তাপভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র

বায়ুদূষণে চট্টগ্রাম অঞ্চলে ৩০ হাজার মানুষের প্রাণহানির শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক

কয়লভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের কারণে চট্টগ্রাম অঞ্চলে বায়ুদূষণ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে। বায়ু দূষণের ফলে ওই অঞ্চলে দীর্ঘমেয়াদে মানুষের স্বাস্থের ওপর প্রভাব পড়বে। এর ফলে অন্তত ৩০ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটার আশঙ্কা করছেন গবেষকরা। একইসঙ্গে ওই অঞ্চলের জীববৈচিত্র, কর্মসংস্থান এবং পর্যটন স্থাপনাগুলো হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে মত তাদের।

আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) আয়োজিত এক অনলাইন সেমিনারে প্রকাশিত এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। ‘সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার’ (সিআরইএ) এক গবেষণা প্রকাশ করে।

কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের কারণে চট্টগ্রাম অঞ্চলে পরিবেশের উপর কী ধরনের  বিপর্যয় নেমে আসতে পারে তা এ গবেষণায় উঠে এসেছে। ফিনল্যান্ডের গবেষক লরি মিলিভারটা গবেষণাটি পরিচালনা করেন।

সেমিনারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েল অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, কোলভিত্তিক পাওয়ার প্ল্যান্টের মহেশখালী দ্বীপের বাসিন্দারা বেশিরভাগই বাস্তুহারা হবে। ২৬ টি বড় প্রকল্প সরকার এর মধ্যে ১৭টি প্রকল্প সারসংক্ষেপ প্রকাশ করেছে। 

মহেশখালীর কোহেলিয়া নদী ভরাট হয়ে গেছে, ভূমি অধিগ্রহণের ফলে লাল কাঁকড়া বিলুপ্ত হয়ে গেছে, ডলফিন অভায়ণ্য হারাচ্ছে। 

তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হলে চার প্রজাতির কচ্ছপ প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পাবে। মহেশখালী ও সোনাদিয়া দ্বীপে বিপন্ন চার প্রজাতি বিলুপ্ত হবে। ওই দ্বীপের বাসিন্দাদের ৫৫ শতাংশ লবন চাষী, ১৫ শতাংশ পান চাষী এর বাইরে মৎস্যজীবীরাও তাদের জীবিকা হারাবে।

পরিবেশ আন্দোলন বাপার কক্সবাজার জেলার সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ শুরু হওয়ার পর থেকে আমরা ১৭টি আন্দোলন করেছি। কক্সবাজার যে সৌন্দর্যের রাণী ছিল সেটা এখন ধ্বংসের পথে। এখানকার বনাঞ্চল কেটে শেষ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারণে মহেশখালী ও মাতারবাড়ি, কক্সবাজার এলাকায় মানুষ থাকতে পারবে না। প্রচন্ড গরমে এখানকার মানুষ প্রাণহানি হবে। কক্সবাজার আগামী ৫ বছর পর আর কোনো মিষ্টি পানি পাওয়া যাবে না।

সেমিনারে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তত্ত্বাবধায় সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসেসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ডা. রশিদ ই মাহবুব, মো. খালেকুজ্জামান প্রমুখ।

সেমিনারটি সঞ্চালনায় ছিলেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) যুগ্ন সম্পাদক শরিফ জামিল।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন