আওয়ামী লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। ১৯৪৯ সালের ২৩ ২৪ জুন ঐতিহাসিক রোজ গার্ডেন প্রাঙ্গণে এক কর্মী সম্মেলনের মাধ্যমে জন্ম নেয় পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রথম কমিটিতে মওলানা ভাসানী সভাপতি শামসুল হক সাধারণ সম্পাদক এবং জেলে থাকা অবস্থায় যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৫৫ সালে অনুষ্ঠিত তৃতীয় সম্মেলনে মুসলিম শব্দটি বাদ দিয়ে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে দলটি।

এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কর্মসূচি পালনের ঘোষণা করেছে দলটি। দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২৩ জুন ভোরে কেন্দ্রীয় কার্যালয় দেশব্যাপী আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জাতীয় দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৯টায় সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করা হবে।

এছাড়া বেলা ১১টায় টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের একটি প্রতিনিধি দল শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করবে। টুঙ্গিপাড়ার কর্মসূচিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী, ইকবাল হোসেন অপু, সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম উপস্থিত থাকবেন।

আজ বিকাল ৪টায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে সভায় বক্তব্য রাখবেন।

দলের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কর্মসূচি গ্রহণের জন্য সারা দেশের নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। পাশাপাশি বিভিন্ন উপযোগী কর্মসূচির মাধ্যমে যথাযথ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করার জন্য আওয়ামী লীগ, সহযোগী ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সব জেলা, উপজেলাসহ সর্বস্তরের নেতা-কর্মী, সমর্থকদের প্রতিও আহ্বান জানান তিনি।

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ধর্মনিরপেক্ষ-অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি, শোষণমুক্ত সাম্যের সমাজ নির্মাণের আদর্শ এবং একটি উন্নত সমৃদ্ধ আধুনিক, প্রগতিশীল সমাজ রাষ্ট্রব্যবস্থা বিনির্মাণে রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক সাংস্কৃতিক দর্শনের ভিত্তি ধারণ করে আসছে সংগঠনটি। সেই ধারাবাহিকতায় স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকায় ছিল ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক সংগঠনটি।

সাতচল্লিশের দেশ বিভাগের পর বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সফলভাবে নেতৃত্ব দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ৬২ ৬৪-এর শিক্ষা আন্দোলন, ৬৪-এর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রতিরোধ, ৬৬-এর ঐতিহাসিক দফা আন্দোলন, ৬৮-এর আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান এবং ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধসব অর্জনই হয়েছে দলের নেতৃত্বে। স্বাধীনতা অর্জনের পর দেশ যখন বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছিল, ঠিক তখনই আঘাত হানে ঘাতকরা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। বিদেশে অবস্থানের কারণে সেদিন প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা শেখ রেহানা।

১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের ১৩তম কাউন্সিল অধিবেশনে সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। দীর্ঘ ছয় বছরের নির্বাসন শেষে ১৯৮১ সালের ১৭ মে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন তিনি। পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠনের মাধ্যমে দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালের নির্বাচনের মধ্যদিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসে দলটি। এরপর ২০০১ সালের নির্বাচনে আবারো ক্ষমতার বাইরে চলে যায় দলটি। সে সময় দেশের প্রধান বিরোধী দল হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করে। বিএনপি সরকারের পতনের পর আসে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। যে সময় দেশে সৃষ্টি হয় রাজনৈতিক সংকট। সেই সংকট মোকাবেলা করে ২০০৮ সালে আবারো ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট। পরবর্তী সময়ে ২০১৪ সালের জানুয়ারি এবং ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার পরিচালনা করে আসছে দলটি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন