রিজেন্টের এমডি মিজানসহ ৮ জন ফের ২ দিনের রিমান্ডে

আদালত প্রতিবেদক

করোনা টেস্ট না করেই রিপোর্ট প্রত্যাশীদেরকে মনগড়া নেগেটিভ ও পজেটিভ সার্টিফিকেট দেয়ার মামলায় রিজেন্ট হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মিজানুর রহমানসহ ৮ জনের ফের ২ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে ঢাকা সিএমএম আদালত। আজ রোববার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোর্শেদ আল মামুন ভূঁইয়া এ রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন।

রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন- হাসপাতালটির হেলথ টেকনিশিয়ান আহসান হাবীব, প্রশাসনিক কর্মকর্তা আহসান হাবীব হাসান, হেলথ টেকনোলজিস্ট হাতিম আলী, রিজেন্ট গ্রুপের প্রকল্প প্রশাসক রাকিবুল হাসান ওরফে সুমন, মানবসম্পদ কর্মকর্তা অমিত বণিক, গাড়িচালক আব্দুস সালাম, কর্মী আব্দুর রশীদ খান ওরফে জুয়েল।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র‌্যাব-১ এর সহকারী পরিদর্শক নজরুল ইসলাম আরও জিজ্ঞাসাবাদেও জন্য আসামি মিজানের সাত দিন এবং অপর আসামিদের ৫ দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। 

আসামিদের মধ্যে মিজানের গত ২৫ জুলাই আদালত এ মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ওই রিমান্ড শেষে তিনি গত ৫ আগস্ট আদালতে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আর অপর ৭ আসামির গত ৮ জুলাই ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন আদালত। 

এ মামলার অপর কিশোর কামরুল ইসলাম আদালতের মাধ্যমে গাজীপুর কিশোর সংশোধনাগারে রয়েছে।

অন্যদিকে মামলার প্রধান আসামি প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ওরফে মো. সাহেদ করিমের গত ১৬ জুলাই আদালত ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত ৭ জুলাই রাতে উত্তরাপশ্চিম থানায় মামলাটি দায়ের করে র‌্যাব। মামলায় ১৭ জনকে আসামি করা হয়। দণ্ডবিধি ৪০৬/ ৪১৭/ ৪৬৫/ ৪৬৮/ ৪৭১/ ২৬৯ ধারায় ১৭ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।

র‌্যাবের দাবি, হাসপাতাল দুটিতে করোনার নমুনা নিয়ে ভুয়া রিপোর্ট দেওয়া হতো। বিনামূল্যে চিকিৎসার কথা বলে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করত।

২০১৪ সালের পর লাইসেন্স নবায়ন না করেই হাসপাতাল দুটি চালানো হচ্ছিল। আর করোনা সংক্রমণের পর থেকে মালিক সাহেদ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্টিকার লাগানো নম্বরবিহীন গাড়ি ব্যবহার করছিলেন। সাহেদ করিম কখনো মেজর, কখনো সচিব, আবার ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর এপিএস হিসেবেও নিজের পরিচয় দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় দুটি, বরিশালে একটি, উত্তরা থানায় আটটি মামলাসহ রাজধানীতে ৩২টি মামলা রয়েছে।

সাহেদ করিম একজন প্রতারক। ফেসবুকে নিজের পরিচয় দিয়েছেন আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির সদস্য; ন্যাশনাল প্যারা অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট; রিজেন্ট ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, রিজেন্ট কেসিএস লিমিটেড, কর্মমুখী কর্মসংস্থান সোসাইটি, রিজেন্ট হসপিটাল লিমিটেড ও রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান। সেন্টার ফর পলিটিক্যাল রিসার্চ নামে একটি প্রতিষ্ঠানেরও চেয়ারম্যান তিনি।

ছবি আছে সরকার প্রধান থেকে শুরু করে ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের সঙ্গে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষস্থানে থাকা লোকজনের সঙ্গেও ছবি আছে। নিজের অপকর্ম আড়াল করতে প্রভাবশালী লোকজনের সঙ্গে ছবি তুলে তা ব্যবহার করতেন। সাহেদ করিমের গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরায়। ওখানে তাদের করিম সুপার মার্কেট নামের একটি বিপণিবিতান ছিল। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় চলে আসেন। তবে মাঝে মাঝে সাতক্ষীরায় যেতেন। তার মা সাফিয়া করিম ২০০৬-০৭ সালের দিকে স্থানীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন