জি২০ জোটের সামনে ছয়টি প্রস্তাব রেখে প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেছেন, টেকসই বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং গ্লোবাল সাউথ বা বৈশ্বিক
দক্ষিণের উন্নয়নের জন্য এগুলো সম্মিলিতভাবে সমাধান করা প্রয়োজন। খবর বাসস।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনীতিকে বিবেচনায়
নিয়ে একটি ন্যায্য ও গ্রহণযোগ্য অর্থনৈতিক ব্যবস্থার জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করার এখনই
উপযুক্ত সময়’
ভারতের নয়াদিল্লীতে অনুষ্ঠিত ‘ভয়েস অব দ্য
সাউথ সামিট ২০২৩’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আজ বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি
যোগদান দেন প্রধানমন্ত্রী ।
গুরুত্বপূর্ণ এই শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশকে
আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।
টেকসই বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের
জন্য প্রথম প্রস্তাবে তিনি বলেন, মানবতার বৃহত্তর স্বার্থে বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতা
বজায় রাখতে হবে।
দ্বিতীয়ত, একটি নতুন দৃষ্টান্ত প্রয়োজন যা
এসডিজির সমান্তরালে সামগ্রিকভাবে বৈষম্যকে মোকাবেলা করবে।
তৃতীয়ত, স্বল্পোন্নত দেশ, জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ
দেশগুলোসহ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য বিশেষ অর্থায়নের প্রয়োজন।
চতুর্থ প্রস্তাবে নারীসহ সবার জন্য সমান সুযোগ
নিশ্চিত করতে ‘ডিজিটাল ডিভাইডস’ সেতুবন্ধন রচনার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী।
তরুণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিনিয়োগ করে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুবিধা নিন যার জন্য অর্থায়ন
এবং প্রযুক্তি হস্তান্তর সমর্থন অত্যাবশ্যক।
পঞ্চমত, সব মানুষেরই ভালোভাবে জীবনযাপনের
সমান অধিকার থাকা উচিত।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বৈশ্বিক সম্প্রদায় দুর্ভাগ্যজনকভাবে
জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে যেন
ভুলবেন না।’
বৈশ্বিক মানব উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সাউথ-সাউথ
ও ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘এখানে, অংশীদার, আন্তর্জাতিক আর্থিক
প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি খাত, থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের কাছ থেকে সমর্থন
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের বিষয়ে
পরামর্শমূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে জি২০ প্ল্যাটফর্মকে আরো অর্থবহ করার জন্য তার দৃঢ়
প্রতিশ্রুতিকে আমি গভীরভাবে উপলব্ধি করি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক কভিড-১৯ মহামারী
এবং নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বজুড়ে বিপর্যয়
সৃষ্টি করেছে।
আরো বলেন, বিশ্বব্যাপী মন্দা, খাদ্য, জ্বালানি
ও সারের সংকট জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবকে যুক্ত করে মানুষের জীবনকে অসহনীয়
করে তুলেছে।
‘এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য বিশ্বস্তরে
সাহসী, দৃঢ় এবং সমন্বিত পদক্ষেপের প্রয়োজন যেখানে মনুষ্য নেতৃত্বের এগিয়ে যাওয়াটা চাবিকাঠি।’
বাংলাদেশ বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির
একটি হিসেবে স্বীকৃত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইএমএফের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা
গেছে যে বাংলাদেশ জিডিপির দিক থেকে বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে গত ১৪ বছরে
দারিদ্র্যের হার ৪১ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে নেমে এসেছে, যেখানে মাত্র এক দশকে
মাথাপিছু আয় তিনগুণ হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এলডিসি স্তর থেকে উন্নয়নশীল
দেশে উন্নীত হওয়ার জন্য সব শর্ত পূরণ করেছে।