করোনায় জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টির ক্ষতি মোকাবেলায় প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

মহামারী করোনার কারণে বিশ্বজুড়ে জনস্বাস্থ্য পুষ্টির যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুষিয়ে নিতে জরুরি উদ্যোগ এবং ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, চলমান কভিড-১৯ মহামারীর কারণে আমাদের পুষ্টি উদ্যোগগুলো মারাত্মক ধাক্কা খেয়েছে। মহামারীর প্রতিবন্ধকতাগুলো কাটানোর পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য, পুষ্টির ক্ষতি মোকাবেলায় জরুরি পদক্ষেপ ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার প্রয়োজন।

গতকাল টোকিও নিউট্রেশন ফর গ্রোথ সামিট-২০২১-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে যুক্ত হন সরকারপ্রধান।  অধিবেশনে আরো বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘের মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেস, ডিআরসি প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স আতোয়াঁ শিসেকেদি শিলোম্বো, জাপানের প্রধানমন্ত্রী কিশোদা ফুমিও, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড মালপাস, ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক ডক্টর টেড্রোস আধানম, ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর এবং জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োশিমাসা হায়াশিসহ অন্যরা। এছাড়া অনুষ্ঠানে পূর্ব তিমুরের প্রধানমন্ত্রী তাউর মাতান রুয়াক এল সালভাদরের ফার্স্ট লেডি গ্যাব্রিয়েলা রদ্রিগেজের ভিডিও বার্তাও প্রচার করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুষ্টিসংক্রান্ত জাতিসংঘের দশকব্যাপী পরিকল্পনা অর্ধেক পথ পেরোনোর কালে সব ধরনের পুষ্টিহীনতার অবসান ঘটাতে বিশ্বজুড়ে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে সাহসী অঙ্গীকারের সময় এসেছে। সব নাগরিকের জন্য পুষ্টি নিশ্চিত করা কঠিন কাজ হলেও পুষ্টি নিরাপত্তায় বিনিয়োগে আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে উপকার অনেক, যা টেকসই প্রবৃদ্ধি উন্নয়নের পথে নিয়ে যায়।

ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য স্বাস্থ্যকর পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করতে পাঁচ দফা প্রস্তাব দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রথম প্রস্তাবে শেখ হাসিনা বলেন, পুষ্টি কর্মসূচিতে এর প্রভাবসহ কভিড-১৯-এর চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। দ্বিতীয় প্রস্তাবে উচ্চ ফলনশীল পুষ্টিকর খাবারের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য গবেষণার অগ্রগতির জন্য সহযোগিতা বাড়ানোর অভিমত ব্যক্ত করেন বাংলাদেশের সরকারপ্রধান।

তৃতীয় প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী জরুরি বিপর্যয়ে আঞ্চলিক বৈশ্বিক পর্যায়ে নিরাপদ খাদ্যব্যাংক গড়ে তোলার আহ্বান জানান। চতুর্থ প্রস্তাবে তিনি খাদ্যে পুষ্টি উপাদান বৃদ্ধির জন্য সর্বোত্তম অনুশীলন এবং দক্ষতা বিনিময়ের ওপর জোর দেন।

শেষ প্রস্তাবে সবাইকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জলবায়ু অভিযোজন তহবিল বিতরণ করার জন্য এবং জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত দুর্যোগের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার আহ্বান জানান। কারণ হিসেবে শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন এটি উন্নয়নশীল বিশ্বে খাদ্য উৎপাদনকে বাধাগ্রস্ত করে।

তার নেতৃত্বাধীন সরকার সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পুষ্টি বাড়াতে অনেক উদ্যোগ নিয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এক দশকে অর্থনীতি, খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য পুষ্টিতে অভূতপূর্ব সাফল্য এবং উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। এসব উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে সামাজিক নিরাপত্তা-বেষ্টনী কর্মসূচির আওতায় দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য ভাতা, অসচ্ছল গর্ভবতী স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য নগদ ভাতা, স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য মধ্যাহ্নভোজ।

সরকারপ্রধান আরো বলেন, আমরা খাদ্যনিরাপত্তা এবং উন্নত পুষ্টির লক্ষ্যে শস্য, শাকসবজি, মাছ, মাংস, ডিম ফলের উৎপাদনে বৈচিত্র্য এনেছি। আমাদের লক্ষ্য আমাদের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে মিল রেখে এসডিজি অর্জন এবং পুষ্টির ফলাফল উন্নত করার জন্য পূর্ববর্তী পুষ্টি সম্মেলনে  প্রতিশ্রুতিগুলোকে শক্তিশালী করা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন