পাপুলের শ্যালিকা ও কর কর্মকর্তাসহ তিনজনের নামে দুদকের মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : বণিক বার্তা

সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সহিদ ইসলাম পাপুলের শ্যালিকা জেসমিন প্রধান ও উপ-কর কমিশনার খন্দকার মো. হাসানুল ইসলামসহ তিনজনের নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় আয়কর রিটার্ন ও রেজিস্টার ঘষা-মাজার মাধ্যমে প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়েছে। দুদকের উপপরিচালক মো. মশিউর রহমান গতকাল এ মামলা করেন। মামলার অন্য আসামি হলেন কর অঞ্চল-৮-এর উচ্চমান সহকারী হিরেশ লাল বর্মণ। দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে (ঢাকা-১) এ মামলা হয়েছে।

এর আগে ২০২০ সালের ১১ নভেম্বর অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে জেসমিন প্রধান, সাবেক এমপি পাপুল, বোন সেলিনা ইসলাম ও ভাগ্নি ওয়াফা ইসলামকে আসামি করে মামলা করেন দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন। মামলার এজাহারে বলা হয়, জেসমিন প্রধান ২ কোটি ৩১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৮ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। জেসমিন প্রধান একটি সাধারণ পরিবারের মেয়ে। অথচ সাধারণ পরিবারের সন্তান জেসমিন প্রধান এখন বিত্তশালী। ২৩ বছর বয়সী জেসমিনের নিজস্ব কোনো আয়ের উৎস নেই। অথচ সাত বছরের ব্যবধানে তিনি শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। 

মামলায় আয়কর রিটার্ন ও রেজিস্টার ঘষামাজার বিষয়ে উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বণিক বার্তাকে বলেন, ‘কর ফাইলে জালিয়াতির তথ্য আমিই উদ্ঘাটন করি প্রথম। কর অফিসের রেকর্ডপত্র জব্দ করেছিলাম। ঘষা-মাজা আবিষ্কার করি। একটি ব্যতিক্রমধর্মী তথ্য ছিল। পরে বুঝলাম অনেকেই এ কাজ করে। কর অফিসে এসব ঘটনা ঘটে। কিন্তু বাইরে থেকে কেউ জানেন না। এ তথ্য কর কমিশনের কাছে আমিই চেয়েছিলাম। তারা টিম গঠন করে প্রতিবেদন দেন।’

গতকাল দায়ের করা মামলার এজাহারে অভিযোগ আনা হয়, অবৈধ টাকার বৈধতা দিতে জেসমিন প্রধান ২০২১ সালের শেষ দিকে কর সার্কেল-১৬৫ ও কর অঞ্চল-০৮-এর কর্মচারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর তাদের যোগসাজশে ২০১৬-১৭ করবর্ষ থেকে ২০২০-২১ করবর্ষ পর্যন্ত রিটার্নগুলো একই দিনে তড়িঘড়ি করে দাখিল করেন। কর সার্কেলের যাবতীয় রেজিস্টারে ঘষা-মাজা করে টাকার অংক পরিবর্তন-পরিমার্জন করা হয়।’ 

একাদশ সংসদ নির্বাচনে লক্ষ্মীপুর-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হন কাজী সহিদ ইসলাম পাপুল। পরে তার স্ত্রী সেলিনা ইসলামও সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য হন। অর্থ ও মানব পাচার এবং ঘুস প্রদানের অভিযোগে ২০২০ সালের জুনে কুয়েতে গ্রেফতার হন পাপুল। ওই মামলার বিচার শেষে ২০২১ সালের ২৮ জানুয়ারি তাকে চার বছরের কারাদণ্ড দেন কুয়েতের একটি আদালত। কুয়েতের রায়ের নথি হাতে পাওয়ার পর ২০২১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পাপুলের সংসদ সদস্য পদ বাতিল করে জাতীয় সংসদ।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন