চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে অল্পের জন্য মন্দা এড়াতে সক্ষম হয়েছে ইউরোপের অর্থনৈতিক পাওয়ার হাউজ হিসেবে পরিচিত জার্মানি। সম্প্রতি প্রকাশিত নতুন সরকারি পরিসংখ্যানে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর বিবিসি।
এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে সংকোচনের পর জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে জার্মানির অর্থনীতি দশমিক ১ শতাংশ সম্প্রসারিত হয়েছে। উল্লেখ্য, টানা দুই প্রান্তিকে অর্থনৈতিক কার্যক্রমে পতন ঘটলে মন্দা ধরা হয়।
মূলত ম্যানুফ্যাকচারড পণ্য রফতানিকারক হিসেবে জার্মানির শক্তিমত্তা বৈশ্বিক বাণিজ্যের সাম্প্রতিক উত্তেজনার মধ্যে দেশটিকে ঝুঁকিতে ফেলেছে। দেশটির প্রবৃদ্ধি ধনাত্মক থাকলেও এখনো তা বেশ দুর্বল। নতুন পরিসংখ্যান ও পূর্ববর্তী প্রান্তিকের পারফরম্যান্স মিলিয়ে দেখা যায়, ছয় মাসে ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতিটি কিছুটা হলেও সংকুচিত হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা রেখেছে বাণিজ্য।
সেবাসহ জার্মান রফতানির মোট মূল্য দেশটির সামগ্রিক অর্থনীতির প্রায় ৪৭ শতাংশ। এসব রফতানিতে প্রচুর আমদানীকৃত পণ্যও রয়েছে। বিকল্প দৃষ্টিতে বলা যায়, জার্মানি যেসব পণ্য মূল্য সংযোজন করে বিদেশে বিক্রি করছে, তার পরিমাণ দেশটির জিডিপির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। জার্মানির মতো বৃহৎ অর্থনীতির জন্য এসব পরিসংখ্যান অনেক বড়।
এসব পরিসংখ্যান দেশটির ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পের শক্তিমত্তাকে প্রতিফলিত করে। দেশটির ক্ষেত্রে সেবার তুলনায় ম্যানুফ্যাকচারড পণ্য ব্যাপকভাবে লেনদেন হয়। এসব পরিসংখ্যানের অর্থ হলো, বৈশ্বিক বাণিজ্যের প্রতিকূল পরিস্থিতিতে জার্মানি অত্যন্ত দুর্বল হয়ে আছে।
বাণিজ্য উত্তেজনায় বিভিন্ন দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জার্মানি। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বিরোধ চীনা অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, অথচ দেশটি জার্মান গাড়ি ও শিল্প-কারখানার যন্ত্রপাতির গুরুত্বপূর্ণ আমদানিকারক। এর বাইরে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর মার্কিন শুল্কারোপ তো রয়েছে।
এছাড়া অতি সম্প্রতি ইউরোপীয় উড়োজাহাজ নির্মাতা কোম্পানি এয়ারবাসের ভর্তুকি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশোধমূলক শুল্কারোপের কেন্দ্রে থাকা চারটি দেশের একটি জার্মানি। এমন একটি পরিস্থিতিতে চলতি বছর জার্মানির অর্থনীতি মন্থর হয়ে পড়া কোনো আকস্মিক কিছু নয়।