মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে কমতে পারে তুলার বৈশ্বিক ব্যবহার

বণিক বার্তা ডেস্ক

চলতি মৌসুমে তুলার বৈশ্বিক ব্যবহার কমার পূর্বাভাস মিলেছে। মৌসুম শেষে ব্যবহারের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ১২ কোটি ২০ লাখ বেলে, যা আগের মৌসুমের তুলনায় ১০ লাখ বেল কম। খবর এজিফ্যাক্স।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্ববাজারে পণ্যটির দাম ১১ বছরের সর্বোচ্চে। অন্যদিকে সামষ্টিক অর্থনীতির বৈশ্বিক পরিস্থিতি তুলার ব্যবহার প্রবৃদ্ধিকে ব্যাহত করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ৩৬ বছরের মধ্যে এবারই প্রথম মে মাসে দেয়া পূর্বাভাসে তুলার ব্যবহার কমার পূর্বাভাস দেয়া হলো। যদিও পূর্বাভাসে পণ্যটির উৎপাদন বাড়ার কথা বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, পূর্বাভাস কমানো হলেও চলতি মৌসুমে তুলার ব্যবহার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছতে পারে।

কটন লিন্টের অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধি এবং ব্যবহারকারী উৎপাদকদের ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় পণ্যটির ব্যবহারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল সম্প্রতি চলতি আগামী বছরের জন্য বৈশ্বিক জিডিপিতে দশমিক শতাংশ প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন করেছে। গত বছর প্রাক্কলিত প্রবৃদ্ধির হার ছিল দশমিক শতাংশ। এক বছরের ব্যবধানে জিডিপিতে এমন পরিবর্তন এবং কটন লিন্টের ব্যবহার পরস্পর সম্পর্কযুক্ত।

খাদ্যপণ্য, পরিবহন গৃহস্থালির ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় তুলা থেকে উত্পন্ন পণ্য ক্রয়ে বেশি অর্থ খরচ করছেন না ক্রেতারা। তথ্য বলছে, করোনাজনিত লকডাউনে হোম টেক্সটাইল পণ্যের ব্যবহার বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি নেতিবাচক দিকে মোড় নিয়েছে।

বছরের শুরুর দিকে এক প্রতিবেদনে বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনডেক্স বক্স জানায়, গত বছর তুলার বৈশ্বিক গড় দাম ৪১ শতাংশ বেড়েছিল। ওই সময় প্রতি কেজির মূল্য দাঁড়ায় ডলার ২৩ সেন্টে। মহামারীর ধাক্কা সামলে বৈশ্বিক উৎপাদন ঘুরে দাঁড়ানোয় উৎপাদনের পরিমাণ কোটি ৬৩ লাখ টনে উন্নীত হয়, যা মহামারীর আগের বছরের চেয়েও বেশি। কিন্তু ব্যাপক চাহিদা সরবরাহকে ছাড়িয়ে যাওয়ায় দাম ছিল আকাশচুম্বী।

চলতি বছরের প্রথমার্ধে তুলার দাম আরো বাড়ার প্রক্ষেপণ করেছে ইনডেক্স বক্স। কারণ বছরের শুরুতে তুলার বৈশ্বিক উৎপাদন ছিল নিম্নমুখী। এক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা রেখেছে ভারত যুক্তরাষ্ট্র।

চলতি বছর তুলার গড় দাম গত বছরের তুলনায় প্রায় শতাংশ বাড়ার সম্ভাবনা দেখছে ইনডেক্স বক্স। প্রতি কেজির মূল্য স্থির হতে পারে ডলার ৩৪ সেন্টে।

এদিকে চলতি বছর চীনের তুলা আমদানি ব্যাপক হারে বৃদ্ধির পূর্বাভাস মিলেছে। বিষয়টিও দাম বাড়াতে সহায়তা করবে।

তথ্য বলছে, শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্র উজবেকিস্তানে তুলার ব্যবহার কমার সম্ভাবনা রয়েছে। তুরস্ক ব্রাজিলে ব্যবহার অপরিবর্তিত থাকবে। তবে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ভিয়েতনামে পণ্যটির ব্যবহারে প্রবৃদ্ধি আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বৃহৎ স্পিনিং সক্ষমতা দক্ষিণ দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় কটন লিন্টের চাহিদা বাড়াতে সহায়তা করবে। তবে বৃহৎ স্পিনিং সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও স্থানীয় সরবরাহ চার বছরের সর্বনিম্নে নেমে আসায় ভারতে পণ্যটির ব্যবহার কমবে বলে জানান বিশ্লেষকরা।

এদিকে চলতি বছর তুলার বৈশ্বিক বাণিজ্য গত বছরের তুলনায় বাড়তে পারে। বছর শেষে বাণিজ্যের পরিমাণ দ্বিতীয় রেকর্ড সর্বোচ্চ পৌঁছবে। টানা তিন বছরের মতো শীর্ষ আমদানিকারক দেশের তকমা ধরে রাখবে চীন। বছর দেশটি কোটি লাখ বেল তুলা আমদানি করতে পারে। শীর্ষ পাঁচ আমদানিকারক দেশের মধ্যে শুধু তুরস্কেই আমদানি কমতে পারে। কারণ দেশটিতে এবার ব্যাপক তুলা উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন