যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক ঘাঁটি এলাকা থেকে চীনা মালিকানাধীন
এক সাইবার সংস্থাকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গুপ্তচরবৃত্তি
ও জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ থেকে এ নির্দেশরা জারি করা হয়েছে বলে হোয়াইট হাউসের
পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। খবর বিবিসি।
তথ্য মতে, মাইনওয়ান পার্টনার্স নামের কোম্পানিটি ক্রিপ্টোকারেন্সি
মাইনিং নিয়ে কাজ করতো। সেখানে তাদের ক্রয় করা জমি রয়েছে। মাইনওয়ান ও তার অংশীদারদের
মালামিকানাধীন জমি দ্রুত সময়ের মধ্যে বিক্রি করে এলাকাটি ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
হোয়াইট হাউস বলছে, মাইনওয়ান পার্টনার্সের বেশিরভাগ মালিকানা
চীনা নাগরিকদের। তাদের সম্পত্তি বিক্রি করার জন্য ১২০ দিনের সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। এলাকাটিতে
তারা ক্রিপ্টো মাইনিং অপারেশন পরিচালনা করত।
এলাকাটি ওয়াইমিংয়ের একটি বিমান বাহিনীর ঘাঁটি থেকে মাত্র
এক মাইলেরও (১ দশমিক ৬ কিলোমিটার) কম দূরত্বে অবস্থিত। যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তঃমহাদেশীয়
ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষণ করা হয়।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে মাইনওয়ান পার্টনার্স এবং যুক্তরাষ্ট্রের
অবস্থিত চীনা দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বিবিসি নিউজ।
এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ‘একটি কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্র
ঘাঁটির কাছাকাছি স্থানে বিদেশী মালিকানাধীন রিয়েল এস্টেটের অবস্থান নজরদারি এবং গুপ্তচরবৃত্তি
কার্যক্রম সহজ করতে করে তুলতে পারে। এছাড়া সেখানে বিদেশী উৎস থেকে আনা সরঞ্জামের উপস্থিতি
জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে।’
ওয়াইমিংয়ের ফ্রান্সিস ই. ওয়ারেন বিমান বাহিনীর ঘাঁটি হলো মিনুটেমান-ত্রি পারমাণবিক আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের কেন্দ্র। ২০২২ সালে ওই ঘাঁটির কাছে একটি জমি অধিগ্রহণ করে চীনা নাগরিকদের মালিকানাধীন সাইবার সংস্থা মাইনওয়ান। পরে সেখানে ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিংয়ের সরঞ্জাম ইনস্টল করে তারা।
হোয়াইট হাউস বলছে, দ্য কমিটি অন ফরেন ইনভেস্টমেন্ট ইন দ্য ইউএসকে (সিএফআইইউএস) মাইনওয়ানের ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়ে অবহিত করা হয়নি। যদিও সংস্থাটি জাতীয় নিরাপত্তা ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে এমন চুক্তি যাচাই করার কাজ করে থাকে।
এদিকে আনুষ্ঠানিকভাবে না জানানো হলেও একটি সাধারণ উৎস থেকে বিষয়টি জানার পর কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে লেনদেনের ক্ষেত্রে সতর্ক করা হয়েছিল সংস্থাটির পক্ষ থেকে।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন আন্তঃএজেন্সি প্যানেল জানিয়েছে, চীনা নাগরিকদের ওই ভূমি অধিগ্রহণের সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তার প্রভাব রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি জেনেট ইয়েলেন এক বিবৃতিতে বলেন, মাইনওয়ানকে ভূমি বিক্রি করতে বাধ্য করতে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। বিদেশী কোনো বিনিয়োগ যাতে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তাকে ক্ষুণ্ন করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে সিএফআইইউএস গুরুত্বপূর্ণ গেটকিপারের ভূমিকা পালন করছে।’
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সংবেদশীল সামরিক স্থাপনাগুলোর কাছে চীনা নাগরিকদের সম্পতি কেনার বিষয় নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের মধ্যে।
প্রসঙ্গত, চীনের ব্যাপারে হোয়াইট হাউজের সর্বশেষ ঘোষণাটি
মাত্র দিন দুয়েক আগেই সংবাদমাধ্যমে এসেছে। তথ্য অনুসারে, সেখানে বিদ্যুচ্চালিত গাড়িসহ
(ইভি) বেশ কয়েকটি চীনা পণ্য আমদানিতে শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়া হয়েছে।