চাপ কমছে না মূল্যস্ফীতির

এখনই সুদহার হ্রাসের যৌক্তিকতা দেখছেন না ফেড চেয়ার

বণিক বার্তা ডেস্ক

ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত ফেডারেল রিজার্ভের কার্যালয় ছবি: রয়টার্স

উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ এখনো সামাল দিয়ে উঠতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। এমন পরিস্থিতিতে এখনই সুদহার কমানোর যৌক্তিকতা দেখছে না দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ। সম্প্রতি এমনটিই জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ার জেরোম পাওয়েল। পাশাপাশি শিগগিরই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি শিথিল হওয়ার আশাবাদও ব্যক্ত করেছেন তিনি। খবর এপি। 

নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক প্যানেল ডিসকাশনে পাওয়েল জানান, মূল্যস্ফীতির চাপ কমে আসার ব্যাপারে তার যে আত্মবিশ্বাস ছিল, তা এখন অনেকটাই কমে এসেছে। কারণ চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বেড়েছে। 

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে সুদহার দুই দশকের সর্বোচ্চে অবস্থান করছে। এটি আর বাড়ানোর পরিকল্পনা নেই উল্লেখ করে পাওয়েল জানান, বর্তমান সুদহার বজায় রেখেই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হবে। 

তিনি বলেন, ‘আমাদের হাতে যে তথ্য আছে, সে অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে সুদহার বাড়ানোর সম্ভাবনা আছে বলে আমি মনে করছি না। সুদহার বর্তমানে যে পর্যায়ে আছে, সেখানে থাকার সম্ভাবনাই বেশি বলে আমি মনে করছি। 

২০২২ সালে ব্যাপক মূল্যস্ফীতির চাপে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি গ্রহণ করে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। রেকর্ড মাত্রায় বাড়ানো হয় সুদের হার। তবে চলতি বছর সংস্থাটি এ নীতি থেকে সরে আসবে বলে প্রত্যাশা ছিল অর্থনীতিবিদ ও মুদ্রাবাজার সংশ্লিষ্টদের। 

তাদের পর্যবেক্ষণ ছিল, ২০২২ সালের তুলনায় মূল্যস্ফীতির চাপ অনেকটাই শিথিল হয়ে আসবে। ফলে এক বা দুই ধাপে সুদহার কমাবে ফেডারেল রিজার্ভ। কিন্তু সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। উল্টো বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দ্রব্যমূল্যের চাপ অব্যাহত বেড়েছে। এমন পরিস্থিতি শিগগিরই সুদহার কমানোর সম্ভাবনা নেই বলেই ইংগিত দিয়েছেন পাওয়েল ও অন্যান্য ফেড কর্মকর্তা। 

মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদক মূল্যসূচক বা পিপিআই প্রকাশিত হয়েছে। এতে দেখা গেছে, এপ্রিলে দেশটির পাইকারি মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। গতকাল দেশটির মাসভিত্তিক ভোক্তা মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশ হওয়ার কথা। এপ্রিলে এ মূল্যস্ফীতি কমে আসার প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

এদিকে পিপিআই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, পাইকারি মূল্যস্ফীতি বাড়লেও গত মাসে ব্যয়সংক্রান্ত কিছু সূচক কমেছে। এর মধ্যে রয়েছে উড়োজাহাজ ভাড়া, হাসপাতাল ফি ও কার বীমা। 

পাইকারি মূল্যস্ফীতি বাড়ার বিষয়টিকে খুব বেশি উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন না পাওয়েল। ব্যয়সংক্রান্ত এসব সূচকে পতনের কারণে তিনি এটিকে ঊর্ধ্বমুখী না বলে মিশ্র বলে উল্লেখ করেছেন। 

২০২২ সালে গ্রীষ্মে যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৯ দশমিক ১ শতাংশে উঠেছিল। এপ্রিলে এটি ৩ দশমিক ৪ শতাংশে নেমেছে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। চলতি বছর মূল্যস্ফীতি ২ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ফেডারেল রিজার্ভের। 

যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে ব্যাংক সুদহার ৫ দশমিক ৩ শতাংশ, যা ২০২৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত সপ্তাহে ফেড কর্মকর্তারা জানান, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত সুদহার এ অবস্থায় রেখে দিতে প্রস্তুত তারা। 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন