দক্ষিণ আফ্রিকায় দাবদাহ ও শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করছে। এতে আসন্ন মৌসুমে শস্য রোপণ বিলম্ব ও ফলন কম হওয়ার আশঙ্কা করছেন দেশটির কৃষকরা। খবর রয়টার্স।
দক্ষিণ আফ্রিকার কৃষি শিল্প সংস্থা এগ্রিএসএর নির্বাহী পরিচালক ওমরি ভান জিল বলেন, দেশটির কয়েকটি নির্দিষ্ট জায়গায় মাত্রাতিরিক্ত শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করছে, বিশেষ করে লিম্পোপো রাজ্যের কয়েকটি অংশ, উত্তর, পূর্ব ও পশ্চিম কেপের বৃহত্তর অংশ জুড়ে।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান শস্য সয়াবিন ও ভুট্টা। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দেশটির প্রধান শস্য উৎপাদনকারী অঞ্চলে আবাদ ও ফলন কমে আসার সম্ভাবনা বাড়ছে। এর আগে ২০১৫-১৬ মৌসুমে এল-নিনোর প্রভাবে দেশটির শস্য আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর ২০১৮-১৯ মৌসুমে বৃষ্টিপাতের অভাবে একই পরিস্থিতি বজায় থাকতে দেখা গেছে। এরপরে আসন্ন মৌসুমেও শস্য আবাদ কমে এলে দেশটির জন্য তা মারাত্মক হুমকি তৈরি করবে। এরই মধ্যে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা সতর্ক করে চলছে যে, দেশটিতে এবার রেকর্ডসংখ্যক লোক খাদ্য সংকটে পড়বে। এর সংখ্যা দাঁড়াতে পারে ৪৫ লাখের মতো।
ইন্টারন্যাশনাল প্লানেট অন ক্লাইমেট চেঞ্জের তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ আফ্রিকার তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার বৈশ্বিক গড় বৃদ্ধির তুলনায় দ্বিগুণ। এবারের অস্বাভাবিক গরম ও শুষ্ক গ্রীষ্মকাল দেশটির অধিকাংশ এলাকায় পানি সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে।
এগ্রিকালচার বিজনেস চেম্বারের অর্থনীতিবিদ ওয়ান্ডিল সিহলোবো বলেন, গত বছরে প্রতিকূল পরিবেশের জেরে দক্ষিণ আফ্রিকা শস্য আবাদে খারাপ সময় পার করেছে। চলতি বছরেও একই পরিস্থিতি বজায় থাকলে দেশটি গভীর সংকটে পড়বে। ২০১৯-২০ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকায় মোট ১৫ লাখ ১৯ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হতে পারে। তবে অনুমানের জন্য এটা একেবারেই প্রাথমিক সময় বলে জানান তিনি।
এদিকে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ফসল আবাদে আগ্রহ হারাচ্ছেন দেশটির কৃষকরা। এতে দেশটিতে কৃষি যন্ত্রপাতির কেনাবেচা কমে গেছে। সাউথ আফ্রিকান এগ্রিকালচার মেশিনারি অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরে দেশটিতে ট্রাক্টর ও কম্বাইন হারভেস্টর বিক্রি কমেছে ৩০ ও ৫৯ শতাংশ।