আলোকপাত

ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় জরুরি পদক্ষেপ প্রয়োজন

মোহাম্মদ জমির

দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্ক এবং উত্তর সিরিয়াজুড়ে সংঘটিত দুটি ভয়াবহ ভূমিকম্পে ৫০ হাজারের অধিক মৃত্যু একটি সংকেত দিয়েছে। দেব্রিস অঞ্চলে কয়েক লাখ মানুষকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে, এর মধ্যে ১০ হাজারেরও অধিক আহত মানুষ রয়েছে। গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে যেখানে ভূমিকম্প আঘাত হানে, সেখানে আরো বেশ কয়েকটি আফটার শক অনুভূত হয়েছে। এর মধ্যে একটি কম্পন প্রথমে বেশ বড় আকারেই ছিল। 

ভূমিকম্পকে বর্তমানে মোমেন্ট ম্যাগনিটিউড স্কেল (এমডব্লিউ) নামে অভিহিত করা হয়ে থাকে। এটি বহুল পরিচিত রিখটার স্কেলের জায়গায় প্রতিস্থাপন হয়েছে, যা বর্তমানে পুরনো হিসেবে বিবেচিত হয় এবং নির্ভুল ফলাফল কম দিতে পারে। ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে যে সংখ্যা আরোপিত করা হয় তা ফল্ট লাইন সরে যাওয়া এবং চাপের ফলে ফল্ট লাইনের স্থানান্তরের ক্ষেত্রে দূরত্বের সমন্বয়কে তুলে ধরে। ২ দশমিক ৫ বা এর কম ভূ-কম্পন সাধারণত অনুভূত হয় না, কিন্তু যন্ত্রের মাধ্যমে শনাক্ত করা যেতে পারে। ৫ পর্যন্ত ভূমিকম্প অনুভূত হয় এবং স্বল্প ক্ষতির কারণ হয়। তুরস্কের ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পকে বড় ভূমিকম্প হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে এবং এটি গুরুতর ক্ষতির কারণ হয়েছে। এটি বরাবর প্রায় ১০০ কিলোমিটার (৬২ মাইল) ফল্ট লাইনে ফাটল ধরিয়েছে, যার ফলে ফল্টের কাছে অবস্থিত ভবনগুলোয় গুরুতর ক্ষতি হয়েছে। ৮-এর ওপরে যেকোনো ভূমিকম্প সর্বনাশা ক্ষতির কারণ হতে পারে এবং একটি সম্প্রদায়কে কেন্দ্র থেকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিতে সক্ষম।

বিশ্লেষক পল্লব ঘোষ এ প্রসঙ্গে ইউনিভার্সিটি লন্ডন কলেজের ইনস্টিটিউট ফর রিস্ক অ্যান্ড ডিজাস্টার রিডাকশনের প্রধান অধ্যাপক জোয়ানা ফাউরি ওয়াকারের পর্যবেক্ষণের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তিনি বলেছেন, গত ১০ বছরের মধ্যে যেকোনো বছরের প্রাণঘাতী ভূমিকম্পে শুধু দুবার সমতুল্য মাত্রা দেখা গেছে, এর আগের ১০ বছরে যা চারবার হয়েছে। যা-ই হোক, এটি শুধু কম্পনের শক্তিতে বিপর্যয় ঘটানোর মতো ছিল না। এটি ভোরবেলায় প্রথম প্রহরে সংঘটিত হতো, যখন মানুষ ঘরে থাকত এবং ঘুমাত। এক্ষেত্রে ভবনগুলোর দৃঢ়তার বিষয়টিও রয়েছে। আরেকজন বিশ্লেষক ড. কারমেন সোলানা ইউনিভার্সিটি অব পোর্টসমাউথের ভলক্যানোলজি অ্যান্ড রিস্ক কমিউনিকেশনের পাঠক হিসেবে কৌতূহল-উদ্দীপক পর্যবেক্ষণ করেছেন যে ‘‌দুর্ভাগ্যজনকভাবে দক্ষিণ তুরস্ক এবং বিশেষ করে সিরিয়ায় অবকাঠামোগুলো বেমানান ছিল।’ এবং এটি মৃত্যুর সংখ্যা বাড়িয়েছে। 

এ ভূমিকম্পের ঘটনায় বাংলাদেশে একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হয়েছে। পাশাপাশি তুরস্কের জন্য ওষুধ ও ত্রাণসামগ্রীসহ বিশেষজ্ঞ সদস্য সমন্বয়ে ৪৬ সদস্যের অনুসন্ধান এবং উদ্ধার টিম পাঠানো হয়। এই টিম শুধু মরদেহ উদ্ধারের কাজই করেনি, এর সঙ্গে দুর্যোগে বিধ্বস্ত এলাকা থেকে আহতদের উদ্ধার করেছে। বাংলাদেশ একইভাবে সিরিয়ায় ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত এলাকার জন্যও তাঁবু, কম্বল, শুকনো খাবার ও ওষুধ পাঠিয়েছে। এ সহযোগিতা জর্ডান হয়ে পৌঁছানো হয়েছে। সি-১৩০ এয়ারক্রাফটের বিশেষ ফ্লাইট উদ্ধারকারী দল, জরুরি ত্রাণ এবং ওষুধসামগ্রী নিয়ে গেছে। 

অন্য অনেক দেশ এবং সংস্থাও তুরস্ক ও সিরিয়ার সাহায্যার্থে এগিয়ে এসেছে, তারা শুধু উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করেনি, সেই সঙ্গে যারা ঘর হারিয়েছে তাদের জন্য অস্থায়ী তাঁবুর ব্যবস্থা করেছে। জরুরি খাদ্য এবং চিকিৎসাসামগ্রীর জন্য জরুরি অর্থসহায়তা দিয়েছে। এদের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন, জার্মানি, গ্রিস, ভারত, জাপান, ইসরায়েল, মালয়েশিয়া, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, কাতার, পাকিস্তান, রাশিয়া, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র, সুইজারল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র রয়েছে। জাতিসংঘও আক্রান্ত এলাকায় প্রয়োজনীয় উদ্ধার কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। বিশ্বব্যাংক তুরস্ককে জরুরি সহায়তা হিসেবে ১ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদানে সম্মত হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও ৮ লাখ ৭৪ হাজার ভুক্তভোগীর জন্য সহায়তা চেয়েছে। 

এ রকম চিত্র বাংলাদেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। বিশ্লেষক, ভূ-তত্ত্ববিদ, পরিবেশবিদ এবং জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে সন্ধান করছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তুরস্ক ও সিরিয়ায় যা ঘটেছে তা অনুধাবন করছেন কিনা? এ পরিপ্রেক্ষিতে তারা আমাদের ভূখণ্ড অথবা সংলগ্ণ এলাকায় তীব্র ভূমিকম্পের ফলে উদ্ভূত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তো? 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তারেক তানভির দারুণভাবে সম্ভাব্য কিছু দৃশ্যের অবতারণা করেছেন। যদি বাংলাদেশের মতো ঘনবহুল জনসংখ্যাসংবলিত এবং ভৌগোলিকভাবে দুর্বল এলাকায় শক্তিশালী ভূমিকম্প সংঘটিত হয়, এ প্রসঙ্গে তিনি ১৯৭৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যবেক্ষণ করেছেন। এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে একাধিক ভূমিকম্প সংঘটিত হয়েছে। এক্ষেত্রে অধিকাংশ ভূমিকম্পের এপিসেন্টার ছিল সিলেট, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও কক্সবাজার। এ অঞ্চলগুলো ভবিষ্যতে অধিক ভূমিকম্পের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। 

এ প্রসঙ্গে তিনি পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন যে সিলেট, ময়মনসিংহ, রংপুর, ঢাকা, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে উচ্চঝুঁকি রয়েছে। সিলেট বিভাগে চারটি জেলা ভূমিকম্পের উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে। ময়মনসিংহ বিভাগে পাঁচটি জেলা ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে। ঢাকা বিভাগে টাঙ্গাইল, গাজীপুর এবং নারায়ণগঞ্জও ঝুঁকিতে রয়েছে। পুরো কিশোরগঞ্জ ও ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলা ভূমিকম্পের উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে। খাগড়াছড়ির উত্তর অংশ এবং রাঙ্গামাটি জেলাও উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে। অন্য ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর মধ্যে ঢাকা, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, কুমিল্লা, চাঁদপুর, ফেনী, নোয়াখালী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, রাজশাহী, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ রয়েছে। চট্টগ্রাম, বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলায় মাঝারি ঝুঁকি রয়েছে। যা-ই হোক, দেশের দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চল খুলনা ও বরিশাল বিভাগে ভূমিকম্পের কম ঝুঁকি রয়েছে।

বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মেহেদি আহমেদ আনসারি কমপ্রিহেনসিভ ডিজেস্টার ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান (সিডিএমপি) অনুসারে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। এখানে পাঁচটি বড় ফল্ট জোন রয়েছে—মধুপুর ফল্ট, প্লেট বাউন্ডারি ফল্ট-১, প্লেট বাউন্ডারি ফল্ট-২ ও প্লেট বাউন্ডারি ফল্ট-৩। যেখান থেকে দেশে ৭ থেকে ৮ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্পের উৎপত্তি হতে পারে।

আলোচনার এ পর্যায়ে ২০০৯ সালে পরিচালিত ইন্টিগ্রেটেড কমপ্রিহেনসিভ ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম (সিডিএমপি) এবং জাইকা পরিচালিত একটি যৌথ সমীক্ষার কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। আলোচনা সমীক্ষা থেকে জানা যায় যে বাংলাদেশে ৭ বা তার বেশি মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হলে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের মতো বড় শহরে ৭২ হাজার ভবন ধসে পড়বে এবং ১ লাখ ৩৫ হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সূত্র উল্লেখপূর্বক গবেষণায় আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে ঢাকা শহরের ৭৬ শতাংশ রাস্তা সরু, যে কারণে ভূমিকম্প হলে উদ্ধারকাজ চালানো কঠিন হয়ে পড়বে। এছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রামের ৬০ শতাংশ ভবন মূল নকশায় পরিবর্তনের পর নির্মাণ করা হয়েছে, যার ফলে একটি বড় ভূমিকম্প হলে এ অপরিকল্পিত ভবনগুলো দ্রুত ভেঙে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। গ্যাস, বিদ্যুৎ এবং পানির লাইনে বিস্ফোরণও ভবনগুলোর অবস্থা সঙ্গীন হয়ে পড়তে পারে।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য এবং ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগের অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামালও উল্লেখ করেছেন যে ঢাকা শহরের কিছু এলাকার নরম মাটির ওপর নির্মিত ভবনগুলো ভূমিকম্পের জন্য বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। তিনি আরো বলেছেন যে নরম মাটির কারণে ঢাকায় ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি বেশি হবে। এছাড়া ঢাকা শহরে বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া, আগুন ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি হবে।

মজার ব্যাপার হলো রাজউকের পরিকল্পনাকারী এবং ডিএপি প্রকল্পের পরিচালক মো. আশরাফুল ইসলামও ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ঢাকায় দুটি ফল্ট লাইন রয়েছে—একটি প্রগতি সরণির মাঝখান দিয়ে পূর্বদিকে চলে গেছে এবং আরেকটি তুরাগের পার্শ্ববর্তী এলাকায় এবং মোহাম্মদপুর বসিলার কিছু নতুন এলাকা। তিনি আরো যোগ করেছেন যে এটি একটি বালিপূর্ণ এলাকা অর্থাৎ নিম্নভূমি বালি দিয়ে ভরাট করে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এ ধরনের এলাকায় নির্মিত ভবনগুলো দুর্বল ভিতের ওপর গড়ে তোলা হয়েছে, যা ভূমিকম্পে মারাত্মক ক্ষতির ঝুঁকিতে রয়েছে। ৭ বা সাড়ে ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ভবনগুলো ভেঙে পড়ত না যদি সব নির্মাতা বিল্ডিং কোড যথাযথভাবে মেনে ভবন নির্মাণ করতেন। ভবনের ভিত সঠিকভাবে তৈরি না করায় ভূমিকম্প হলে দ্রুতই ভবনটি ডেবে বা কাত হয়ে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। 

এ বিশ্লেষণাত্মক মন্তব্যগুলো ঘনবসতিপূর্ণ ঢাকায় ভূমিকম্পের ক্ষতির সম্ভাব্য একটি চিত্র আমাদের সামনে হাজির করে। রাজউক অরক্ষিত এবং ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত এবং বিল্ডিং কোড বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেগুলোর ঝুঁকি কমিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করছে। প্রকৌশলীরা বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ভবন, মার্কেট এবং হাসপাতালসহ ২২৯টি বাণিজ্যিক ভবনকে ভূমিকম্পে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তবে প্রশ্ন হলো ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগুলো কার্যকরভাবে নেয়া হচ্ছে কি? বিষয়টি নিয়ে গুরুত্বসহকারে ভাবতে হবে। এর জন্য সরকার, বেসরকারি খাত এবং সুশীল সমাজের মধ্যে সমন্বয় ও পারস্পরিক সহযোগিতা প্রয়োজন।

বিশ্লেষকরা আরো বলছেন যে ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি কমপ্রিহেনসিভ দুর্যোগ মোকাবেলা পরিকল্পনা তৈরি করা প্রয়োজন, যেখানে ভূমিকম্পসহ যেকোনো প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের বিস্তারিত বিবরণ থাকবে। আলোচ্য পরিকল্পনায় দুর্যোগ-পরবর্তী অনুসন্ধান ও উদ্ধার প্রচেষ্টা এবং দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য ও সহায়তা বিতরণের বিবরণও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

বাংলাদেশের কমিউনিটি-ভিত্তিক দুর্যোগ প্রস্তুতি জোরদার করতে হবে। জাতিসংঘের সহায়তায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রাসঙ্গিক প্রশিক্ষণ প্রদান, সচেতনতামূলক প্রচারণা এবং কমিউনিটি-ভিত্তিক দুর্যোগ মোকাবেলায় কমিটি গঠনের চেষ্টা করা উচিত। কমিউনিটি-ভিত্তিক দুর্যোগ মোকাবেলা কমিটি আমাদের গ্রামীণ এলাকার জন্য বিশেষভাবে কার্যকর হবে।

আমাদের বুঝতে হবে যে জলবায়ু পরিবর্তন মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। এজন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞদের সহায়তা গ্রহণ করতে হবে। ভূমিকম্প-প্রতিরোধী ভবন নির্মাণের মতো দুর্যোগ-প্রতিরোধী বিনিয়োগে আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য দেশের ব্যাংক ও আর্থিক খাতকে উদ্বুদ্ধ করা প্রয়োজন। দুর্যোগপ্রবণ এলাকাগুলোয় অবকাঠামো নির্মাণে সবাইকে আরো সতর্ক হতে হবে।

ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে কী করা দরকার সে সম্পর্কে আমাদের জনসাধারণ এবং আমাদের শিশুদের আরো জ্ঞান ও প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে। প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচারণা আরো জোরদার করতে হবে। একই সঙ্গে দুর্যোগ-স্থিতিস্থাপক বিনিয়োগের মাধ্যমে কমপ্রিহেনসিভ দুর্যোগ মোকাবেলার প্রস্তুতি গ্রহণ করা উচিত। এটি বাংলাদেশকে ভূমিকম্প এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব মোকাবেলার জন্য আরো ভালোভাবে প্রস্তুত হতে সাহায্য করবে।

মোহাম্মদ জমির: সাবেক রাষ্ট্রদূত ও সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার; বৈদেশিক সম্পর্ক, তথ্য অধিকার ও সুশাসনবিষয়ক বিশ্লেষক

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন