বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবসে বক্তারা

বিভিন্ন দেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে বন্যপ্রাণী

বণিক বার্তা প্রতিনিধি I বাগেরহাট ও বরগুনা

বন্যপ্রাণী রক্ষায় গতকাল বরগুনায় বিভিন্ন সংগঠনের মানববন্ধন ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস উপলক্ষে বাগেরহাটের মোংলা ও বরগুনার তালতলীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘পৃথিবীর অস্তিত্বের জন্য প্রাণিকুল বাঁচাই’ স্লোগানে গতকাল পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠন এ কর্মসূচি পালন করেছে।

এ সময় বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন বন্যপ্রাণীর অবৈধ বাণিজ্যের মূল রুট হিসেবে কাজ করছে। এদেশ থেকেও বন্যপ্রাণী বিভিন্ন দেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। মানব জাতি টিকিয়ে রাখতে বন্যপ্রাণীকে টিকিয়ে রাখতে হবে। এজন্য সবার আগে অবৈধ বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। অবৈধ বাণিজ্য দমনে বন্যপ্রাণী পাচারের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করতে হবে।’

বাগেরহাটের মোংলায় মানববন্ধন কর্মসূচি আয়োজন করে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, সুন্দরবন রক্ষায় আমরা ও পশুর রিভার ওয়াটারকিপার। শহরের চালনা বন্দর মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে মানববন্ধন শেষে শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। বক্তারা বলেন, ‘সুন্দরবনের বাঘ, হরিণ, ভোদড়, হাঙর, ইরাবতী ডলফিন, শুশুক, কচ্ছপ, শকুন, শাপলা পাতা মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী সংকটাপন্ন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত। জাতিসংঘের আইইউসিএন, ১৮৩টি দেশ স্বাক্ষরিত সাইটিশ চুক্তি ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন-২০১২ অনুযায়ী বাংলাদেশের ৪৩টি স্থলচর স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৮৪টি পাখি, ৫০টি সরীসৃপ, ১৬টি বাদুড় ও শাপলা পাতা মাছ, ১২টি হাঙর ও কামুট এবং দুটি উভচর প্রাণী মহাবিপন্ন। এসব প্রাণী রক্ষায় কাজ করতে হবে।’

মানববন্ধন শেষে মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. হাবিবুর রহমানের মাধ্যমে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়।

এদিকে বন্যপ্রাণী রক্ষায় বরগুনার তালতলীতেও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলার টেংরাগিরি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য কেন্দ্রের সামনে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ ও ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) এবং টেংরাগিরি বন সুরক্ষা কমিটির আয়োজনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘সুন্দরবনের পর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল হচ্ছে টেংরাগিরি বন, যা স্থানীয়ভাবে ফাতরার বন নামে পরিচিত। এ বনের বন্যপ্রাণী ও উদ্ভিদকূল রক্ষা করতে না পারলে উপকূলের অস্তিত্ব রক্ষায় সংকট সৃষ্টি হবে।’ বন্যপ্রাণী রক্ষায় সমুদ্রতীরে বাঁধ নির্মাণ, বন বিভাগের জনবল বৃদ্ধি, খাবার বাজেট বৃদ্ধি, শব্দদূষণ রোধ, হরিণ ও কুমিরের বেষ্টনী সংস্কারের দাবি জানান বক্তারা।

এ সময় বক্তব্য রাখেন টেংরাগিরি বন সুরক্ষা কমিটির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মনির, বন বিভাগের ছকিনা বিট কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন, নিশানবাড়িয়া বিট কর্মকর্তা হায়দার হোসেন, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ তালতলী ও আমতলী উপজেলা শাখার সমন্বয়ক আরিফ রহমান, শুভসন্ধ্যা বন সুরক্ষা কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর হাওলাদার, সুশীল সমাজ প্রতিনিধি ইকবাল হোসেন রাজা, উন্নয়নকর্মী এম মিলন, পরিবেশ সাংবাদিক মো. মোস্তাফিজ প্রমুখ।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন