ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডে ৫ হাজারের বেশি মার্চেন্ট পয়েন্টে ডিসকাউন্ট সুবিধা

ছবি : বণিক বার্তা

গ্রাহকদের জন্য ঢাকা ব্যাংকের কত ধরনের ক্রেডিট কার্ড আছে?

ঢাকা ব্যাংকে ক্রেডিট কার্ডের মোট পাঁচটি ব্র্যান্ড আছে। ভিসা ব্র্যান্ডের মধ্যে সিগনেচার, প্লাটিনাম ও গোল্ড এবং মাস্টারকার্ড ব্র্যান্ডের মধ্যে আছে ওয়ার্ল্ড ও টাইটানিয়াম ক্রেডিট কার্ড। এ ব্র্যান্ডগুলোর আবার অনেকগুলো প্রডাক্ট ভ্যারিয়েন্ট রয়েছে। আমরা গ্রাহকদের আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী ক্রেডিট কার্ডের ব্র্যান্ডগুলো সাজিয়েছি। এ কারণে যেকোনো শ্রেণীর গ্রাহক চাইলে ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে পারছেন।

আপনাদের ক্রেডিট কার্ড কেন গ্রাহক পকেটে রাখবেন?

ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের উন্নত সেবার ব্যাপারে আমরা খুবই সচেতন। আমাদের বেশির ভাগ ক্রেডিট কার্ডই কমপ্লিমেন্টারি ইস্যু করা হয়। নির্দিষ্ট কিছু লেনদেনে বার্ষিক ফি ছাড় পাওয়া যায়। দেশে আমরাই প্রথম অতিরিক্ত প্রায়োরিটি পাস ইস্যু না করে গ্রাহকের হাতে থাকা কার্ডের মাধ্যমে লাউঞ্জ-কি সুবিধার আওতায় বিশ্বে ১ হাজার ৩০০-এর বেশি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ ব্যবহারের সুবিধা রেখেছি। এছাড়া গ্রাহকদের জন্য রয়েছে এয়ারপোর্ট পিক অ্যান্ড ড্রপ এবং মিট অ্যান্ড গ্রিট সুবিধা। সারা বছর তারকা হোটেলে একটি কিনলে একা বা একাধিক ফ্রি বাফেট ডিনার, লাঞ্চ বা ব্রেকফাস্টের সুবিধাও পাওয়া যাচ্ছে। আগ্রহী গ্রাহক অনলাইনে কার্ডের আবেদন করতে পারেন। সারা বছর পাঁচ হাজারের বেশি মার্চেন্ট পয়েন্টে থাকছে ডিসকাউন্ট বা ক্যাশব্যাক ও বিনাসুদে মাসিক কিস্তিতে পণ্য ক্রয়ের সুবিধা। এছাড়া বিভিন্ন দিবস ও উপলক্ষকে ঘিরে গ্রাহকদের বাড়তি সুবিধা দেয়া হচ্ছে। এসব কারণে গ্রাহক ঢাকা ব্যাংকের কার্ড পছন্দ করছেন।

সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে প্রথমবারের মতো আমরা বেশকিছু স্বনামধন্য কোম্পানি, অ্যাসোসিয়েশন ও সামাজিক ক্লাবের সঙ্গে মাস্টারকার্ড বা ভিসা কো-ব্র্যান্ডেড ক্রেডিট কার্ড চালু করেছি। এগুলোয় আমরা ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। এছাড়া অন্য সব ক্রেডিট কার্ডেও বিভিন্ন ধরনের অফার থাকায় গ্রাহক আমাদের কার্ডের প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন।

ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহকসংখ্যা বাড়াতে আপনাদের পরিকল্পনা কী?

আমি এরই মধ্যে বলেছি, আমরা বেশকিছু কো-ব্র্যান্ডেড কার্ড চালু করেছি, যেগুলো আমাদের দ্রুত ব্যবসা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এছাড়া আমরা ঢাকা ব্যাংকের পেরোল গ্রাহক, আমানতকারী, ঋণগ্রহীতা ও আমাদের করপোরেট গ্রাহকদের এমপ্লয়িদের মধ্যে দ্রুত সময়ে অল্পকিছু ডকুমেন্ট গ্রহণের মাধ্যমে কার্ড দেয়ার ব্যবস্থা করেছি। আমাদের একটি দক্ষ সেলস টিম ও ১৫০-এর বেশি শাখা-উপশাখা নেটওয়ার্ক রয়েছে। এগুলোকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন রকম মার্কেটিং ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে কার্ড বিক্রি বাড়ানোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তাছাড়া অনলাইনের মাধ্যমে কার্ডের আবেদন পদ্ধতিকে আরো জনপ্রিয় করার ব্যবস্থা নিয়েছি আমরা।

রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য কী ধরনের অফার দিচ্ছেন? 

রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাহকদের প্রয়োজন ও পছন্দের কেনাকাটা মাথায় রেখে আমরা বিভিন্ন রকম অফারের ব্যবস্থা করেছি। দেশের সেরা তারকা হোটেলসহ অন্যান্য স্বনামধন্য রেস্টুরেন্টে ইফতার ও সাহরিতে একটি কিনলে সর্বোচ্চ পাঁচটি পর্যন্ত বাফেট খাবার গ্রহণের ব্যবস্থা রেখেছি। নামিদামি লাইফস্টাইল, ফ্যাশন, ফুটওয়্যার, ইলেকট্রনিকস, ফার্নিচার, জুয়েলারি, গ্রোসারি, ফুড ব্র্যান্ডসহ সরাসরি ও অনলাইন কেনাকাটায় আকর্ষণীয় ছাড়, ক্যাশব্যাক ও কেনাকাটায় বিনাসুদে মাসিক কিস্তিতে পরিশোধের সুবিধাও রাখা হয়েছে।

দেশের জনসংখ্যার অনুপাতে ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা খুবই কম। কেন এ বাজার সম্প্রসারণ সম্ভব হচ্ছে না?

প্রচলিত নিয়মে শুধু নিয়মিত ট্যাক্স পেয়ার (করদাতা) ও হালনাগাদ ট্যাক্স রিটার্নের কপি জমা দেয়া সাপেক্ষেই একজন গ্রাহক ক্রেডিট কার্ড পেতে পারেন। এ বিচারে এ নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীই ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্য বাজার। ট্যাক্স পেয়ারের আওতা বাড়লে কার্ডের বাজারও বাড়বে। তাছাড়া এ বাজার মূলত ঢাকা ও চট্টগ্রামকেন্দ্রিক। কার্ডের মাধ্যমে কেনাকাটার সুবিধা দেশের অন্যান্য অঞ্চলে বাড়ানো গেলে ক্রেডিট কার্ডের বাজার আরো বড় হবে। তাছাড়া সম্পূর্ণ জামানতবিহীন হওয়ায় খেলাপি সংস্কৃতিও বাজার সম্প্রসারণে আরেকটি বাধা। তবে সরকার, বাংলাদেশ ব্যাংক ও কার্ড ইস্যুয়িং ব্যাংকগুলো ক্যাশলেস সোসাইটি প্রতিষ্ঠার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বিদেশ ভ্রমণে ক্রেডিট কার্ডের জনপ্রিয়তাও দ্রুত বাড়ছে। এসব কারণে ক্রেডিট কার্ডের বাজার সম্প্রসারিত হওয়ার সুয়োগ সৃষ্টি হয়েছে।

বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে মানুষ এখন ক্রেডিট কার্ডের প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি অনুভব করছে। এটিকে কাজে লাগানো যায় কীভাবে?

বিদেশ ভ্রমণে ক্রেডিট কার্ড থাকলে কারেন্সি এক্সচেঞ্জ করার ঝামেলা থাকে না, যেকোনো অংকের লেনদেনও করা যায়। কার্ড থাকাতে বিমানবন্দরে লাউঞ্জ ব্যবহার করা যায়। লেনদেনের ডিজিটাল ট্রাক করাও সম্ভব হয়। আবার কার্ডের মাধ্যমে কারেন্সি ব্যবহার কাগুজে কারেন্সির চেয়ে সাশ্রয়ী। এসব সুবিধার ব্যাপারে সচেতনতা এবং সহজে ও দ্রুত কার্ড ইস্যুর ব্যবস্থা করতে পারলে ক্রেডিট কার্ড বিক্রি ও ব্যবহার বাড়ানো যেতে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন