জেফ বেজোসকে হটিয়ে বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলোন মাস্ক

বণিক বার্তা ডেস্ক

বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি টেসলার শেয়ারদরে উল্লম্ফনের জেরে তার প্রতিষ্ঠাতা ইলোন মাস্কের নিট সম্পদের পরিমাণ ১৯ হাজার ৪৮০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে, যা অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের চেয়ে ৯৫০ কোটি ডলার বেশি। খবর ব্লুমবার্গ এএফপি।

চলমান করোনা মহামারীর মধ্যেও তড়তড় করে বেড়েছে টেসলার বাণিজ্য। গত বুধবার প্রথমবারের মতো টেসলা কোম্পানির বাজার মূলধন ৭০ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়। এই গাড়ি কোম্পানির সম্পদ এখন টয়োটা, ফক্সওয়াগন, হুন্দাই, জিএম ফোর্ডের সম্মিলিত সম্পদকেও ছাড়িয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার টেসলার বাজারমূল্য দাঁড়ায় ৭৭ হাজার ৩৫০ কোটি ডলার, যা ফেসবুকের চেয়েও বেশি।

গত বছর প্রায় অর্ধমিলিয়ন বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাণ করেছে টেসলা। বিশ্বের অন্যান্য শীর্ষ গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি নিজস্ব লক্ষ্যমাত্রায় গাড়ি নির্মাণ করতে না পারলেও নিজেদের নির্ধারিত লাখ ইভি নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় স্পর্শ করতে পেরেছে টেসলা।

বৃহস্পতিবার বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে দশমিক শতাংশ। এতে ফুলে-ফেঁপে উঠে মাস্কের সম্পদও, কারণ টেসলার সবচেয়ে বড় শেয়ারহোল্ডার তিনি। শেয়ারবাজারের বরাতে জানা গেছে, টেসলার ২১ শতাংশ শেয়ারের মালিক মাস্ক।

করোনাকালে জেফ বেজোসের সম্পদের পরিমাণও বেড়েছে। তবে তিনি তার কোম্পানি অ্যামাজনের শতাংশ সম্পদ তার সাবেক স্ত্রী ম্যাকেঞ্জি স্কটকে লিখে দেন। আর এতেই ইলোন মাস্কের সম্পদের পরিমাণ বেজোসের সম্পদের পরিমাণকে ছাড়িয়ে যায়।

সিএনবিসির রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২০ সালে বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি টেসলার মালিক মাস্কের সম্পত্তির পরিমাণ ছিল হাজার ৭০০ কোটি ডলার। কিন্তু টেসলার শেয়ারের দাম ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় এক ধাক্কায় তার সম্পত্তির পরিমাণ অনেকখানি বেড়ে যায়। সেই জোয়ারেই তিনি পেছনে ফেলেন অ্যামাজনের সিইও জেফ বেজোসকে। ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার সূচকে তিনি এখন অ্যামাজন মালিক জেফ বেজোসকে পেছনে দিয়েছেন। ৫০০ বিলিয়নেয়ারের তালিকায় ২০১৭ সাল থেকেই শীর্ষে ছিলেন বেজোস। তবে এই পরিবর্তনের পেছনে জেফ বেজোসের বিবাহ বিচ্ছেদও একটি অন্যতম কারণ। বেজোসের বিচ্ছেদ না হলে তিনি এখনো বিশ্বের সবচেয়ে ধনীতম ব্যক্তি থাকতেন। বিবাহ বিচ্ছেদের পরে বেজোস সম্পত্তির একটি বড় অংশ তার স্ত্রীকে দিতে হয়েছে। এর বাইরে তিনি প্রচুর অনুদানও দিয়েছিলেন। গত বছরের নভেম্বরে তিনি ৬৮ কোটি ডলার মূল্যের শেয়ার দান করেন।

গত এক বছরে হু-হু করে বেড়েছে মাস্কের সম্পত্তির পরিমাণ। সিএনবিসির রিপোর্ট বলছে, এত দ্রুত সম্পদ বৃদ্ধির নজির ইতিহাসে আর নেই। বিশ্বের শীর্ষ ধনীর তকমা পাওয়ার পর হেসে-খেলে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন মাস্ক। প্রথমে লেখেন, কী অদ্ভূত একটি বিষয়! পরবর্তী এক টুইটে আবার বলেন, এখন কাজে ফেরার সময়। ২০২০ সাল বিশ্ববাসীর কাছেই এক ভয়ংকর স্মৃতি হলেও মাস্কের কাছে ছিল দুর্দান্ত। হাজার ৭০০ কোটি ডলার নিয়ে শুরু হওয়া বছরটিতে মাস্কের সম্পদ এক বছরে ১৫ হাজার কোটি ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে। সম্পদ বৃদ্ধির ইতিহাসে যা বিরল।

দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্মগ্রহণ করা মাস্কের কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব রয়েছে। ২৫ বছর বয়সে জিপ২ নামে অনলাইন অ্যাডভারটাইজিং প্লাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯৯ সালে কমপ্যাক কম্পিউটারের কাছে ওই প্লাটফর্ম বিক্রি করে ৩০ বছর বয়সের মধ্যে মিলিয়নেয়ার হয়ে যান। তারপর এক্সকম নামে একটি অনলাইন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন তিনি, যা পরবর্তী সময়ে পেপালের সঙ্গে একীভূত হয়ে যায়। ২০০২ সালে -বের কাছে ১৫০ কোটি ডলারে বিক্রি করে দেন ওই প্লাটফর্ম।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন