আইসিসিবি নির্বাহী বোর্ডের প্রতিবেদন

মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হতে সুশাসনে জোর দিতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০২৬ সাল নাগাদ বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পথে রয়েছে। এটি অর্জনের জন্য বাংলাদেশকে দুই দশকের কম সময়ের মধ্যে শতাংশের বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার বজায় রাখতে হবে। মাথাপিছু আয় হাজার ৮২৪ ডলার থেকে ১৩ হাজার ডলারে উন্নীত করতে হবে। মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার জন্য বাংলাদেশকে বেশকিছু আন্তর্জাতিক সম্মতি পূরণ করতে হবে। তাই সরকারি বেসরকারি ক্ষেত্রে সুশাসনের দিকে নজর দিতে হবে। এটি বৈশ্বিক সূচকের অনেক নিচে রয়েছে।

রাজধানীতে অনুষ্ঠিত গতকাল ২৮তম বার্ষিক সাধারণ সভায় কার্যনির্বাহী বোর্ডের প্রতিবেদন উপস্থাপনকালে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স-বাংলাদেশের (আইসিসিবি) সভাপতি মাহবুবুর রহমান এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘বড় স্বপ্ন পূরণের পেছনে বড় চ্যালেঞ্জও রয়েছে। বাংলাদেশ কভিড মহামারী থেকে বিচক্ষণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতির সমর্থন দ্বারা দ্রুত পুনরুদ্ধার করেছে। কিন্তু বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তায় বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন।

আইসিসিবি কার্যনির্বাহী বোর্ড চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে কিছু মূল সমস্যা সমাধানের পরামর্শ দিয়েছে। প্রথমত, মূল্যস্ফীতির চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য উপযুক্ত আর্থিক রাজস্ব নীতি থাকা উচিত। দ্বিতীয়ত, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আমদানীকৃত জীবাশ্ম জ্বালানি, এলএনজি কয়লার ওপর নির্ভরতা বৃদ্ধির ফলে ঝুঁকি তীব্র হয়েছে, যা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে এবং ভর্তুকির বোঝা বাড়াচ্ছে। তাই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূল প্রভাব এড়াতে ব্যয়বহুল এলএনজিকে নিজস্ব প্রাকৃতিক গ্যাসের রিজার্ভ দিয়ে প্রতিস্থাপন করার পাশাপাশি পারমাণবিক/নবায়নযোগ্য এনার্জি স্থাপনের জন্য বাংলাদেশের অন-শোর এবং অফ-শোর উভয় অনুসন্ধান কার্যক্রমের সঙ্গে দ্রুত অগ্রসর হওয়া উচিত।

তৃতীয়ত, পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি আমদানি বৃদ্ধির ফলে ব্যালান্স অব পেমেন্টস ঘাটতি হয়েছে। বাংলাদেশের রফতানি বাজার পণ্যে বৈচিত্র্য আনা এবং এশিয়ার প্রধান দেশগুলোর সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষর করার জরুরি প্রয়োজন রয়েছে।

চতুর্থত, বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, বেসরকারি খাতের বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার জন্য অবকাঠামো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ধারণা অনুযায়ী, বাংলাদেশকে বন্দর সড়ক নির্মাণ, পণ্য ব্যবস্থাপনার জন্য রেললাইন স্থাপন, বিদ্যুৎ-উৎপাদন বিতরণ সক্ষমতা স্থাপন, অর্থনীতির ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের জন্য ইউটিলিটি সেবা প্রদান ইত্যাদি খাতে আগামী দশকে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করতে হবে।

পঞ্চমত, বিআইডিএস অনুসারে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় এক মাস বাড়ার ফলে প্রকল্পের ব্যয়  দশমিক ৯৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায়, তাই খরচের পাশাপাশি সময় বাঁচাতে সময়মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা জরুরি।

এছাড়া মোট নন-পারফর্মিং লোনের (এনপিএল) সমস্যা মোকাবেলা, কৃষি খাতে প্রযুক্তির ব্যবহার জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা, মানবসম্পদ উন্নয়নে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছে আইসিসিবি।

কাউন্সিল ২০২২ সালের অডিটর রিপোর্ট অনুমোদন করেছে এবং ২০২৩ সালের জন্য নিরীক্ষক নিয়োগ করেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন