তিন বছরে এবি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড গ্রাহক বেড়েছে ৭০০ শতাংশ

ছবি : বণিক বার্তা

আমাদের দেশের ক্রেডিট কার্ডের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে এবি ব্যাংকের তিন ধরনের ক্রেডিট কার্ড রয়েছে। এগুলোর নাম গোল্ড, টাইটানিয়াম ও ওয়ার্ল্ড ক্রেডিট কার্ড। আমাদের ক্রেডিট কার্ড দেশের এক লাখের বেশি মার্চেন্ট পয়েন্ট এবং ১৫ হাজারের বেশি এটিএমে ব্যবহার করা যায়। আর দেশ-বিদেশ মিলিয়ে আমাদের কার্ড ব্যবহার করা যায় চার কোটি মার্চেন্ট পয়েন্ট এবং ২০ লাখের বেশি এটিএমে। এবি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডে আন্তর্জাতিক লাউঞ্জ সুবিধা ছাড়াও রয়েছে ২০০টির বেশি ইএমআই পার্টনার এবং ১ হাজার ১০০ মার্চেন্ট, যেখানে বছরজুড়ে বিভিন্ন পণ্যে আকর্ষণীয় ছাড় থাকে।

এবি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডে কিছু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমন বিভিন্ন পেশাজীবীদের জন্য রয়েছে ‘প্রি-অ্যাপ্রুভড’ ক্রেডিট কার্ড। আমাদের কার্ডে ১৮টি লেনদেনে বার্ষিক ফি মওকুফ করার সুযোগ আছে। বিভিন্ন সেগমেন্টে রয়েছে আকর্ষণীয় ডিসকাউন্ট কিংবা ক্যাশব্যাক অফার, যা আমাদের ক্রেডিট কার্ডগুলোকে আরো জনপ্রিয় করে তুলছে।

ক্রেডিট কার্ডের চাহিদা এবং ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাংলাদেশে ক্রমাগত বাড়ছে। এ চাহিদা পূরণে এবি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডগুলো গ্রাহকের কাছে আরো জনপ্রিয় করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যেমন আমরা আমাদের দেশের বেশির ভাগ বড় ব্র্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্ব করেছি এবং বছর ধরে আকর্ষণীয় ডিসকাউন্টের পাশাপাশি ক্যাশব্যাক অফার রাখছি। বর্তমানে সারা দেশে আমাদের পার্টনারের সংখ্যা ১ হাজার ১০০। তিন বছরে আমাদের ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহক সংখ্যা ৭০০ শতাংশ বেড়েছে। ২০২৩ সালে ক্রেডিট কার্ড ব্যবসায় সাফল্যের জন্য মাস্টারকার্ড এবি ব্যাংককে পাঁচটি বিভাগে স্বীকৃতি দিয়েছে।

নতুন গ্রাহক টানতে ও ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা বাড়াতে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। ফলে নতুন গ্রাহক সহজে ক্রেডিট কার্ড পাবেন এবং গ্রাহকরা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে আরো উৎসাহ পাবেন। আমাদের পদক্ষেপের একটি হলো ‘টার্গেটেড মার্কেটিং’। এর মাধ্যমে নতুন গ্রাহক টানতে তাদের প্রয়োজন এবং পছন্দ অনুযায়ী ক্ষুদে বার্তা ও বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয়। আমাদের আরেকটি পদক্ষেপ হলো ইনসেনটিভ ও পুরস্কার। এর মাধ্যমে নতুন গ্রাহকের জন্য আকর্ষণীয় সাইন-আপ বোনাস, রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ক্যাশব্যাক ও ডিসকাউন্ট অফার দেয়া হয়। এছাড়া গ্রাহকের সুবিধার্থে আমরা আবেদন প্রক্রিয়া সহজ করেছি। অনলাইন প্লাটফর্ম বা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার সুযোগ রয়েছে। পছন্দ বিশ্লেষণের মাধ্যমে গ্রাহককে কাস্টমাইজড বা ব্যক্তিগত সেবা নিশ্চিত করার পদক্ষেপও আমরা নিয়েছি। প্রযুক্তিগত উন্নয়নের কারণে এ মার্কেট পরিবর্তনশীল। তাই আমাদের সবারই উচিত এ পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়ে মার্কেটটি আরো বৃদ্ধিতে সহায়তা করা।

এবার ঈদুল ফিতর সামনে রেখে আড়ং, ইয়েলো, ইউনিমার্ট, আগোরা, স্বপ্ন, এপেক্স ও ইনফিনিটিসহ বিভিন্ন আউটলেটে আমাদের গ্রাহকের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় ক্যাশব্যাক। শতাধিক আউটলেটে রয়েছে আকর্ষণীয় ডিসকাউন্ট সুবিধা। এছাড়া এ রমজানে আমাদের কার্ডের সেরা আকর্ষণ হলো হোটেল সারিনায় বুফে ইফতার। আর ডিনারে একটি প্যাকেজ কিনলে চারটি ফ্রি। সেহরিতে একটি কিনলে ফ্রি মিলছে তিনটি। এছাড়া অন্যান্য পাঁচ তারকা যেকোনো হোটেলে থাকছে একটি কিনলে একটি ফ্রি অফার।

ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার অবশ্য এখনো মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তদের মাঝে সীমাবদ্ধ। এটা এখনো সাধারণ মানুষের জন্য লেনদেনের অন্যতম মাধ্যম হতে পারেনি। তার অন্যতম কারণ ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার ক্ষেত্রে টিন সনদ থাকা বাধ্যতামূলক। এজন্য নিম্ন আয়ের গ্রাহকরা ক্রেডিট কার্ডের আবেদন করতে পারেন না। এছাড়া গ্রাহক সচেতনতা, অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা ও পর্যাপ্ত মার্চেন্টের অভাব ক্রেডিট কার্ডের বাজার সম্প্রসারণে একটি অন্যতম বাধা।

বিদেশ ভ্রমণে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার যথেষ্ট বেড়েছে। বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে মানুষ এখন ক্রেডিট কার্ডের প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি অনুভব করছে। মানুষ বিদেশ ভ্রমণের সময় নগদ বৈদেশিক মুদ্রা বহনে সমস্যায় পড়ে। এ কারণে তারা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে ঝুঁকছে। কার্ড ব্যবহারকারীদের এ চাহিদা বিবেচনা করে আমরা নতুন নতুন প্রমোশনাল অফার নিয়ে কাজ করছি। এছাড়া ডলার এনডোর্সমেন্ট প্রক্রিয়া অনলাইনের মাধ্যমে সহজলভ্য করতে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার কথা বিবেচনা করছি। গ্রাহকের সুবিধার্থে আমরা এরই মধ্যে বিদেশের প্রায় দেড় হাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ‘প্রাইওরিটি লাউঞ্জ’ পরিষেবার সুযোগ দিচ্ছি। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্যাশলেস বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে যে ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে, তা সফল করতে ক্রেডিট কার্ডের একটি বড় ভূমিকা রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন