ব্রেক্সিট-পরবর্তী বাণিজ্য বিনিয়োগ বাড়াতে জিটুজি বৈঠক জানুয়ারিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের সঙ্গে ব্রিটেনের বাণিজ্যিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। ব্রিটেন বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম রফতানি বাজার। ফলে উভয় দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধি করার প্রচুর সুযোগ রয়েছে। আর ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আলাদা (ব্রেক্সিট) হওয়ার পর নতুন বাণিজ্যনীতিতে বাংলাদেশকে গুরুত্ব দেয়া হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ব্রেক্সিট-পরবর্তী বাণিজ্য বিনিয়োগে আগ্রহী আছে ব্রিটেনও। অবস্থায় নতুন উদ্যমে বাণিজ্য বিনিয়োগ সঠিক পথে পরিচালনার জন্য উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনা জরুরি। এজন্য আগামী জানুয়ারিতেই উভয় দেশের মধ্যে (জিটুজি) বাণিজ্য বৈঠকের আয়োজন করতে চায় সরকার।

গতকাল ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসনের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বাণিজ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনাকালে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ব্রিটেনের অনেক বিনিয়োগ বাংলাদেশে রয়েছে। আরো বিনিয়োগ বাণিজ্যকে বাংলাদেশ স্বাগত জানাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলার কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। চীন, জাপান, কোরিয়া, ভারতসহ বেশকিছু দেশ সেখানে বিনিয়োগে এগিয়ে এসেছে। ব্রিটিশ বিনিয়োগকারীরা এখানে বিনিয়োগ করলে লাভবান হবেন। বাংলাদেশ সরকার বিদেশী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনেক সুযোগ-সুবিধার ঘোষণা দিয়েছে। আগামী দিনগুলোয় বাংলাদেশ-ব্রিটেন বাণিজ্য বিনিয়োগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করবে।

২০২৪ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী আরো বলেন, সময় ব্রিটেন বাংলাদেশকে বাণিজ্য ক্ষেত্রে চলমান সুযোগ-সুবিধা প্রদান অব্যাহত রাখবে বলে আশা করছি। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে পিটিএ এবং এফটিএ করে বাণিজ্য সুবিধা সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশ প্রচেষ্টা শুরু করেছে। বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ব্রিটেন সহযোগিতা করছে, সেজন্য আমরা কৃতজ্ঞ। বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ব্রিটেনে পড়ালেখা করে। অনেকেই উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য ব্রিটেনে যায়। অনেকেই ইচ্ছা থাকার পরও আর্থিক কারণে সেখানে যেতে পারে না। ব্রিটেন বাংলাদেশে একটি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুললে বাংলাদেশের আরো অনেক শিক্ষার্থী সেখানে পড়ালেখা করার সুযোগ পাবে।

সময় ব্রিটিশ হাইকমিশনার বলেন, ব্রেক্সিট-পরবর্তী বাণিজ্য বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ব্রিটেন বাংলাদেশকে গুরুত্ব দিচ্ছে। উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৈঠক করে বিষয়ে বিস্তারিত কার্যক্রম গ্রহণ করা সম্ভব। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ব্রিটিশ সরকার বাণিজ্য বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করতে আগ্রহী। বাংলাদেশের সঙ্গে ব্রিটেনের চলমান বাণিজ্য বিনিয়োগ এবং বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত থাকবে এবং আগামীতে তা আরো বাড়ানোর প্রচেষ্টা থাকবে। বাণিজ্য বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ব্রিটেন বাংলাদেশকে অধিক গুরুত্ব দেয়।

উল্লেখ্য, ব্রিটেন বাংলাদেশের রফতানির একটি বড় বাজার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, গত অর্থবছর ব্রিটেনের বাজারে ৩৪৫ কোটি ৩৮ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ। এর বিপরীতে সময় দেশটি থেকে ৪১ কোটির কিছু বেশি ডলারের পণ্য আমদানি করা হয়। আর ব্রেক্সিট-পরবর্তী উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য আরো বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন