স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে
বের হওয়ার পর বাংলাদেশসহ অন্যান্য এলডিসিভুক্ত দেশ শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা পাচ্ছে, সেটা আরো
কয়েকবছর অব্যাহত রাখা প্রয়োজন বলেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। গতকাল রোববার
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ১২তম মন্ত্রী
পর্যায়ের সম্মেলনে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এসব বিষয় তুলে ধরেন তিনি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২৬ সালে
এলডিসি থেকে বাংলাদেশের বের হওয়ার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরপর বাংলাদেশ আর
শুল্কমুক্ত বাজারসুবিধা পাবে না। তাই এলডিসির পক্ষ থেকে ডব্লিউটিওতে দেয়া
শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধার প্রস্তাব বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
টিপু মুনশি বলেন, মত্স্যখাতে
ভর্তুকি প্রদানের সুযোগ চায় বাংলাদেশ। আমরা মনে করি, উন্নয়নশীল দেশের মত্স্যখাতের দক্ষতা
বৃদ্ধির জন্য এই খাতে ভর্তুকি দেয়াটা জরুরি। অনেক উন্নয়নশীল দেশের বিপুল সংখ্যক
গরীব মানুষ তাদের জীবিকার জন্য মত্স্য খাতে জড়িত। তাই স্বল্পোন্নত দেশের দরিদ্র
জনগোষ্ঠীর জীবিকা টিকিয়ে রাখার জন্য মত্স্যখাতে ভর্তুকি প্রদানের সুযোগ রাখার
প্রয়োজন রয়েছে।
তিনি আরো বলেছেন, বর্তমান
পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী খাদ্য ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। তাই মানুষের বেঁচে থাকার জন্য
বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রয়োজনীয় খাদ্য পণ্যের উপর হঠাত্ করে
রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা আরোপ ঠিক হবে না। রপ্তানি বন্ধ করতে হলে আমদানিকারক দেশকে
অব্যশই নির্দিষ্ট একটা সময়ের আগে তা জানাতে হবে। হঠাত্ করে খাদ্যজাত পণ্য রপ্তানি
বন্ধ করার কারণে অনেকে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, খাদ্য
নিরাপত্তার ঝুঁকি হ্রাসে এলডিসিভুক্ত দেশকে সরকারি পর্যায়ে বড় আকারে খাদ্য মজুদ
করার মতো সুযোগ রাখা প্রয়োজন। কৃষিসহ ডব্লিউটিও’র অন্যান্য যেকোনো সংস্কার বাংলাদেশ
সমর্থন করবে। সংস্কার অব্যশই অন্তর্ভুক্তিমূলক ও স্বচ্ছ হতে হবে, যেখানে সবার
মতামত দেয়ার সুযোগ থাকবে। প্রতিটি সদস্যের উদ্বেগকে গুরুত্ব দিতে হবে।
এমসি-১২ সম্মেলনের প্রথম দিনে ডব্লিউটিও’র মহাপরিচালক
এনগোজি ওকোনজো আইওয়ালা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে খাদ্য
সংকট বিশ্বের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এলডিসি উত্তোরণের পরবর্তীতে চলমান
বাণিজ্যিক সুবিধা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি হঠাত্ করে খাদ্যশস্য রপ্তানি বন্ধ না
করাসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে সদস্যদেশগুলোকে ঐক্যমতে আসার জন্য অনুরোধ
জানানো হয়েছে।
ডব্লিউটিও’র ১৬৪ দেশের
বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।