দক্ষিণ চট্টগ্রামের উন্নয়নে লাখ কোটি টাকার প্রকল্প সুফল পাবে কি

সুজিত সাহা, চট্টগ্রাম ব্যুরো

গোটা দক্ষিণ চট্টগ্রাম অঞ্চলকে (কক্সবাজারসহ) বিদ্যুৎ-জ্বালানি এবং লজিস্টিক হাবের পাশাপাশি সমুদ্র তীরবর্তী শিল্পাঞ্চল হিসেবে গড়ে তুলতে চাইছে সরকার। হাতে নেয়া হয়েছে একাধিক মেগা প্রকল্প। পরিকল্পনায় রয়েছে আরো কয়েকটি। নির্মাণ হচ্ছে গভীর সমুদ্রবন্দর, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, এলএনজি টার্মিনালসহ একাধিক অর্থনৈতিক অঞ্চল। যদিও এসব এলাকায় সহায়ক অবকাঠামোসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পর্যাপ্ত মাত্রায় নিশ্চিত করা যায়নি।

প্রস্তুতিমূলক এক সমীক্ষার ভিত্তিতে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) এক পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, যথাযথ মাত্রায় নগর উন্নয়ন অবকাঠামো সুবিধা বাড়ানো না গেলে প্রকল্পগুলো থেকে কাক্ষিত সুফল পাওয়া যাবে না। উল্টো কয়েক লাখ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রকল্পগুলো নিয়ে নতুন করে সংকট দেখা দিতে পারে। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলগুলোর বিভিন্ন উপজেলা, পৌরসভার বর্তমান সক্ষমতা, উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় নাগরিক সুবিধার পর্যাপ্ততা বিশ্লেষণের ভিত্তিতে সমীক্ষাটি চালানো হয়।

চট্টগ্রামের ১২টি শিল্পাঞ্চলের মধ্যে সরকারি অর্থায়নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর, বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল বেসরকারি উদ্যোগে কর্ণফুলী ড্রাইডক স্পেশাল ইকোনমিক জোন স্থাপন কাজ চলমান রয়েছে। সিইপিজেড, কর্ণফুলী ইপিজেড কোরিয়ান ইপিজেডের কার্যক্রমও এগিয়ে চলেছে। পরিকল্পনায় আছে আনোয়ারা ইকোনমিক জোন, আনোয়ারা- ইকোনমিক জোন, পটিয়া, সীতাকুণ্ড, সন্দ্বীপ কাজী ফার্মস ইকোনমিক জোন নির্মাণের। অপরদিকে কক্সবাজারের সাবরাং নাফ ট্যুরিজম পার্ক, মহেশখালীতে কক্সবাজার স্পেশাল ইকোনমিক জোন, মহেশখালী ইকোনমিক জোন- (ধলঘাটা) মহেশখালী স্পেশাল ইকোনমিক জোনের (ঘাঁটিভাঙা) নির্মাণকাজও চলমান। এছাড়া মহেশখালী স্পেশাল ইকোনমিক জোন (ঘাঁটিভাঙা-সোনাদিয়া), মহেশখালী ইকোনমিক জোন (কালারমারছড়া), মহেশখালী ইকোনমিক জোন-, মহেশখালী ইকোনমিক জোন--এর (কালারমারছড়া) নির্মাণ পরিকল্পনাধীন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দক্ষিণ চট্টগ্রামে (কক্সবাজারসহ) অর্থনৈতিক অঞ্চল, গভীর সমুদ্রবন্দর, একাধিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হলে সেখানে বিপুলসংখ্যক শ্রমিক-কর্মচারীর প্রয়োজন পড়বে। এছাড়া প্রয়োজন পড়বে উন্নত সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্কেরও। কিন্তু এখনো বিষয়গুলো নিয়ে সেভাবে প্রস্তুত নয় স্থানীয় প্রশাসন। ফলে মেগা প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন শেষে কার্যক্রম শুরু হলে বড় ধরনের সংকটে পড়তে হবে প্রকল্প পরিচালনাকারী সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোকে। সামাজিক নাগরিক সেবা উন্নয়ন না হলে বড় বিনিয়োগগুলো সুফলদায়ী প্রকল্পের পরিবর্তে বোঝা হয়ে দাঁড়াবে বলে আশঙ্কা করছেন জাইকাসহ দেশী-বিদেশী উন্নয়ন পর্যবেক্ষকরা।

লজিস্টিক হাব হিসেবে দক্ষিণ চট্টগ্রামকে রূপান্তর পরিকল্পনার মূল অনুষঙ্গ হলো মাতারবাড়ীতে প্রস্তাবিত গভীর সমুদ্রবন্দর। চট্টগ্রাম বন্দরের আধুনিকায়ন ছাড়াও বে-টার্মিনাল নির্মাণকাজও শুরু করতে যাচ্ছে সরকার। কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ ট্রান্স এশিয়ান হাইওয়ের মাধ্যমে দক্ষিণ চট্টগ্রামের শিল্পাঞ্চল যুক্ত হবে সড়ক রেলপথভিত্তিক আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে। বিদ্যমান দোহাজারী পর্যন্ত রেলপথকে কক্সবাজারের সঙ্গে যুক্ত করার কাজ এরই মধ্যে শেষ পর্যায়ে। যদিও মিয়ানমারের সঙ্গে কূটনৈতিক বৈরিতায় অনিশ্চয়তার মুখে ঘুনদুম পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের কাজ। ২০২৫ সালের দিকে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণকাজ শুরুর বিষয়ে জাইকার সঙ্গে এরই মধ্যে চুক্তি হয়েছে। তবে বে-টার্মিনাল নির্মাণসহ চট্টগ্রাম বন্দরের ক্রমবর্ধমান চাহিদার বিপরীতে সক্ষমতা বৃদ্ধির কাজ এগোচ্ছে অত্যন্ত ধীরগতিতে। এতে পরিকল্পনার সুফল কতটুকু সুদূরপ্রসারী হবে সেটি নিয়েও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।

পাওয়ার অ্যান্ড লজিস্টিক হাব হিসেবে দক্ষিণ চট্টগ্রামকে গড়ে তোলার পরিকল্পনা এখন অনেকটাই বাস্তব রূপ নিয়েছে। সর্বশেষ ১৪ জানুয়ারি বাঁশখালী উপজেলায় নির্মিত হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন এসএস পাওয়ার প্লান্ট যুক্ত হয় জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে সংযুক্ত হয়। আগামী এপ্রিল থেকে এটি বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাবে। মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণকাজও চলমান। অঞ্চল থেকে জাতীয় গ্রিডে কয়েক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেবল সঞ্চালনে একটি ছাড়া আর কোনো প্রকল্পের কাজ শুরু করতে পারেনি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন-পুরনো সঞ্চালন লাইন নির্মাণ-সংস্কার এবং সাব স্টেশন স্থাপনে আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা ২০২৪ সালে। প্রকল্পটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করা যাবে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত নয় খোদ বিপিডিবি কর্তৃপক্ষও।

জানতে চাইলে বিপিডিবি চট্টগ্রাম দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম বণিক বার্তাকে বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার অঞ্চলের বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়নে বিপিডিবি বেশ কয়েকটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। বর্তমানে চট্টগ্রামসহ কক্সবাজার পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিতরণে সঞ্চালন লাইনের উন্নয়নে আড়াই হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্পের কাজ শুরুর দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। বিদ্যমান লাইন দিয়ে শিল্প-কারখানার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ দেয়া সম্ভব হলেও দীর্ঘমেয়াদে ভারী শিল্প-কারখানার প্রয়োজনে নতুন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

মহেশখালীতে ২০১৮ সালে নির্মিত ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল দিয়ে বর্তমানে দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়। দক্ষিণ চট্টগ্রামে নির্মীয়মাণ বেশ কয়েকটি গ্যাসনির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্যও টার্মিনাল দিয়ে গ্যাস সরবরাহ করা হবে। তবে টার্মিনাল স্থাপনের পরও যদি পাইপলাইন নির্মাণের মাধ্যমে সরবরাহ ব্যবস্থা স্থাপন করতে বেশি সময় লেগে যায়, তবে তা পরিকল্পনা সফল বাস্তবায়নের পথে বাধা হবে দাঁড়ানোর আশঙ্কা করা হচ্ছে।

দক্ষিণ চট্টগ্রামের শিল্পায়নের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হিসেবে এখন বিনিয়োগকে চিহ্নিত করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের ভাষ্যমতে, এখানে এখন প্রায় সব বিনিয়োগই হচ্ছে বিদেশী ঋণ সহায়তায়। বড় বড় অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণের পর প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত সুবিধা দেয়া না গেলে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগও মুখ থুবড়ে পড়বে। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ উত্তর চট্টগ্রামের মিরসরাই শিল্প জোন নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর। অঞ্চলে নানামুখী ভারী শিল্প থাকলেও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা অত্যন্ত পুরনো অপর্যাপ্ত। সরকারিভাবে এখনো পানি সুবিধা না পেয়ে শিল্পোদ্যোক্তারা ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করছেন। আবার বিদ্যুৎ গ্যাস সরবরাহের অনিশ্চয়তায় অনেক দেশী শিল্প-কারখানা উৎপাদন বন্ধ রাখার মতো অবস্থায় পৌঁছেছে। নিজস্ব গ্যাসের মজুদ কমে আসায় এলএনজি আমদানির মাধ্যমে শিল্প খাতকে টিকিয়ে রাখার প্রক্রিয়া শুরু হলেও চাহিদা অনুযায়ী এখনো সরবরাহ নিশ্চিত হয়নি। ফলে বিদ্যমান শিল্প খাত বড় ধরনের সংকট পার করছে। এক্ষেত্রে দক্ষিণ চট্টগ্রামের শিল্পায়ন নিয়ে সরকারিভাবে পৃথক কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানা গেছে। একইভাবে নির্মাণ পরিকল্পনায় থাকা ১২টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য পানি সরবরাহ ব্যবস্থার জন্য এখনো কোনো প্রকল্প কিংবা -সংক্রান্ত কোনো অথরিটি স্থাপনের কাজও শুরু করতে পারেনি সরকার।

বিষয়ে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. ফজলুল্লাহ বণিক বার্তাকে বলেন, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড মিরসরাই অঞ্চলের শিল্প এলাকায় পানির সংকট তীব্র। এজন্য আমরা একটি প্রকল্পও হাতে নিয়েছি। চট্টগ্রাম শহর কিংবা অঞ্চলের জন্য পানির দৈনিক চাহিদা কোটি লিটার হলেও চট্টগ্রাম ওয়াসার বিদ্যমান চলমান প্রকল্পগুলো থেকে দৈনিক কোটি লিটার পানি সরবরাহ সম্ভব হবে। সক্ষমতা দিয়ে আরো অন্তত ১০ বছর চাহিদা অনুপাতে পানির সরবরাহের নিশ্চয়তা দেয়া যাবে। তবে দক্ষিণ চট্টগ্রামের শিল্পাঞ্চলের জন্য নতুন নতুন পানির সংস্থান করতে হবে। সেক্ষেত্রে চট্টগ্রাম ওয়াসার পাশাপাশি অন্য কোনো সংস্থা গঠন জরুরি বলে তিনি মনে করেন।

চট্টগ্রামের ভাটিয়ারী থেকে মিরসরাই পর্যন্ত সমুদ্র তীরবর্তী শিল্প জোন দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছে। তবে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠায় শিল্প জোনটির সুবিধাগুলোকে পর্যাপ্ত মাত্রায় কাজে লাগানো যায়নি। এজন্য ওয়াটার ফ্রন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ হাব হিসেবে পতেঙ্গা থেকে শুরু করে কক্সবাজারের টেকনাফ পর্যন্ত সমুদ্রকেন্দ্রিক অঞ্চলকে ব্যবহার করে শিল্পায়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের মাধ্যমে কাঁচামাল সরবরাহ এবং উৎপাদিত পণ্যের দ্রুত, সাশ্রয়ী নিরাপদে পৌঁছানোর বিষয়টি সবচেয়ে বেশি বিবেচনায় নিয়েছে সরকার। কিন্তু সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলের সুবিধাকে কাজে লাগানোর জন্য যেসব পরিকল্পনা হাতে নেয়া দরকার, সেগুলোর বাস্তবায়নে এখনো দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন হয়নি। এক দশকেরও বেশি সময় আগে পরিকল্পনা করা হলেও চট্টগ্রাম বে-টার্মিনাল নির্মাণকাজ শুরুই করতে পারেনি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। কক্সবাজারের নাফ নদীর নাব্যতা সংকট মিয়ানমারের সঙ্গে বৈরী সম্পর্ক অঞ্চলের শিল্পায়নের পথে অস্বস্তি তৈরি করেছে। অপরদিকে কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীবন্দর নির্মাণের প্রজ্ঞাপন জারি হলেও সেটি বাস্তবায়ন করতে পারেনি বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ। ফলে টেকনাফ, মহেশখালী, মাতারবাড়ী, বাঁশখালীসহ বিভিন্ন এলাকায় নির্মিতব্য শিল্প জোনের কারখানাগুলোর পণ্য পরিবহনে অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে।

দেশের ব্যাংক আর্থিক খাতে তীব্র তারল্য সংকট, ডলারের সংকট বিনিময় হারের ঊর্ধ্বমুখিতা এখন বিনিয়োগের পথে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ব্যাংকগুলো মূলধনি যন্ত্রপাতি, অবকাঠামো নির্মাণ উপকরণের কাঁচামাল এমনকি অতি নিত্যপণ্য আমদানির জন্যও ঋণপত্র (এলসি) খুলতে পারছে না। মৌসুমভিত্তিক চাহিদাকে বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক পণ্য আমদানিতে এলসি সহজীকরণে নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছে কিছুদিন পরপর।

ধরনের সংকট দীর্ঘমেয়াদে থাকলে বিদেশী বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে উল্লেখ করে ব্যবসায়ীরা বলছেন, উদ্যোক্তারা এখন শুধু টিকে থাকার প্রয়োজনে বিনিয়োগ করে যাচ্ছেন। চলমান সংকটের সমাধানের পাশাপাশি আর্থসামাজিক বাধাগুলো দূর করতে না পারলে দক্ষিণ চট্টগ্রামকে ঘিরে সরকারের পরিকল্পনা থেকে যথাযথ সুফল পাওয়া যাবে না বলে মনে করছেন তারা।

বিষয়ে জানতে চাইলে চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মাহবুবুল আলম বণিক বার্তাকে বলেন, বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ থেকে শিল্পোন্নত দেশের তালিকায় নিয়ে যেতে দক্ষিণ চট্টগ্রামে সরকারের বৃহৎ বিনিয়োগ পরিকল্পনা যথার্থ। তবে অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, শিল্পায়ন শিল্পের জন্য অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সংযোগ থাকে না। এজন্য সব সংস্থার সমন্বয়ে যৌথ মেগা পরিকল্পনা এর বাস্তবায়ন না হলে দক্ষিণ চট্টগ্রামকে ঘিরে সরকারের কয়েক লাখ কোটি টাকার বিনিয়োগ লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রিটার্ন আনবে না। এজন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে সুষম বিনিয়োগ অবকাঠামোগত প্রকল্পের সমন্বয় জরুরি।

প্রক্ষেপণ রয়েছে, শুধু কক্সবাজারে ২০২৬ সাল নাগাদ জনসংখ্যা বাড়বে ৪০ হাজার। ২০৪১ সালে তা দাঁড়াবে লাখ ১০ হাজারে। এছাড়া বাড়তি সংকটের কারণ হয়ে উঠেছে মিয়ানমার থেকে আসা লাখ রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু। উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে কক্সবাজারের বর্ধিত জনসংখ্যার সঙ্গে আরো কয়েক লাখ শ্রমিক-কর্মচারী যুক্ত হবে, যা বর্তমান অবকাঠামো নাগরিক সুবিধার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে না। এজন্য সড়ক সেতু নির্মাণ, ড্রেনেজ অবকাঠামো সংস্কার নির্মাণ, পানি সরবরাহ ব্যবস্থা স্থাপন, আধুনিক বর্জ্য পয়োবর্জ্য ব্যবস্থাপনা ছাড়াও অন্যান্য নাগরিক সুবিধা বাড়াতে হবে।

বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন বণিক বার্তাকে বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোয় পরিকল্পিতভাবে শিল্পায়নের জন্য অবকাঠামো নির্মাণকাজ করা হচ্ছে। সড়ক যোগাযোগ ছাড়াও নানামুখী অবকাঠামো নির্মাণে এরই মধ্যে বেশকিছু প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ধীরে হলেও প্রতিটি অর্থনৈতিক অঞ্চলকে ঘিরে সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ, আবাসন, চিকিৎসা, শিক্ষা ছাড়াও সামাজিক উন্নয়নের প্রকল্প বাস্তবায়নে বেজা কাজ করছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন