ঋণ আদায়

খেলাপি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নিচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং

নিজস্ব প্রতিবেদক

আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িত প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদারের চারটি প্রতিষ্ঠানের কাছে খেলাপি ঋণ বাবদ প্রায় ২৬০ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের (আইএলএফএসএল) কিন্তু কোম্পানিগুলোর বন্ধকী সম্পদ বিক্রি করে মাত্র ৩৬ কোটি টাকা আদায় করা সম্ভব। এমন পরিস্থিতিতে বন্ধকী সম্পদ বিক্রির পরিবর্তে ওই চার কোম্পানির মধ্যে তিনটির পর্ষদ পুনর্গঠনের মাধ্যমে ব্যবসা সচল করার উদ্যোগ নিয়েছে আইএলএফএসএল। যার মধ্যে দুুুটি কোম্পানির পর্ষদ এরই মধ্যে পুনর্গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল আইএলএফএসএলের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তথ্য জানানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সাবেক সচিব মো. নজরুল ইসলাম খান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. মশিউর রহমানসহ স্বতন্ত্র পরিচালক সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ, সিনিয়র জেলা দায়রা জজ (অব.) মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ মেফতাউল করিম, ব্যারিস্টার মুহাম্মদ আশরাফ আলী মোহাম্মদ এনামুল হাসানসহ প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

তথ্য অনুসারে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের বর্তমানে হাজার ১০০ কোটি টাকা বিতরণকৃত ঋণ রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশই খেলাপি ঋণের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির সবচেয়ে বড় খেলাপি ঋণগ্রহীতার মধ্যে রয়েছে পিকে হালদারের চার কোম্পানি রেপটাইলস ফার্ম লিমিটেড, আনান কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, রহমান কেমিক্যালস লিমিটেড নর্দান জুট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেড। এসব প্রতিষ্ঠানের কারখানা লাভজনক প্রকল্প রয়েছে, যা নিজেদের দখলে নিয়ে ব্যবসা সচল করতে চায় আইএলএফএসএল। চার কোম্পানির মধ্যে তিনটির পর্ষদ পুনর্গঠনের জন্য হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি। এরই মধ্যে হাইকোর্ট তাদের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে। সে অনুসারে রেপটাইলস ফার্ম আনান কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজে ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগসহ পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। আর পুনর্গঠনের অনুমোদন পাওয়ার পর রহমান কেমিক্যালসের পর্ষদ পুনর্গঠনের চেষ্টা চলছে।

সংবাদ সম্মেলনে চার কোম্পানির বিষয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, পিকে হালদারের রেপটাইলস ফার্ম, যেটা ময়মনসিংহের ভালুকায় অবস্থিত। হাইকোর্টের নির্দেশে ফার্মটি আমরা পুনর্গঠন করেছি। এখানে কুমির চাষ করা হয়। বিদেশে রফতানির প্রক্রিয়া কঠিন হওয়ায় এটাকে আমরা একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে কাজ করছি। আশা করছি প্রকল্প লাভজনক হবে। এছাড়া আরেকটি কোম্পানি আনান কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের পর্ষদ পুনর্গঠন করেছি আমরা। এটি ফিটকিরি উৎপাদক প্রতিষ্ঠান। যদিও প্রকল্পের মালামাল অনেক কিছুই চুরি হয়ে গিয়েছে। তবে পুনরায় প্রকল্প চালুর চেষ্টা চলছে। আর রহমান কেমিক্যালসের পর্ষদ পুনর্গঠনের অনুমোদন পেয়েছি। তবে পর্ষদ এখনো পুনর্গঠন হয়নি। প্রতিষ্ঠানটি গ্লুকোজ উৎপাদন করত। এছাড়া নর্দান জুট চালুর জন্যও আমরা লোকজন খুঁজছি।

এসব প্রতিষ্ঠান লাভজনক অবস্থানে নিয়ে আসতে কেমন সময় লাগবে জানতে চাইলে আইএলএফএসএল চেয়ারম্যান জানান, এটা নিশ্চিত করে বলা যায় না, তবে দুই থেকে চার-পাঁচ বছর সময় লেগে যেতে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন