বিশ্বকাপের প্রস্তুতি সিরিজে মুখোমুখি বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ছবি : বণিক বার্তা ( ফাইল ছবি)

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দুয়ারে। আগামী ১ জুন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে বসছে নবম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আসর। এ আসরের আগে ঘরের মাঠে শেষবারের মতো কোনো সিরিজ খেলতে নামছে বাংলাদেশ। আগামী শুক্রবার চট্টগ্রামে চিরচেনা দল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শুরু হবে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। 

বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মধ্যে একটি সময় লড়াই দারুণ জমে উঠত। প্রায় সমশক্তির ছিল আফ্রিকা ও এশিয়ার দুটি দল। এ দুটি দল প্রায়ই একে অপরের বিপক্ষে সিরিজ খেলেছে। যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলোয় দুই দলের দ্বৈরথ অনেক কমে গেছে। অবশেষে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখে মুখোমুখি হচ্ছে চিরচেনা দুই প্রতিদ্বন্দ্বী।  

টি-টোয়েন্টিতে এখন পর্যন্ত ২০ বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ১৩টি ও জিম্বাবুয়ে সাতটিতে জিতেছে। দেড় বছরের বেশি সময় পর সংক্ষিপ্ত ভার্সনের ক্রিকেটে মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে। সর্বশেষ ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর ব্রিসবেনে বিশ্বকাপ ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে ৩ রানে হারায় বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টিতে দুই দলের প্রথম দেখা ২০০৬ সালে খুলনা। সেই ম্যাচে ৪৩ রানের জয় পায় বাংলাদেশ। এরপর আরো ১৯ ম্যাচে দুই দলের লড়াই হয়, যাতে বাংলাদেশই এগিয়ে রয়েছে। 

দুই দল মোট সাতটি টি-টোয়েন্টি সিরিজে মুখোমুখি হয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশ তিনটি ও জিম্বাবুয়ে একটি সিরিজ জিতেছে। ড্র হয়েছে বাকি তিনটি সিরিজ। দল দুটি সর্বশেষ সিরিজ খেলে ২০২২ সালে। সেবার নিজেদের মাঠে সিরিজটা ২-১-এ জিতে নেয় জিম্বাবুয়ে।

জিম্বাবুয়ের সঙ্গে এখন ১০ ম্যাচে সর্বোচ্চ ৩০৮ রান করেছে লিটন কুমার দাস। এরপর রয়েছেন সৌম্য সরকার (২৯৮), মাহমুদউল্লাহ (২৭১ রান), সাকিব আল হাসান (২৫৬ রান) ও আফিফ হোসেন (২০৫ রান)। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি বোলার মুস্তাফিজুর রহমান। ১৩ ম্যাচে ১৪.১২ গড়ে তিনি নিয়েছেন ২৪ উইকেট। ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন ৬.৬০। এছাড়া সাকিব আল হাসান ১৩ ম্যাচে ১৬ উইকেট এবং আল-আমিন হোসেন ৫ ম্যাচে ১০ উইকেট ও মোসাদ্দেক হোসেন ৭ ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়েছেন। 

এ সিরিজে তারকা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান প্রথম দুই ম্যাচে খেলবেন না। তিনি অংশ নেবেন সিরিজের শেষ তিনটি ম্যাচে। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে শেখ জামালের হয়ে ম্যাচ খেলবেন বলে তিনি জিম্বাবুয়ের সঙ্গে প্রথম দুই ম্যাচ থেকে ছুটি নিয়েছেন। সাকিব দাবি করেছেন, অধিনায়ক ও ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে আলোচনা করেই তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে চোখের সমস্যায় ভোগার পাশাপাশি আঙুলের চোটে পড়েন সাকিব। সেই চোট থেকে সুস্থ হয়ে এ মাসের শুরুর দিকে শ্রীলংকার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে জাতীয় দলে ফেরেন তিনি। যদিও দলকে জেতাতে পারেননি তিনি। এরপর পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটাতে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে তিনি শেখ জামালের হয়ে একটি কিংবা দুটি ম্যাচ খেলবেন, এরপর যোগ দেবেন টাইগারদের সঙ্গে। 

পেসার মুস্তাফিজুর রহমানও প্রথম ম্যাচ খেলতে পারছেন না। আইপিএলে ১ মে চেন্নাইয়ের হয়ে শেষ ম্যাচ খেলে তিনি দেশে ফিরবেন। তাই ৩ মে চট্টগ্রামে ম্যাচ খেলতে পারছেন না। দ্বিতীয় ম্যাচ থেকে তাকে পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে বিসিবি। 

এদিকে, বাংলাদেশ সফরের জন্য দল ঘোষণা করেছে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট বোর্ড। এ দলে আছেন সাবেক অধিনায়ক অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেলের ছেলে জোনাথান ক্যাম্পবেল। তিনি প্রথমবার সুযোগ পেলেন জাতীয় দলে। এ সফরে দলকে নেতৃত্ব দেবেন সিকান্দার রাজা। 

২৬ বছর বয়সী জোনাথান লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার। ঘরোয়া ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত তিনি খেলেছেন ২৬টি টি-টোয়েন্টি। খেলেছেন তিনি জিম্বাবুয়ে ‘এ’ দলের হয়েও। ১৫ সদস্যের দলে নতুন মুখ একটিই। গত মার্চে আফ্রিকান গেমসে সোনাজয়ী জিম্বাবুয়ে ইমার্জিং দলে ছিলেন জোনাথান। জোনাথানের সঙ্গে ওই ইমার্জিং দলে থাকা ক্লাইভ মাডান্ডে ও ব্রায়ান বেনেটও আছেন বাংলাদেশ সফরের দলে। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিজ্ঞতা আছে দুজনেরই। ২৩ বছর বয়সী কিপার-ব্যাটসম্যান মাডান্ডে খেলেছেন ১৫ ওয়ানডে ও ২০ টি-টোয়েন্টি। ২০ বছর বয়সী অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার বেনেট খেলেছেন ছয়টি টি-টোয়েন্টি।

রাজা ছাড়াও রায়ান বার্ল, শন উইলিয়ামস, ব্লেসিং মুজারাবানি, ক্রেইগ আরভিন, রিচার্ড এনগারাভার মতো অভিজ্ঞ ও নিয়মিত ক্রিকেটাররা আছেন এ সফরে। দলে ফিরেছেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার ফারাজ আকরাম ও ব্যাটসম্যান তাদিওয়ানাশে মারুমানি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন