রাজধানী
ঢাকায় বিনোদনকেন্দ্রের অভাব অনুভূত হয় সারা বছর। এই সংকট সবচেয়ে বেশী দৃষ্টিগোচর হয়
বিভিন্ন উৎসব ও ছুটির দিনগুলোতে। এসব দিনে
ঢাকার দর্শনীয় স্থান, খোলা প্রাঙ্গণে নাগরিকদের ভিড় চোখে পড়ার মতো। এর মধ্যে রয়েছে
লালবাগ কেল্লা, রমনা পার্ক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সংসদ ভবন এলাকা ইত্যাদি।
এবারের
ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে ঢাকা ফাঁকা হয়ে গেলেও বেড়ানোর মতো জায়গা খুঁজে পাচ্ছেন না রাজধানীবাসী।
ফলে তাদের চিরচেনা এসব জায়গায় ভিড় করতে হচ্ছে। এ নিয়ে কিছুটা বিরক্তি প্রকাশ করেছেন
দর্শনার্থীরা।
শনিবার
ঈদুল ফিতরের তৃতীয় দিনে রাজধানীর বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে ঘুরে দর্শনার্থীদের সঙ্গে
কথা বলে এমনটাই জানা গেছে। এদিনও পরিবার পরিজন নিয়ে অনেকেই ঘুরতে এসেছেন চন্দ্রিমা
উদ্দান, নভোথিয়েটার, রমনা পার্ক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ অন্যান্য বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে।
রাজধানীর
টিএসসি এলাকায় ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা জানান, ছুটি কিংবা উৎসবে বিনোদনকেন্দ্রের অভাব
দারুণভাবে অনুভূত হয়। ঘুরতে যাওয়ার জায়গা খুঁজে না পেয়ে অধিকাংশ সময় পরিবারের সাথে
বাসায় অবস্থান করেন। বাইরে ঘুরতে আসলেও মানুষের ভিড়ের কারণে প্রশান্তি অনুভব করেন না।
এছাড়া প্রতিবছর বিনোদনকেন্দ্রগুলোয় এসে একই জিনিস দেখতে হচ্ছে, কোনো নতুনত্ব নেই। আবার
ভিড়ও বাড়ছে। একদিকে ভিড় আবার অতিরিক্ত গরমে শিশুরাও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় কথা হয় ব্যাংকার মো. জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে। সন্তানের
আবদারে মিরপুর থেকে ঘুরতে গিয়েছিলেন লালবাগ কেল্লায়। কিন্তু লালবাগ কেল্লা বন্ধ পেয়ে
ফিরে আসতে হয় তাদের। তিনি বলেন, ইন্টারনেটে খুঁজে দেখলাম শনিবার লালবাগ কেল্লা খোলা
থাকে। কিন্তু লালবাগ কেল্লার গেটে গিয়ে দেখলাম, কেল্লা বন্ধ। পরে আমরা টিএসসি চলে আসি।
বাচ্চাদের নিয়ে ভালোভাবে ঘুরতে যাওয়ার জন্য পারফেক্ট জায়গা আমরা খুঁজে পাই না। পরিবেশসম্মতভাবে
ঘুরতে যাওয়ার জন্য যেহেতু জায়গা পাই না, সেজন্য আমরা বাধ্য হয়েই ঘরেই থাকি বা আশেপাশে
রেস্টুরেন্টেই যাই।
ঘুরতে
আসা জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগের
প্রভাষক মো. মাহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের উঁচু উঁচু বিল্ডিং আছে, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
আছে, মেট্রোরেল কিন্তু নগরে প্রিয়জনদের নিয়ে ঘুরতে বের হয়ে যে সবুজ, শীতল পরিবেশ চাই
তা আর আগের মতো পাই না। কাওরান বাজার পার্কে আগে গাছপালা ছিল, এখন নেই। বিকালে প্রাতঃভ্রমণ, সকালে ব্যায়ামের জায়গা নেই।
তিনি
বলেন, সত্যিকারার্থে আরো ঢেলে সাজিয়ে পরিকল্পনা নিতে হবে। পরিকল্পনা নেয়ার ক্ষেত্রে
পরিবেশ, মানুষের বাহ্যিক প্রয়োজন বাস্তবায়নে গুরুত্ব দিতে হবে। নগরের সম্প্রসারণে পার্ক,
ওয়াকওয়ে, পাথওয়ের বাস্তবায়ন করতে হবে।