করোনা মোকাবেলায় ইতালি সরকারের উদ্যোগ

৪০ হাজার কোটি ইউরোর ঋণ প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা

বণিক বার্তা ডেস্ক

নভেল করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে ইতালিতে। সংকটপূর্ণ পরিস্থিতিতে এক মাস ধরেই দেশটি জুড়ে লকডাউন চলছে। পরিস্থিতি চলতে পারে আরো কয়েক সপ্তাহ। লকডাউনে জনজীবনের পাশাপাশি থমকে আছে ব্যবসা-বাণিজ্যও। অবস্থায় মুমূর্ষু ব্যবসা খাতকে টিকিয়ে রাখতে সোমবার নতুন করে ৪০ হাজার কোটি ইউরোর (প্রায় ৪৩ হাজার কোটি ডলার) ঋণ প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ইতালির সরকার। দেশটির ইতিহাসে এর আগে কখনো এত বড় অংকের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়নি। খবর এএফপি রয়টার্স।

সংকটে থাকা কোম্পানিগুলোকে ব্যাংকঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে প্রণোদনা কাজে লাগানো হবে। করোনা পরিস্থিতিতে ব্যবসা খাতে প্রণোদনা হিসেবে নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো জরুরি সহায়তার ঘোষণা দিল ইতালি সরকার। গত মাসে ৩৪ হাজার কোটি ইউরো সরকারি সহায়তায় ঋণ প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল জুজেপ্পে কন্তে প্রশাসন। ফলে দেশটির ব্যাংকগুলো এখন সরকারি প্রণোদনার আওতায় কোম্পানিগুলোকে মোট ৭৪ হাজার কোটি ইউরো ঋণ দিতে পারবে।

৪০ হাজার কোটি ইউরোর মধ্যে ২০ হাজার কোটি ইউরো ঋণে সরকারি কোষাগার থেকে গ্যারান্টি দেয়া হবে। এক্ষেত্রে কোনো ঋণ খেলাপি হলে তার ৯০ শতাংশ পর্যন্ত অর্থ সরকারি কোষাগার থেকে ব্যাংকগুলোকে দেয়া হবে। আর যেসব ঋণে লোকসানের পরিমাণ ২৫ হাজার ইউরোর বেশি হবে না, সেসব ক্ষেত্রে সরকার ব্যাংকগুলোকে শতভাগ পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেবে। বাকি ২০ হাজার কোটি ইউরোর ঋণ প্যাকেজে গ্যারান্টি দেবে ইতালির রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ ব্যাংক কাসা ডিপোজিতি প্রেস্তিতি (সিডিপি) এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান সেস সিমেস্ট, যারা রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সেবা দিয়ে থাকে।

এদিকে করোনা মহামারীর কারণে আর্থিকভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত জনগণকে সাহায্যার্থে চলতি মাসের শেষের দিকে আরেকটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জুজেপ্পে কন্তে।

নতুন প্রণোদনা প্যাকেজের বিষয়ে মন্ত্রিসভার এক বৈঠক শেষে কন্তে বলেন, এটি বড় একটি পদক্ষেপ। আমাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তার লক্ষ্যে এর আগে এত বড় অংকের কোনো প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে বলে আমার মনে পড়ে না।

নভেল করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়ায় সাম্প্রতিক সময়ে ইতালির রফতানিনির্ভর কোম্পানিগুলোর আয়ে ধস নেমেছে। সরকার জানিয়েছে, অর্থনৈতিক মন্দার কারণে সংকটে থাকা ইতালীয় কোম্পানিগুলোকে যথাসম্ভব সুরক্ষা দেয়া হবে।

ভূমধ্যসাগরীয় দেশ ইতালিতে কভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে এরই মধ্যে প্রাণ হারিয়েছে সাড়ে ১৬ হাজারের বেশি মানুষ। নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা লাখ ৩২ হাজারের বেশি। ব্যবসা-বাণিজ্যের মন্দা ভাবে কর্মসংস্থান হারিয়েছে লাখ লাখ মানুষ। অবস্থায় জনগণকে ধৈর্য রাখার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জুজেপ্পে কন্তে।

টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে ভাষণে কন্তে বলেন, শিগগিরই আমরা নতুন এক বসন্তের দেখা পাব। তবে মুহূর্তে আমাদের অবশ্যই ঘরে থাকতে হবে। আমরা যে প্রণোদনা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তা দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ। ইতালিতে স্বাস্থ্যগত যে জরুরি অবস্থা তৈরি হয়েছে, অর্থনৈতিক সামাজিক খাতেও তার প্রভাব রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন