পড়েনি সেগুলো উদ্ধারেও অভিযানে রয়েছে যৌথ বাহিনী। তবে এ অভিযানে সেগুলোর কতটি উদ্ধার করা হয়েছে, সে তথ্য এখনো মেলেনি। সরকার পতনের পর সহিংসতার মধ্যে পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র জমা দেয়ার শেষ সময় ছিল ৩ সেপ্টেম্বর। অভিযান শুরু হয়েছে ওই দিন রাত ১২টা থেকে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন