সিজিএসের সেমিনারে বক্তারা

কর প্রদানের জন্য যথাযথ পরিবেশ তৈরি করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

কর প্রদানের জন্য যথাযথ পরিবেশ তৈরি করতে হবে। কারণ জনগণ কর দিতে চায় কিন্তু যথাযথ পরিবেশের অভাবে আগ্রহী হয় না। বর্তমানে দেশে রাজনীতি অর্থনীতিকে ছাপিয়ে উঠেছে। ফলে বাস্তবায়নযোগ্য বাজেট হচ্ছে না। সম্পূরক বাজেট নিয়ে কেউ কথা বলছে না, যেটি কিনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পদ্মা সেতুর টোলের দায়িত্ব বাইরের দেশের একটি প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হচ্ছে, যার ফলে জনগণের আয়ের একটি বড় অংশ দেশের বাইরে ডলারে চলে যাবে।

সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত জাতীয় বাজেট এবং অর্থনৈতিক গতিধারা শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান এমপি। প্রস্তাবিত বাজেটের নানামুখী বিশ্লেষণের লক্ষ্যে সিজিএস গতকাল সকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এই সেমিনারের আয়োজন করে। সেমিনারে উপস্থিত বক্তারা বাজেটে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির ওপর জোর দেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারপারসন এবং অর্থনীতিবিদ . রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর।

আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান . মোহাম্মদ আবদুল মজিদ, বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্টিজের (এফবিসিসিআই) সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন, ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান এবং এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক প্রীতি চক্রবর্তী, বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকলস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সাবেক সভাপতি আবদুল হক, উইমেন এন্ট্রাপ্রেনারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর সাবেক সভাপতি এবং বিশিষ্ট নারী উদ্যোক্তা নাসরিন ফাতেমা আউয়াল, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক পারভেজ করিম আব্বাসি প্রমুখ। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সিজিএস চেয়ারম্যান . মনজুর আহমেদ চৌধুরী এবং সঞ্চালনা করেন সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান।

পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, দেশ চালাতে সুশাসন অবশ্যই দরকার। তবে সবার আগে প্রয়োজন সাধারণ জনগণের চাহিদাকে মূল্যায়ন করা। সুশাসনের রাস্তা অনেক দীর্ঘ একটি প্রক্রিয়া। প্রক্রিয়ায় সরাসরি কেউ যেতে পারে না। পৃথিবীর বৃহৎ গণতন্ত্রের দেশগুলোও বহু বছরের অপেক্ষার পর সুশাসন অর্জন করতে পেরেছে। বাজেটে অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়েছে। কিন্তু এটি কেবল একটি খসড়া বাজেট। বাজেট নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হবে। তারপর এটি সংসদে পাস হবে।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাজেটে সীমাবদ্ধতার কারণে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা ইত্যাদি জনসেবামূলক খাতে প্রবৃদ্ধির হার কমে যাচ্ছে। যেখানে সামাজিক নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য শিক্ষা খাতে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ হওয়ার কথা ছিল, সেখানে খাতগুলো এখন অবহেলিত। দেশে দুর্নীতি এত বেড়েছে যে, দেশে টাকা রাখার জায়গা হচ্ছে না। দেশের টাকা বাইরের দেশে চলে যাচ্ছে।

. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর বলেন, কার্যকর গণতন্ত্রের জন্য জনপরিসরে অর্থনৈতিক আলোচনা বাঞ্ছনীয়। মূল্যস্থীতিকে কেবল সংখ্যা দিয়ে বিচার করলে হবে না। এর সঙ্গে জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয়ের প্রসঙ্গও জড়িত। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের পর তাজউদ্দীন আহমদ ৭৮৬ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছিলেন, যার মধ্যে ৬০০ কোটি টাকা ছিল উন্নয়ন ব্যয় এবং ১৮৬ কোটি টাকা ছিল পরিচালন ব্যয়। বর্তমান বাজেটে আমরা ঠিক এর বিপরীত চিত্র দেখতে পাই।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন