টিআইবির আলোচনা সভায় বক্তারা

আইনি কাঠামো ডাটা সাংবাদিকতার বড় চ্যালেঞ্জ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডাটা সাংবাদিকতার মধ্য দিয়ে বিশ্বজুড়ে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার বাঁকবদল ঘটলেও বাংলাদেশের আইনি কাঠামো এক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ। কেননা সরকারের বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান ডাটা উন্মুক্ত করতে উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনার অপেক্ষায় থাকে। রাজনৈতিক সংবেদনশীলতার কারণে মূল্যস্ফীতির মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও আটকে দেয়া হচ্ছে। সরকার নীতি প্রণয়ন করলেও ডাটার প্রকাশ, সহজপ্রাপ্যতা ব্যবহার বাড়াতে পারেনি। গতকাল রাজধানীর ধানমন্ডিতে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) কার্যালয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধে ডেটা সাংবাদিকতা: পরিপ্রেক্ষিত বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা কথা বলেন। আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে টিআইবি। একই সঙ্গে ২০২২ সালের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার স্বীকৃতি হিসেবে বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়।

সময় টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাকস্বাধীনতা তথ্য প্রকাশ নিয়ে ভয়ের পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। দুর্নীতি প্রতিরোধে রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন, তবে তা শুধু কাগজ-কলমে থাকলে হবে না। যারা দুর্নীতিবাজ হিসেবে চিহ্নিত, তাদের বিচার জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। যেসব প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি প্রতিরোধের দায়িত্বে, তাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে হবে।

সভায় দুর্নীতি প্রতিরোধে ডেটা সাংবাদিকতা: পরিপ্রেক্ষিত বাংলাদেশ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের সমন্বয়ক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।

প্রবন্ধে বলা হয়, ক্ষমতাশালীদের অবৈধ সম্পদ অর্জন, কর ফাঁকি পাচার, জটিল নেটওয়ার্ক উন্মোচনে ডাটা সাংবাদিকতা নতুন পথ দেখিয়েছে। তবে দেশের বেশির ভাগ সাংবাদিকেরই ডাটা সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে সক্ষমতা গড়ে ওঠেনি।

ডাটা উন্মুক্ত করতে সরকার কতটা অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে, কী ধরনের আইনি কাঠামো পরিবেশ ব্যবহার করছে, তা পরিমাপে গ্লোবাল ডাটা ব্যারোমিটারের সূচক জনপ্রিয়। চলতি বছরের ডাটা ব্যারোমিটার প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ ১০০ নম্বরের মধ্যে ২৩ দশমিক পেয়েছে, যা দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গড় স্কোর ৩২ দশমিক ৭৯ থেকে বেশ কম।

সভায় আরো বক্তব্য রাখেন গ্লোবাল ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম নেটওয়ার্কের (জিআইজিএন) রোভিং এশিয়া এডিটর মিরাজ আহমেদ চৌধুরী, ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ, বৈশাখী টেলিভিশনের প্ল্যানিং কনসালট্যান্ট জুলফিকার আলী, টিআইবির এক্সিকিউটিভ ম্যানেজমেন্টের পরামর্শক সুমাইয়া খায়ের, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের নির্বাহী পরিচালক তালাত মামুন ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভের ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম হেল্প ডেস্কের প্রধান বদরুদ্দোজা বাবু। সভায় উপস্থিত ছিলেন টিআইবির পরিচালক শেখ মঞ্জুর--আলম।

মিরাজ আহমেদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে ডাটা সাংবাদিকতার ভালো সুযোগ রয়েছে। জবাবদিহি নিশ্চিতে ডাটা সাংবাদিকতা নতুন মাত্রা যোগ করবে। দুর্নীতি এখন বৈশ্বিক রূপ নিয়েছে, দেশের সাংবাদিকদের সেই অনুযায়ী সক্ষমতা বাড়াতে হবে।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন প্রিন্ট বিভাগে জাতীয় পর্যায়ে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, সাইবার অপরাধ-: ৯৭ ভাগ মামলাই টেকেনি, সাইবার অপরাধ-: মামলা সবচেয়ে বেশি ঢাকায়, পরে চট্টগ্রাম, সাইবার অপরাধ-: পরিকল্পিত সাইবার অপরাধ তুলনামূলক কম। শীর্ষক ধারাবাহিক প্রতিবেদনের জন্য পুরস্কার পান। আজ আঞ্চলিক পর্যায়ে টিআইবির পুরস্কার পান খুলনার দৈনিক পূর্বাঞ্চলের নিজস্ব প্রতিবেদক আবুল হাসান এবং টেলিভিশন মিডিয়ায় যমুনা টেলিভিশনের ইনভেস্টিগেশন দলের এডিটর অপূর্ব আলাউদ্দিন। প্রামাণ্য অনুষ্ঠান বিভাগে পুরস্কার পেয়েছে চ্যানেল ২৪-এর সার্চলাইট।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন