জাতীয় দলে ডাক পেলেন লক্ষ্মীপুরের হাসান

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, লক্ষ্মীপুর

পাকিস্তান সফরে নতুন মুখ হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের টি২০ স্কোয়াডে ডাক পেয়েছেন লক্ষ্মীপুরের পেস বোলার হাসান মাহমুদ। সদ্য শেষ হওয়া বঙ্গবন্ধু বিপিএলে বোলিংয়ে গতির ঝড় তুলে আলোচনায় আসেন তিনি। আজ দুপুরে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) থেকে সেলফোনে কল করে তাকে বিষয়টি জানানো হয়। এর পর থেকেই তার পরিবারজুড়ে আনন্দের বন্যা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে তাকে নিয়ে আলোচনা। জাতীয় দলে হাসানই লক্ষ্মীপুরের প্রথম ক্রিকেটার।

সদ্য শেষ হওয়া বঙ্গবন্ধু বিপিএলে ঢাকা প্লাটুনের হয়ে হাসান মাহমুদ ১৩ ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়েছেন। এর মধ্যে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে ৩২ রানে ৪ উইকেট নিয়ে হয়েছেন ম্যাচ সেরা। বিপিএলে নিখুঁত লাইন ও লেন্থের পাশাপাশি গতির কারণেও বেশ আলোচিত ছিলেন। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৪২.৪০ কিলোমিটার গতিতে বোলিং করার রেকর্ড আছে তার। এছাড়া টুর্নামেন্টে নিয়মিতই ১৩৫ থেকে ১৪০ কিলোমিটার গতিতে বল করেছেন।

হাসান লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা মো. ফারুক ও গৃহিণী মাহমুদা খাতুন রানীর ছোট ছেলে। তারা দুই ভাই ও তিন বোন। ভবিষ্যতে সফলতা কামনা করে তার মা-বাবা লক্ষ্মীপুরসহ দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।

এর আগে হাসান নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশের হয়ে খেলেছেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে। ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি নিউজিল্যান্ডের কুইন্সটাউনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিয়েছিলেন ৩ উইকেট। তখন তার বোলিংয়ের প্রশংসা করে ভবিষ্যত্ স্টার লিখে টুইট করেছিল আইসিসি। ক্রিকেট খেলায় মা-বাবার পাশাপাশি তার অনুপ্রেরণা জেলা ক্রীড়া সংস্থার কোচ মনির হোসেন। ক্রিকেট খেলায় তার হাতেখড়ি এ কোচের কাছেই।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১২ সালের শেষ দিকে জেলা ক্রিকেট একাডেমিতে কোচ মনিরের সঙ্গে হাসানের পরিচয় হয়। মিডিয়াম পেস বোলার হিসেবে ক্রিকেট খেলা শুরু করেন হাসান। প্রথম থেকেই তার রানআপ, ল্যান্ডিং, রিলিজ, বলিং স্পট ও ফলো থ্রো ভালো ছিল। বিকেএসপিতে সুযোগ পাওয়ার পর বোলিংয়ে গতি বেড়ে যায়।

এ ব্যাপারে তার বাবা মো. ফারুক বলেন, ‘পড়ালেখার পাশাপাশি ক্রিকেট খেলায় হাসানের আগ্রহ ছিল। অনেক সময় খেলার মাঠ থেকে সে পরীক্ষা দিতে যেত। অবসর সময়ে ক্রিকেট নিয়েই সে ব্যস্ত থাকত। দেশের হয়ে খেলার বিষয়ে জানতে পেরে খুব খুশি হয়েছে। আশা করছি, ভালো বোলিং করে সে দেশের সুনাম বাড়াতে সক্ষম হবে।

জানতে চাইলে হাসান মাহমুদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বিপিএলে অভিজ্ঞ কোচের প্রশিক্ষণ ও খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেলতে পেরে অনেক কিছু শিখেছি। আল্লাহর রহমতে ৪ উইকেট পেয়ে একটি ম্যাচে সেরা হয়েছি। এটা আমার বড় পাওয়া। জাতীয় দলে সুযোগের বিষয়টি বিসিবি থেকে আমাকে সেলফোনে জানানো হয়েছে। তাত্ক্ষণিকভাবে খবরটি আমি বিশ্বাস করতে পারিনি। পরে মা-বাবা, প্রিয় কোচ মনির হোসেন ও বন্ধুবান্ধবকে সুখবরটি জানাই। সবাই এতে খুব খুশি হয়েছে। দেশের জন্য নিজের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করব, ইনশাআল্লাহ। এজন্য লক্ষ্মীপুরসহ দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা করছি।

তিনি আরো বলেন, ‘বিপিএল শেষে লক্ষ্মীপুরে এসেছি। পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে কয়েক দিন কাটিয়ে ঢাকায় ফেরার কথা ছিল। কিন্তু বিসিবির ডাক পেয়ে ঢাকায় ফিরে যেতে হচ্ছে। এতদিন জাতীয় দলে খেলার সুযোগের অপেক্ষা ছিলাম। সেটি পেয়েছি, মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি। আজ সকালে তার বিসিবিতে উপস্থিত হওয়ার কথা রয়েছে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন