২০২৩-২৬

ভারতের সেমিকন্ডাক্টর খাতে তিন লাখ কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে

বণিক বার্তা ডেস্ক

সেমিকন্ডাক্টর বা চিপ উৎপাদনে বিশ্বের বিভিন্ন কোম্পানি ভারতকে বেছে নিচ্ছে। অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ পর্যায়ে উৎপাদন বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে দেশটির সরকার। সার্বিকভাবে এর মাধ্যমে আগামী তিন বছরে দেশটিতে তিন লাখের বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।

সম্প্রতি মানব সম্পদ পরিষেবা কোম্পানি টিমলিজ ডিজিটাল তথ্য জানিয়েছে। কোম্পানিটির স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড গ্রোথ বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মুনিরা ললিওয়ালার বরাত দিয়ে ইটি টেলিকম জানায়, সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে ইলেকট্রনিকস, এমবেডেড সিস্টেম প্রোগ্রামিংয়ের মৌলিক ধারণার অভাব নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। তা সত্ত্বেও ২০২৬ সাল নাগাদ খাতে তিন লাখের বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। এর মধ্যে পরীক্ষণ, ইঞ্জিনিয়ারিং, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, সিস্টেম সার্কিট, ভ্যালিডেশন, অপারেশনসহ বিভিন্ন খাত রয়েছে।

মুনিরার মতে, উৎপাদন ডিজাইনের ধরনে পরিবর্তন আসার পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে বিনিয়োগও বাড়ছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে সামনের দিনগুলোয় চাহিদাও বাড়বে। তবে টেলিকম খাত ঘিরে সতর্কবার্তাও দিয়েছেন তিনি। কয়েক বছরের মধ্যে খাতে বিদ্যমান দক্ষতা ঘাটতি আরো বাড়বে বলেও জানান তিনি। এর আগে গুরুগ্রামভিত্তিক টেলিকম সেক্টর স্কিল কাউন্সিল জানিয়েছিল, টেলিকম খাতে বর্তমানে যে জনশক্তি রয়েছে তাদের দক্ষতা বাড়ানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে কোম্পানিগুলো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে কর্মী নিয়োগ দিচ্ছে। ভারতে ফিরে এসেছে এমন অভিজ্ঞ পেশাদারদের সন্ধান করছে এবং বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে।

সেমিকন্ডাক্টর খাতসংশ্লিষ্টদের ধারণা, সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনে ভারত যে রোডম্যাপ করেছে এর মাধ্যমে ২০৩০ সাল নাগাদ ১০ লাখ নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। ললিওয়ালা জানান, সেমিকন্ডাক্টর সিক্সজি স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন খাত দ্রুত বাড়ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী দুই থেকে তিন বছরে দেশটিতে কর্মী নিয়োগের হার ২৮ থেকে বেড়ে ৩৩ শতাংশে উন্নীত হবে।

২০২১ সালের ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার ৭৬ হাজার কোটি রুপির একটি প্রণোদনা কর্মসূচি চালু করে। মূলত অভ্যন্তরীণ পর্যায়ে সেমিকন্ডাক্টর ডিসপ্লে উৎপাদন ইকোসিস্টেমের উন্নয়নে উদ্যোগ নেয়া হয়। ২০২০ সালে কভিড-১৯ মহামারীর কারণে বিশ্বব্যাপী লকডাউন শুরু হলে চীনের বিকল্প হিসেবে সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনে ভারত ভালো ভূমিকা রেখেছিল। প্রযুক্তি বাজার বিশ্লেষকদের মতে, প্রযুক্তি পণ্য রফতানির জন্য এশিয়ার দেশটি কৌশলগতভাবে উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করছে। এর অংশ হিসেবে গবেষণা উন্নয়ন (আরঅ্যান্ডডি), পরীক্ষণ সক্ষমতা প্রযুক্তিগত উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। চিপ উৎপাদনের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কোয়ালকম, মাইক্রন এএমডি এবং তাইওয়ানের ফক্সকন ভারতে উৎপাদন শুরুর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। ললিওয়ালা জানান, আরো অনেক কোম্পানি ভারতে সেমিকন্ডাক্টর পরীক্ষণ অ্যাসেম্বলি ইউনিট নির্মাণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। যে প্রণোদনা প্রোগ্রাম চালু করা হয়েছে সেটি আকর্ষণীয় হলেও প্রযুক্তিগত দিক থেকে পিছিয়ে থাকার কারণে এখন থেকেই দক্ষ কর্মীর সন্ধান করতে হবে। অ্যাপলের অন্যতম সরবরাহকারী ফক্সকন ভারতে তাদের কার্যক্রম উপস্থিতি বাড়িয়েছে। সম্প্রতি দেশটিতে একটি সেমিকন্ডাক্টর ফ্যাব্রিকেশন কারখানা স্থাপনের কথাও জানিয়েছে কোম্পানিটি। কোয়ালকমের প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকর্তা আকাশ পালকিওয়াল জানান, ভারতে টাটার আউটসোর্সড সেমিকন্ডাক্টর অ্যাসেম্বলি অ্যান্ড টেস্ট ইউনিট ব্যবহার করবে কোয়ালকম।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন