অর্থবছরের প্রথম ১১ মাস

৬৭৯ কোটি ডলারের কম পণ্য রফতানি করেছে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

মে মাসে বিশ্ববাজারে সব মিলিয়ে ১৪৬ কোটি ৫৩ লাখ ডলারের পণ্য রফতানি করেছে বাংলাদেশ। গত বছরের একই সময়ে রফতানির পরিমাণ ছিল ৩৮১ কোটি ৩৩ লাখ ৭০ হাজার ডলার। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে বিশ্ববাজারে হাজার ৯৫ কোটি ৯১ লাখ ৪০ হাজার ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬৭৯ কোটি ডলার কম। রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত তথ্যে রফতানির চিত্র উঠে এসেছে।

চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস থেকে রফতানি প্রবৃদ্ধির যে নেতিবাচক ধারা শুরু হয়, কভিড-১৯-এর প্রাদুর্ভাবের আগে ফেব্রুয়ারিতেও যা অব্যাহত ছিল। নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে মার্চে নেতিবাচক ধারার মাত্রা আরো বেড়ে যায়। ইপিবির পরিসংখ্যান বলছে, মার্চে বাংলাদেশের সব পণ্যের রফতানি কমেছে ১৮ দশমিক ২৯ শতাংশ। আর এপ্রিলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ। রফতানি কমে যায় ৮২ দশমিক ৮৫ শতাংশ। মে মাসে কমার গতি কিছুটা কমেছে। ২০১৯ সালের মে মাসের তুলনায় চলতি বছরের মে মাসে রফতানি কমেছে ৬১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যের ভিত্তিতে হালনাগাদ রফতানি পরিসংখ্যান গণমাধ্যমে প্রকাশ করে ইপিবি। তবে বর্তমানে সাধারণ ছুটি চলমান থাকায় সংস্থাটি প্রভিশনাল উল্লেখ করে শুধু ওয়েবসাইটে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

একক মাসের বিস্তারিত পরিসংখ্যান প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করে না ইপিবি। সমন্বিত পরিসংখ্যান প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত ১১ মাসে বিশ্ববাজারে হাজার ৯৫ কোটি ৯১ লাখ ৪০ হাজার ডলারের পণ্য রফতানি করেছে বাংলাদেশ। যেখানে গত অর্থবছরের একই সময়ে রফতানি হয়েছিল হাজার ৭৭৫ কোটি লাখ ডলারের পণ্য। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে ৬৭৯ কোটি ১৪ লাখ ৬০ হাজার ডলারের রফতানি কম হয়েছে। অর্থাৎ ১১ মাসের হিসাবে রফতানি কমেছে ১৭ দশমিক ৯৯ শতাংশ।

রফতানি খাতের শীর্ষ তিন পণ্য হলো পোশাক, চামড়া চামড়াজাত এবং পাট পাটজাত পণ্য। অর্থবছরের ১১ মাসের পরিসংখ্যান বলছে, পাট পাটজাত পণ্যের রফতানি বাড়লেও কমেছে পোশাক এবং চামড়া চামড়াজাত পণ্যের রফতানি। তবে দেশের মোট রফতানির ৮৪ শতাংশ অবদান রাখা পণ্য পোশাকের রফতানি কমার প্রভাব পড়েছে সামগ্রিক রফতানিতে। করোনার প্রাদুর্ভাবে একের পর এক কার্যাদেশ বাতিল ক্রেতা দেশগুলোর লকডাউন পরিস্থিতিতে রফতানি আরো কমেছে। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এপ্রিলের রফতানিতে প্রাদুর্ভাবের প্রভাব বেশি হওয়াটাই স্বাভাবিক। কারণ মার্চের ২৬ তারিখ পর্যন্ত বাংলাদেশের রফতানি কার্যক্রম কম-বেশি সচল ছিল কিন্তু এপ্রিলের সারা মাসই বন্ধ ছিল কারখানা।

ইপিবির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের ১১ মাস শেষে পাট পাটজাত পণ্যের রফতানি বেড়েছে দশমিক ৭৪ শতাংশ। চামড়াজাত পণ্যের রফতানি কমেছে ২১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আর রফতানি খাতের প্রধান পণ্য তৈরি পোশাক রফতানি ১১ মাসে কমেছে ১৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ।

ইপিবির তথ্য বলছে, পোশাক চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে রফতানি হয়েছে হাজার ৫৭০ কোটি ৮৯ লাখ ২০ হাজার ডলারের। গত অর্থবছরের একই সময়ে রফতানি হয় হাজার ১৭৩ কোটি ৩৮ লাখ ৯০ হাজার ডলারের পোশাক।

মাসভিত্তিক রফতানি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছরের আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত রফতানি প্রবৃদ্ধির নেতিবাচক ধারা অব্যাহত ছিল। সময় যথাক্রমে রফতানি প্রবৃদ্ধি ছিল ঋণাত্মক ১১ দশমিক ৪৯, দশমিক , ১৭ দশমিক ১৯ ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ। ডিসেম্বরে রফতানি প্রবৃদ্ধি কিছুটা ইতিবাচক ধারায় ফিরে হয়েছে দশমিক ৮৯ শতাংশ। জানুয়ারিতে আবারো নেতিবাচক ধারায় ফিরে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ঋণাত্মক দশমিক শতাংশ। ফেব্রুয়ারিতে আবারো নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে, যার হার ঋণাত্মক দশমিক শতাংশ। মার্চে মোট রফতানি কমেছে ১৮ দশমিক ২৯ শতাংশ। এপ্রিলে কমেছে ৮২ দশমিক ৮৫ শতাংশ। তবে সর্বশেষ মে মাসে কমেছে ৬১ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন