আলোকপাত

পুঁজি পাচারের নয়া গন্তব্য দুবাই বাংলাদেশের জন্য বিপজ্জনক

ড. মইনুল ইসলাম

মধ্যপ্রাচ্যের সংযুক্ত আরব আমিরাত বহুদিন থেকেই বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বড় পুঁজিপতিদের কাছে আকর্ষণীয় ব্যবসাক্ষেত্র হিসেবে ভূমিকা পালন করে চলেছে। ওই দেশের অনেকগুলো বড়সড় নির্মাণ প্রকল্পে বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ী নিয়োজিত রয়েছেন বলে খবর জানা আছে অনেকদিন থেকেই। এর সঙ্গে নতুন যে ডাইমেনশনটা যুক্ত হয়েছে সেটাই এ কলামে হাইলাইট করছি। ২০১৯ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত ‘গোল্ডেন ভিসা’ পদ্ধতি চালু করেছে, যেখানে কেউ ২০ লাখ দিরহাম (বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৬ কোটি টাকা) বিনিয়োগ করলে বা আমিরাতের কোনো ব্যাংকে জমা রাখলে তাকে দশ বছরের জন্য কোনো প্রশ্ন ছাড়া আমিরাতে অবাধে প্রবেশের ভিসা প্রদানের ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এ গোল্ডেন ভিসার সুবিধা নিয়ে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান সংখ্যক ব্যবসায়ী সাড়ে তিন বছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডার পাশাপাশি দুবাইয়ে পুঁজি পাচারকে আকর্ষণীয় বিষয় হিসেবে বেছে নিতে শুরু করেছেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতে এবং বিশেষত দুবাইয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং নির্মাণ কার্যক্রমের শাখা খোলা এখন বাংলাদেশের মধ্যম পুঁজিপতিদের কাছেও ক্রমেই আকর্ষণীয় বিকল্প হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। পরিবারের সদস্যদের বসবাসের গন্তব্য হিসেবে দুবাই এখনো ওই দেশগুলোর মতো জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি, কিন্তু ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশ থেকে যেহেতু বেশি দূরে নয় তাই দেশ হিসেবে আমিরাতের নানাবিধ সুবিধা ব্যবসায়ীদের জন্য অনেক বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। এমনকি পরিবারের সদস্যদের বাংলাদেশে রেখে এবং মাঝে মাঝে আমিরাতে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার সুবিধা ভোগ করে এসব ব্যবসায়ী আমিরাতে এবং বিশেষত দুবাইয়ে বিনিয়োগকে বেশি মুনাফাদায়ক ও বিশেষ আকর্ষণীয় বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করছেন।

মনে রাখতে হবে যে সৌদি আরবের পর সংখ্যার দিক থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাত বাংলাদেশী অভিবাসীদের দ্বিতীয় প্রধান গন্তব্য। আমিরাতের ব্যবসা-বাণিজ্যে বাংলাদেশীদের অংশগ্রহণ বহু বছর ধরেই ক্রমবর্ধমান। দেশে রেমিট্যান্স প্রেরণকারী বাংলাদেশী প্রবাসী কর্মীদের জন্য হুন্ডি ব্যবসায়ীরা আমিরাতে অত্যন্ত সক্রিয়। আমিরাত থেকে বাংলাদেশে প্রেরিত রেমিট্যান্সের সিংহভাগ হুন্ডি ব্যবসায়ীরাই দখলে নিয়ে নিয়েছেন বহুদিন ধরে। এর মানে হুন্ডি ব্যবস্থার সহায়তায় বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের নানা দেশে পুঁজি পাচারকারীদের একটা বড় অংশই আমিরাত-বাংলাদেশ রুটে হুন্ডি ব্যবসা পরিচালনাকারীদের ‘সার্ভিস’ নিতে দীর্ঘদিন ধরে অভ্যস্ত। এখন যখন আমিরাত ‘গোল্ডেন ভিসা’ চালু করেছে তাই অন্যান্য দেশে পুঁজি পাচারের পাশাপাশি খোদ আমিরাতে এবং বিশেষত দুবাইয়ে পুঁজি পাচারে প্রচণ্ড গতি সঞ্চারিত হয়েছে গত সাড়ে তিন বছরে। এ পর্যায়ে উল্লেখ্য যে ২০২৩ সালের প্রথম তিন মাসে আমিরাত থেকে বাংলাদেশে ফরমাল চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে ফরমাল চ্যানেলে প্রেরিত রেমিট্যান্সকে ছাড়িয়ে গেছে। কিন্তু এ তথ্য বিভ্রান্তিকর হতে পারে। কারণ সাম্প্রতিক কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ থেকে দুবাইয়ে যে ক্রমবর্ধমান হারে অবৈধ পুঁজি পাচার হয়ে চলেছে সে বিষয়টিকে আড়াল করে দিতে পারে এ সাম্প্রতিক রেমিট্যান্স প্রবাহের চিত্রটা। এক্ষেত্রে স্মরণ করা প্রয়োজন যে হুন্ডিওয়ালাদের অনেকেরই আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক রয়েছে। তাই বিশ্বের যেসব দেশ বাংলাদেশী অভিবাসীদের গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য হিসেবে ভূমিকা পালন করছে সেসব দেশের বাংলাদেশী প্রবাসীদের কাছ থেকে হুন্ডিওয়ালারা ডলার কিনে সেগুলো বাংলাদেশ থেকে দুবাইয়ে পুঁজি পাচারকারীদের কাছে বিক্রি করতে পারে। অতএব এটা মনে করা উচিত নয় যে আমিরাত থেকে ফরমাল চ্যানেলে প্রেরিত রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়ে গেলে সেটা বাংলাদেশ থেকে দুবাইয়ে অবৈধ পুঁজি পাচার কমিয়ে দেবে।

এ পর্যায়ে উল্লেখ্য যে কিছুদিন আগে অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, প্রায় অর্ধেক রেমিট্যান্স এখন হুন্ডি পদ্ধতিতে দেশে আসছে। আমি মনে করি বাংলাদেশের সিংহভাগ রেমিট্যান্স প্রেরকরা অনেকগুলো সুবিধার কারণে হুন্ডি পদ্ধতি ব্যবহার করছেন। অতএব ২১ বিলিয়ন ডলার যদি ফরমাল চ্যানেলে দেশে রেমিট্যান্স আসে তাহলে কমপক্ষে আরো ২১-২২ বিলিয়ন ডলার বা তার চেয়েও বেশি রেমিট্যান্স (টাকার আকারে) হুন্ডি পদ্ধতিতে দেশের অর্থনীতিতে ঢুকছে। এর মানে, দেশের পরিবারের সদস্যদের কাছে রেমিট্যান্স প্রেরণেচ্ছু প্রবাসীদের অর্জিত এ বৈদেশিক মুদ্রাগুলো (প্রধানত ডলার) বিদেশের হুন্ডিওয়ালাদের এজেন্টের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা। এর প্রধান কারণ, ডলারপ্রতি তারা বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষিত ১০৯ টাকার চেয়ে ৫-৭ টাকা বেশি দাম পাচ্ছেন। ফলে তাদের পরিবারের সদস্যরা হুন্ডিওয়ালাদের এদেশীয় এজেন্টের মাধ্যমে ওই বর্ধিত দামে প্রেরিত রেমিট্যান্সের সমপরিমাণ টাকা অতি দ্রুত পেয়ে যাচ্ছেন কোনো ঝুট-ঝামেলা ছাড়া। এহেন হুন্ডি পদ্ধতিতে কোনো কাগজপত্র স্বাক্ষর করার প্রয়োজন হয় না। হুন্ডিওয়ালাদের স্থানীয় এজেন্ট প্রায়ই রেমিট্যান্স প্রেরক এবং রেমিট্যান্সগ্রহীতাদের পূর্বপরিচিত থাকার কারণে এসব লেনদেনে ঠকে যাওয়ার আশঙ্কাও তেমন থাকে না। আরো যেটা গুরুত্বপূর্ণ তা হলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পরিবারের বাইরের কেউ জানতেও পারে না যে পরিবারে রেমিট্যান্স এসেছে। টেলিফোনে খবর পেয়ে যথাস্থানে গিয়ে বা নির্দিষ্ট ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা পেয়েই রেমিট্যান্সগ্রহীতারা যথাসম্ভব দ্রুত তা নিকটবর্তী ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে আমানত হিসেবে জমা করে দেন। তাই আগের দিনের মতো চোর-ডাকাত-মাস্তানদের আক্রমণের শিকার হতে হয় না পরিবারকে। যেহেতু বিশ্বস্ততাই হুন্ডি ব্যবসার সাফল্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান তাই সাধারণত পাঠানো রেমিট্যান্সের টাকা মার যায় না, লেনদেনের গোপনীয়তাও রক্ষা করা হয় সযতনে। ওপরে প্রবাসীদের জন্য হুন্ডি পদ্ধতির সাধারণ সুবিধাগুলোর যে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা প্রদত্ত হলো তার সঙ্গে ফরমাল ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রেরণ কি পাল্লা দিতে পারবে? মোটেও না।

কিন্তু এ ‘হুন্ডি ডলারের’ সমপরিমাণ টাকা রেমিট্যান্স প্রেরকের পরিবারের সদস্যরা ও আত্মীয়স্বজন যেহেতু পেয়ে যাচ্ছেন তাই এ অর্থ প্রবাসীদের পরিবার ও স্বজনদের ভোগ এবং বিনিয়োগে ব্যাপক অবদান রাখছে। বিবেচনা করুন, সারা দেশে বিশেষত গ্রামাঞ্চলে প্রবাসীদের পরিবারের পাকা বাড়ি নির্মাণের যে হিড়িক চলেছে তার খরচের কত শতাংশ ফরমাল চ্যানেলে দেশে এসেছে? বলতেই হবে, ফরমাল চ্যানেল বা হুন্ডি পদ্ধতি—যেভাবেই রেমিট্যান্সের অর্থ অর্থনীতিতে প্রবাহিত হোক তার বহুবিধ সুফল পাচ্ছে অর্থনীতি। এ ব্যাপারটা অর্থনীতির জন্য পুরোপুরি নেতিবাচক নয়। বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ সত্ত্বেও বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো যে বড়সড় সংকটে পড়ছে না তার পেছনে ফরমাল চ্যানেলে কিংবা হুন্ডি পদ্ধতিতে প্রেরিত রেমিট্যান্স থেকে উদ্ভূত বিশাল আমানত প্রবাহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এক অর্থে এ বিপুল রেমিট্যান্সের অর্থ বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগের একটা তাৎপর্যপূর্ণ বিকল্পের ভূমিকা পালন করছে। বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হারের চমকপ্রদ উল্লম্ফনও ঘটাচ্ছে প্রবাসীদের ক্রমবর্ধমান রেমিট্যান্স। (অনেক দেশী-বিদেশী বিশেষজ্ঞ বাংলাদেশের প্রশংসনীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ‘প্যারাডক্স’ আখ্যায়িত করে থাকেন। এত দুর্নীতি সত্ত্বেও দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনকে তাদের কাছে আপাতদৃষ্টিতে স্ববিরোধী মনে হয়। আমার মতে তারা এ বিপুল রেমিট্যান্স প্রবাহের ইতিবাচক অভিঘাতকে সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করেন না বলেই ব্যাপারটাকে ‘আন্ডার এস্টিমেট’ করছেন)।

কিন্তু যে হুন্ডি ডলার বিদেশেই রয়ে যাচ্ছে সেগুলো প্রধানত কিনছে পুঁজি পাচারকারীরা। মার্জিনখোর রাজনীতিক বলুন, দুর্নীতিবাজ সিভিল আমলা-প্রকৌশলী বলুন, রাঘববোয়াল ঋণখেলাপি বলুন, ডাকসাইটে ব্যবসায়ী-শিল্পপতি বলুন—হুন্ডি ডলারের সহায়তায় বিদেশে ক্রমেই গড়ে উঠছে প্রবাসীদের ঘরবাড়ি, ব্যবসাপাতি, টরন্টোর বেগমপাড়া কিংবা মালয়েশিয়ার সেকেন্ড হোমগুলো। সাম্প্রতিক কালে দুবাইয়ে অফিস খুলে প্রধানত নির্মাণ প্রকল্প ও অন্যান্য ব্যবসাপাতি খোলার উদ্দেশ্যে ব্যবসায়ীদের পুঁজি পাচার একটি নতুন ডাইমেনশন হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, যেখানে মাঝারি পুঁজিপতি ব্যবসায়ীরাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। এসব ব্যবসায়ী সপরিবার স্থায়ীভাবে আমিরাতে বসতি স্থাপনে হয়তো বেশি আগ্রহী হবেন না ওখানকার জলবায়ু এবং জীবনযাত্রার অনাকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্যের বিবেচনায়। তবে এসব ব্যবসায়ীর পরিবার বাংলাদেশে কিংবা বিশ্বের অন্য কোনো দেশে বসবাস করলেও দুবাইয়ে বেড়াতে যাওয়ার প্রবণতা বাড়তেই থাকবে। ব্যবসাকেন্দ্র হিসেবে দুবাই যে সিঙ্গাপুর ও হংকংয়ের চেয়ে সাম্প্রতিক কালে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের কাছে অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সেটা ফুটে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ার একটি নিউজ ক্লিপে প্রচারিত ব্যবসায়ীদের ইন্টারভিউতে। আর সেজন্যই বলছি, দীর্ঘদিন ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাত বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ গন্তব্যের ভূমিকা পালন করলেও গত সাড়ে তিন বছরে দুবাই ক্রমেই বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য পুঁজি পাচারের ক্ষেত্রে ‘মারাত্মক বিপজ্জনক’ হয়ে উঠছে। সরকার যথাযথ গুরুত্বসহ দুবাইয়ে অবৈধ পুঁজি পাচারের বিষয়টি দমনের প্রয়াস নেয়া প্রয়োজন মনে করছি। যেহেতু এহেন পুঁজি পাচারকারীরা ব্যাংকঋণ বিদেশে পাচার করার জন্য হুন্ডি ব্যবস্থাকে ব্যবহার করছে তাই হুন্ডি ডলারের দাম বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ১৮ জুন ২০২৩ তারিখে ঘোষিত মুদ্রানীতি অনুযায়ী বাজারের নিয়মে নির্ধারিত দামের চেয়ে ৭-৮ টাকা বেশি থেকেই যাবে। হুন্ডি ডলারের চাহিদা কাঠামো শক্তিশালী থাকলে, হুন্ডি ব্যবসাকে কঠোরভাবে দমনের ব্যবস্থা না নিলে ডলারের দাম নির্ধারণ বাজারের হাতে ছেড়ে দিলেও বাজারে ডলারের একক দাম প্রতিষ্ঠা করা যাবে না।

হুন্ডি পদ্ধতিতে পুঁজি পাচার দমনে সরকার সত্যিকারভাবে আন্তরিক হলে নিচের পদক্ষেপগুলো অপরিহার্য মনে করি। প্রথমত, অবিলম্বে দেশের এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো কিছুদিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হোক। বেশির ভাগ এক্সচেঞ্জ হাউজ হুন্ডি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলে আমাদের খবর রয়েছে। দ্বিতীয়ত, দুবাইয়ে তদন্ত টিম পাঠিয়ে এসব পুঁজি পাচারকারী ব্যবসায়ী সম্পর্কে খবরাখবর সংগ্রহ করে নিচের পদক্ষেপগুলো অবিলম্বে গ্রহণ করতে হবে: ১. যেসব পুঁজি পাচারকারীর নাম তদন্তে উঠে আসবে তাদের বিভিন্ন ব্যাংকের মালিকানা এবং পরিচালনা বোর্ড থেকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে; ২. এসব পাচারকারীকে নতুন কোনো ব্যাংকঋণ থেকে অবিলম্বে খারিজ করতে হবে; ৩. এদের কাছে যেসব ব্যাংকঋণ খেলাপি হিসেবে বছরের পর বছর আটকে আছে সেগুলো আদায় করার জন্য অবিলম্বে ‘খেলাপি ঋণ ট্রাইব্যুনাল’ প্রতিষ্ঠা করতে হবে; ৪. যেসব রফতানিকারকের নাম উঠে আসবে তাদের নামে খেলাপি ঋণ থাকলে সেগুলো আদায়ের জন্য ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে। উপরন্তু তারা তাদের রফতানি আয় নিয়মিতভাবে দেশে ফেরত আনছেন কিনা সেটা কঠোরভাবে পরীক্ষা করতে হবে; ৫. যেসব আমদানিকারকের নাম পাওয়া যাবে তারা ওভার ইনভয়েসিং করছেন কিনা তা কঠোরভাবে পরখ করতে হবে এবং ৬. পুঁজি পাচারকারীর নাম-ঠিকানা সংসদে উত্থাপন এবং পত্রপত্রিকায় প্রকাশ করতে হবে। তৃতীয়ত, দেশের শহরগুলোতে কিংবা গ্রামে যেখানেই প্রবাসীদের পরিবার পাকা বাড়ি নির্মাণ করবে তাদের বাড়ির নির্মাণ ব্যয়ের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ ফরমাল চ্যানেলে দেশে আনার ‘ফরেন এক্সচেঞ্জ ব্যাংক স্টেটমেন্ট’ যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে গৃহনির্মাণের পূর্বানুমতির জন্য জমা দেয়ার বাধ্যবাধকতা চালু করা হোক। সর্বোপরি, দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিকে নিষ্ঠার সঙ্গে বাস্তবায়নে সরকারকে সত্যিকার মনোযোগী হতে হবে।

ড. মইনুল ইসলাম: সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি, একুশে পদকপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ ও অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর, অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন