চলমান বন্যায় এ পর্যন্ত দেশের ৮ জেলার ২৯ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত
হয়েছে। এতে সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী ২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার (২২
আগস্ট) সচিবালয়ে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ
মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা এ তথ্য জানিয়েছেন।
ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ
ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বন্যা কবলিত হয়েছে। এসব জেলায় মোট ৪ লাখ ৪০ হাজার ৮৪০টি
পরিবার পানিবন্দি হয়েছে। এসব অঞ্চল থেকে দূরে যারা অবস্থান করছেন; তারা চিন্তিত হয়ে
পড়েছেন স্বজনদের নিয়ে। বন্যায় সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ হওয়ায় খোঁজ নিতে পারছেন না। এ
বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার শরণাপন্ন হচ্ছেন তারা। তাদের পোস্টে উঠে এসেছে হতাশা ও আর্তনাদ।
গণমাধ্যমকর্মী আনোয়ার হোসেন লিখেছেন, ‘বড় বোনের মেয়েটা ১ বছরের বাচ্চা
নিয়ে ছাদে আশ্রয় নিয়েছে। সেখানেও পানি উঠতেছে। শেষ কথা মামা বাচান আমার বাচ্চাটাকে।
বোনদের সঙ্গে যোগাযোগ নাই। ভাই, ভাবি, ভাতিজা-ভাতিজি কেমন আছে জানি না। হেলিকপ্টার
ছাড়া এ মূহুর্তে বিকল্প কী আছে জানি না। বিকাল পর্যন্ত বৃষ্টি হলে, এদের লাশ ছুয়ে শোক
করারও উপায় থাকবে না। হেলিকপ্টার, সরকারের প্রশিক্ষিত বাহিনী, দয়া করে এখনই উদ্ধার
করেন। মৃত্যুর পর ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ, ত্রাণ দেয়া এসব করার মানুষও পাবেন না। এ কষ্ট
আর নিতে পারছি না। আল্লাহ তুমি রহম করো।’
বাঁচার আকুতি জানিয়ে আটকা পড়া সাকিব আফনান লিখেছেন, ‘আর ১-২ ঘণ্টার
মধ্যে আমাদের উদ্ধার করা না হলে হয়তো বা ভেসে যাব। আমি এবং আমার পরিবার একদম পানিবন্দি
হয়ে গেছি। আমাদের ঘরের রুমের মধ্যে আর ঢোকা যাচ্ছে না। আমরা সিড়ির রুমে অবস্থান করছি।
যে যেভাবে পারেন দয়া করে উদ্ধার করার জন্য সহায়তা করুন।’
ইকবাল বাহার জাহিদ লিখেছেন, ‘গতকাল রাত থেকে ফুলগাজী ও পরশুরামের
সঙ্গে সব যোগাযোগ বন্ধ। কাউকে পাচ্ছি না। মোবাইল নেটওয়ার্ক কাজ করছে না, ইলেক্ট্রিসিটি
নাই। স্পিডবোট ছাড়া ফেনী থেকে ফুলগাজী ও পরশুরাম যাওয়ার আর কোনো ব্যবস্থা নেই। হাজার
হাজার বাড়িতে লাখো মানুষ পানিবন্দি। গতকাল পর্যন্ত সবার কান্নার শব্দ শুনেছি, আজ আর
কিছুই জানতে পারছি না।’
আবদুর রহিম লিখেছেন, ‘টাকা, ভাড়া, সকল খরচ আমরা দেব। আমাদের ফেনীতে
নৌকা, স্পিডবোটের ব্যবস্থা করে দিন।’
জাকিয়া শিশির লিখেছেন, ‘ফেনীতে কোনো উদ্ধারকারী থাকলে সাড়া দিন। দুটি
ছোট বাচ্চা নিয়ে বিপদে আছি। পুরো ঘর ডুবে গেছে।’