আমরা এখন শিক্ষার সঙ্গে অর্থনীতির সংযোগ সাধনের চেষ্টা করছি

শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল দেশের শিক্ষা খাত নিয়ে নীতিনির্ধারণ পদে আছেন বেশ কয়েক বছর ধরে। ২০১৯ সাল থেকে শিক্ষা উপমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন চট্টগ্রাম-৯ আসনের এই সংসদ সদস্য। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। দেশের শিক্ষা খাতে গত কয়েক বছরে নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সরকারের এসব উদ্যোগ নিয়ে শিক্ষাসংশ্লিষ্টদের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা রয়েছে। আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস উপলক্ষে বণিক বার্তার সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ফাতেমা-তুজ-জিনিয়া

স্বাধীনতার ৫৩ বছরে পদার্পণ করেছি আমরা। বিগত কয়েক দশকে আমাদের দেশের অর্থনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নানা উন্নয়ন হয়েছে। আপনার মতে, এ সময়ে শিক্ষা খাতের অর্জনগুলো কী কী?

বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাদর্শন ছিল সার্বজনীন শিক্ষা, দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষা, কর্মমুখী ‍শিক্ষা। স্বাধীনতার পর দেশ সে অনুযায়ী আগাচ্ছিল। কিন্তু পঁচাত্তর-পরবর্তী সময়ে যেসব অবৈধ সরকার ছিল তারা এ শিক্ষাদর্শন থেকে সরে আসে এবং একটা গতানুগতিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করে। পরবর্তী ১৯৯৬ সাল থেকে আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাদর্শন বাস্তবায়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন, যার সুফল এখন  আমরা পাচ্ছি। শিক্ষা খাতে অর্জন বললে আমি সুস্পষ্ট চারটি বিষয়ের কথা বলতে চাচ্ছি। প্রথমত নিরক্ষরতা দূরীকরণ। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসেই কিন্তু নিরক্ষতা দূরীকরণ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে এবং এর ফলে এখন প্রায় শতভাগ জনগোষ্ঠী শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে। সাক্ষরতার হারে আঞ্চলিক মানদণ্ডে আমরা এখন ভারতসহ অনেক দেশের থেকেই এগিয়ে। দ্বিতীয় বিষয়টি হলো অর্থনৈতিক চাহিদা অনুযায়ী কৃষি, প্রকৌশল, মেডিকেল ও বিজ্ঞান-প্রযুক্তির মতো বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা। এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সরাসরি আমাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে ভূমিকা রাখতে পারছে। তৃতীয় অর্জন হলো একসময় আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষা অর্জন করতে বিপুল অর্থ ব্যয় করে দেশের বাইরে যেতে হতো কিন্তু এখন আমরা তাদের দেশেই উচ্চ শিক্ষা অর্জনের সুযোগ তৈরি করতে পেরেছি। বিগত কয়েক বছরে দেশে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দান এবং আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার ফলেই এটি সম্ভব হয়েছে। চতুর্থ বিষয়টি হলো দেশী ডিগ্রির আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা। আগে যখন আমাদের শিক্ষার্থীরা স্নাতক সম্পন্ন করে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য দেশের বাইরে যেত বেশির ভাগ সময় দেখা যেত ওই ডিগ্রিটা গ্রহণ করা হতো না এবং তাদের পুনরায় স্নাতক করে তারপর উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করতে হতো। এখন কিন্তু সেটি হচ্ছে না। শিক্ষার্থীরা স্নাতক করেই সরাসরি উচ্চতর ডিগ্রি নিতে পারছে। অর্থাৎ আমাদের ডিগ্রিগুলো এখন আন্তর্জাতিকভাবেও গ্রহণ করা হচ্ছে। এটিও একটি বড় অর্জন বলে মনে করি। 

স্বাধীনতার পর এ অর্ধশতকে আমাদের শিক্ষা খাতের সীমাবদ্ধতাগুলো কী? কোন বিষয়গুলোয় আমরা পিছিয়ে আছি বলে আপনি মনে করেন?

আমি মনে করি আমরা শিক্ষাক্ষেত্রের সঙ্গে কর্মজগতের সংযোগ স্থাপনে পিছিয়ে আছি। আমাদের একটা বৃহৎ জনগোষ্ঠী উচ্চ শিক্ষায় এলেও অনেকের সুনির্দিষ্ট ক্যারিয়ার প্ল্যান নেই। ফলে তারা তাদের জ্ঞানকে কর্মক্ষেত্রের সঙ্গে সমন্বয় করতে পারছে না। আবার আরেকটি বিষয় হলো সব কাজে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি একটা সামাজিক সংস্কৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেখা গেছে, রিসিপশনিস্ট নিয়োগ দিতে গেলেও আমরা মাস্টার্স খুঁজি। এসব কারণে আমাদের সমাজে একটা ধারণা প্রচলিত হয়ে গেছে অনার্স-মাস্টার্স ডিগ্রি ছাড়া দক্ষতা অর্জন হয় না। অথচ এ ধরনের বেশির ভাগ দক্ষতা কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে তৈরি হওয়ার কথা। এ জায়গাটায় আমাদের দুর্বলতা আছে। এরই মধ্যে আমরা এর জন্য বেশকিছু উদ্যোগও নিয়েছি। আউটকাম বেজড এডুকেশন সিস্টেম চালু করেছি। আশা করছি বিষয়টি কাটিয়ে উঠতে পারব এবং কর্মদক্ষতার সঙ্গে শিক্ষার সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

বাংলাদেশের মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার মান উন্নয়নে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সম্প্রতি নতুন শিক্ষাক্রমও চালু করা হয়েছে। কিন্তু শিক্ষা পরিসংখ্যানের তথ্য অনুযায়ী মাধ্যমিকে দক্ষ, প্রশিক্ষিত শিক্ষকের সংকট রয়েছে। বিশেষত ইংরেজি, গণিত, আইসিটি, বিজ্ঞানের মতো বিষয়গুলোয় এ সংকট অত্যন্ত প্রকট। এ বিষয়টি সমাধানে পরিকল্পনা কী?

আমাদের শিক্ষকের একটি সংকট রয়েছে, এটি অস্বীকারের  উপায় নেই। তবে আমরা এটি দূর করার চেষ্টা করছি এবং শিক্ষকদের দক্ষ করে তুলতে প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। আর বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকের কথা বলা হলে আমরা যদি গণিতের জন্য গণিতের গ্র্যাজুযেট, রসায়নের জন্য রসায়নের গ্র্যাজুয়েট বা আইসিটির জন্য আইসিটি গ্র্যাজুয়েটই খুঁজি তাহলে সারা দেশের স্কুলগুলোর জন্য এত গ্র্যাজুয়েট আমরা পাব না। এখন নতুন শিক্ষাক্রমে মাধ্যমিক পর্যায়ে বিজ্ঞান শিক্ষায় চাপ কিছুটা কমানো হয়েছে। কারণ আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী আগে আমাদের মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ওপর প্রয়োজনের অতিরিক্ত চাপ ছিল। এখন এটি কমানো হয়েছে এবং এ পর্যায়ের একজন শিক্ষার্থীর যতটুকু শেখা প্রয়োজন সেটাই শেখানো হচ্ছে। নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী বিজ্ঞানে শিক্ষার্থীদের যতটুকু শেখানো হচ্ছে তার জন্য বিজ্ঞানের বিষয়সমূহে স্নাতক সম্পন্নকারী শিক্ষকই যথেষ্ট। যেমন কেমিস্ট্রির যিনি শিক্ষক তার পক্ষে বায়োলজি পড়ানো বা গণিতের যিনি শিক্ষক তার পক্ষে পদার্থবিজ্ঞান পড়ানো সম্ভব হবে। শিক্ষাক্রমে চাপ কমানোর ফলে শিক্ষকদের ওপরও চাপ কমে আসবে এবং বিশেষায়িত শিক্ষকের সংকটও কিছুটা নিরসন হবে। আর এ শিক্ষকরা যাতে সঠিকভাবে শেখাতে পারেন তার জন্য তাদের বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে তোলা হচ্ছে। তবে বিষয়ভিত্তিক স্নাতক-স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী শিক্ষক কলেজ পর্যায়ে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। কারণ কলেজ পর্যায়ে যা শেখানো হবে তার জন্য বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক প্রযোজন হবে।

মাধ্যমিক থেকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত মানুষের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। আমাদের সমাজ ও অর্থনীতিতে এর প্রভাব কীভাবে পড়েছে বলে আপনার মনে হয়?

অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে। যেমন আমাদের খাদ্যে উৎপাদন বৃদ্ধির প্রয়োজন ছিল। এ কারণে সরকার কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে এবং এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণায় অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে। এর ফলাফল কিন্তু আমরা অর্থনীতিতে দেখতে পাচ্ছি। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিভিন্ন গবেষণার অবদান রয়েছে। একই রকম পরিবর্তন স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও এসেছে। আগে আমাদের দেশে চিকিৎসক, নার্সের সংকট অনেক বেশি  ছিল। অনেক রোগের চিকিৎসা দেশে সম্ভব হতো না। মেডিকেল কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি, নার্সিং ইনস্টিটিউটের সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে এখন সেই সংকট অনেকটা কমেছে। এখন দেশেই অনেক জটিল রোগের চিকিৎসা সম্ভব হচ্ছে। এছাড়া আগে আমাদের বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের জন্য দেশের বাইরে থেকে প্রকৌশলীদের আনতে হতো কিন্তু আমাদের দেশের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যেসব প্রকৌশলী বের হচ্ছেন তারাই এ নির্মাণকাজগুলো করতে পারছেন। একইভাবে দেশে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় চালু, শিক্ষায় তথ্যপ্রযুক্তি বাধ্যতামূলক করায় আমরা আইটি খাতেও ক্রমেই সক্ষমতা অর্জন করছি এবং এর ফলে দেশের বাইরে বিভিন্ন আইটি পণ্য যেমন সফটওয়্যার, কেবল ইত্যাদি রফতানি শুরু হয়েছে। 

নতুন কারিকুলাম নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা-সমালোচনা রয়েছে। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?

আগে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল মুখস্থনির্ভর। কে কত ভালো মুখস্থ করছে তার ওপর নির্ভর করে ফলাফল তৈরি হতো। শিক্ষার্থীরা তখন পড়ত পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের জন্য। অল্প সময়ে ভালো ফলাফলের প্রচেষ্টাকে কাজে লাগিয়ে লাভবান হচ্ছিলেন কোচিং এবং গাইড বই ব্যবসায়ীরা। নতুন শিক্ষাক্রমে এ সুযোগ থাকছে না। শিক্ষার্থীরা এখন হাতে-কলমে শিখবে। তবে নতুন শিক্ষাক্রমে অনেক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। এখন যেভাবে আছে এটি একেবারে শতভাগ স্থায়ী তা কিন্তু নয়। এরই মধ্যে নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে বেশকিছু ইনপুট আসছে। মূল্যায়ন পদ্ধতির একটা চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এগুলো আমরা দেখছি। মূল্যায়ন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আসতে পারে। এছাড়া নতুন শিক্ষাক্রমে আরো পরিবর্তন আসতে পারে। আমাদের যে কারেকশনগুলো আসবে সেগুলো আমরা সমাধান করব।

এখন আমরা একটি বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি, সেটি হলো ১২ বছর বয়সে একজন শিক্ষার্থীর ন্যূনতম যে দক্ষতা ও জ্ঞান থাকা প্রয়োজন, ১৬ বছর বয়সে একজন শিক্ষার্থীর যে দক্ষতা ও জ্ঞান থাকা দরকার সেটি যেন ওই বয়সী সব শিক্ষার্থীর মধ্যেই নিশ্চিত হয়। 

দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে। কিন্তু নতুন অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেই অবকাঠামোগত সংকট এবং শিক্ষক সংকট রয়েছে। এছাড়া অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়েই তেমন গবেষণা কার্যক্রম নেই। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?

বিশ্ববিদ্যালয় বলতে শুধু অবকাঠামো নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন পাস মানেই এই নয় যে একটা প্রকল্প নেয়া হবে, অনেকগুলো ভবন নির্মাণ হবে। বিশ্ববিদ্যালয় হলো হিউম্যান ক্যাপাসিটি ডেভেলপ করার প্রতিষ্ঠান। একটি জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য হলো সে ওই এলাকার উচ্চ শিক্ষাকে মনিটরিং করবে, মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করবে। যেমন এরই মধ্যে আমাদের দেশের জেলার কলেজগুলোতে স্নাতক পর্যায়ের ডিগ্রি চালু রয়েছে। ওই সব কলেজে এরই মধ্যে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অবকাঠামো রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ হওয়া উচিত এসব প্রতিষ্ঠানের উচ্চশিক্ষাকে মনিটরিং করা, তাদের শিক্ষার মান নিশ্চিত করা। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজেরই তো প্রথমেই শিক্ষার্থী ভর্তির প্রয়োজন নেই। সে এসব প্রতিষ্ঠানে অনার্স-মাস্টার্স পর্যায়ের মান নিশ্চিত করবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্টগ্র্যাজুয়েট, ভালো মানের গবেষণা নিশ্চিত করবে। এ কারণে ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছিলেন যে জেলা শহরের কলেজগুলো ওই জেলার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকবে এবং বেসরকারি কলেজগুলো থাকবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। উচ্চ শিক্ষার মান নিশ্চিতেই প্রধানমন্ত্রী এমন নির্দেশনা দিয়েছিলেন। কারণ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে তো গাজীপুর থেকে সারা দেশে এত সংখ্যক কলেজের মনিটরিং সম্ভব নয়। যদি কলেজগুলো নিকটবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকে তাহলে কলেজগুলোতে মনিটরিং এবং শিক্ষার মান নিশ্চিত সহজ হবে। আবার এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রয়োজনীয় সম্পূর্ণ অর্থ সরকারের দিতে হয় এবং কলেজগুলোর সব ফি চলে যায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে। যখন কলেজগুলো নিকটবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবে তখন সেই বিশ্ববিদ্যালয়েরও আয়ের উৎস তৈরি হবে। এরই মধ্যে সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযের অধিভুক্ত করে এর সুফল পাওয়া যাচ্ছে। কলেজগুলোর শিক্ষার মান বেড়েছে। অন্যান্য কলেজের ক্ষেত্রেও শিগগিরই প্রধানমন্ত্রীর ২০১৪-এর নির্দেশনা বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেয়া হবে।

শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে আগামী পাঁচ বছর আপনার পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাই। কোন বিষয়গুলোকে আপনি অগ্রাধিকার দেবেন?

আমাদের অনেকগুলো কাজ এরই মধ্যে চলমান। সেই কাজগুলো যথাসময়ে যথাযথভাবে শেষ করতে চাই। আর আমাদের রাজনৈতিক লক্ষ্য হলো শিক্ষার মাধ্যমে দেশের জনসম্পদ তৈরি করা, কর্মসংস্থান তৈরি করা। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে চাই। এটি একটি মাল্টিটাস্কিং বিষয়, যেটি কোনো একক নেতৃত্বে নয়, বরং শিক্ষা পরিবারের যৌথ নেতৃত্বে বাস্তবায়ন করতে চাই। যৌথ নেতৃত্ব বলতে আমাদের শিক্ষাক্ষেত্রে যে যেখানে আছেন তিনি যেন সেই জায়গা থেকে যথাযথভাবে নেতৃত্ব দিতে পারেন, তার কাজটি সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারেন। যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা অভিজ্ঞ শিক্ষাবিদ, অত্যন্ত সম্মানীয় ব্যক্তি, আমরা তাদের নেতৃত্বগুণকে কাজে লাগিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যথাযথভাবে গড়ে তুলতে চাই, ইতিবাচক ফলাফল  চাই। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আমরা তার পক্ষ থেকে শিক্ষা পরিবারে রাজনৈতিক নেতৃত্ব দিতে এসেছি। তবে শিক্ষার নেতৃত্ব শিক্ষাবিদরা দেবেন। আমরা যৌথ নেতৃত্ব দিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করে, যারা কর্মদাতা আছেন তাদের সঙ্গে আলোচনা করে শিক্ষার কারিকুলামগুলোকে সাজাতে চাই। অর্থাৎ আমরা এখন শিক্ষার সঙ্গে অর্থনীতির সংযোগ সাধনের চেষ্টা করছি যাতে কাজের ধরন পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা শিক্ষার জায়গাগুলো পরিবর্তন করতে পারি। কর্মজগতের চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে সফট স্কিল, হার্ড স্কিল ডেভেলপ করতে পারি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন