করোনায় উৎসবের বাজারে ভাটা

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে করোনা ভাইরাসের কারণে গতবছরের পয়লা বৈশাখ কেন্দ্রিক বেচাকেনা বন্ধ ছিলো। গতবছরের লোকসান পোষাতে এবছর পুরোদমে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা কিন্তু বুধবার থেকে দোকানপাট বন্ধ থাকায় এবারও বৈশাখের ব্যবসায় মার খেলেন তারা।  

পহেলা বৈশাখের দিনে বর্ষবরণের উৎসবে মেতে উঠে রাজধানী রমনার বটমূল, চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ গোটা শহর। উৎসবের ঢামাঢোলে দেশজুড়ে সরগরম থাকে ফুটপাতের চুড়ি বিক্রেতা থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লার দোকানপাট আর শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত শপিংমলগুলো।

অথচ মহামারি করোনার  কারণে উৎসবের রঙ লাগেনি  ঢাকা শহরের কোনো প্রান্তে। ফাঁকা রাস্তায় রিকশার প্যাডেলের শব্দ ছাড়া চলছে শুনসান নীরবতা। এই নীরবতার কালো চাদরে ঢেকে গেছে অসংখ্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জীবনযাত্রা।  

এমন একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী শাহবাগ মোড়ে ফুলের  দোকানের  মালিক শামীম। বণিক বার্তার পরিচয় দিয়ে ব্যবসার অবস্থা জানতে চাইলে নীচু স্বরে বললেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মাত্র ২২০ টাকা বিক্রি হয়েছে। বৈশাখের প্রথম দিনে বিক্রির আশায় অনেক ফুল এনেছিলোম কিন্তু লকডাউন এত কড়াকড়ি হবে ভাবিনি,  এজন্য আমার ২০ হাজারের বেশি টাকা ক্ষতি হলো।

শাহবাগের ফুল বিক্রেতাদের সংগঠন 'শাহবাগ বটতলা ক্ষুদ্র ফুল ব্যবসায়ী সমিতি লিমিটেড' এর সভাপতি আবুল কালাম আজাদ। তিনি বণিক বার্তাকে বলেন, এখানে ৫১ টি ফুলের দোকান রয়েছে। সবাই পর্যাপ্ত ফুল সংগ্রহে রেখেছিল, যার বাজার মূল্য প্রায় ২০ লাখ টাকা। স্বাস্থ্যবিধির কড়াকড়িতে মানুষজন বের হতে পারেনি ফলে বিক্রি হয়নি একদমই। গত কিছুদিনের লকডাউনে বিক্রিতে ভাটা থাকলেও আজ একটু প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু এখন সব ফুল নষ্ট হয়ে যাবে।

প্রতিবছর বৈশাখের বেচা-বিক্রিতে সবার পছন্দের তালিকার প্রথমেই থাকে পোশাক, কিন্তু প্রতিকূল পরিবেশ এবছর ব্যবসার লাগাম টেনে ধরেছে।  নিউমার্কেটের থ্রিপিস ব্যাবসায়ী ইশতিয়াক আহমেদের  সাথে কথা হয়। 

তিনি জানান, বৈশাখের এই সময়ে সবাই কেনাকাটা করেন বিক্রি ভালো থাকে। কয়েকদিন আগের লকডাউনের পর দোকান খোলার রাখার সিদ্ধান্তে ভেবেছিলাম কম করে হলেও এবছর বিক্রি হবে।  কিন্তু একবারের কড়াকড়িতে দোকানই বন্ধ রাখতে হলো। এতে আমাদের টিকে থাকাই কঠিন হয়ে যাচ্ছে।  

গুলিস্তানের নগর প্লাজায় টি-শার্টের শো-রুম রয়েছে ফাহিমের। তিনি বলেন, প্রতিবছর বৈশাখ এবং রমজানের শুরুতে ৫ থেকে ৭ লাখ টাকার টি-শার্ট বিক্রি হতো। কিন্তু এবারের বাস্তবতায় পুরোটাই ক্ষতি হয়েছে,  পরিস্থিতি এমন থাকলে লোকসানের পরিমাণ আরো বাড়বে। 





এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন