টানা দুদিনের উত্থান শেষে দর সংশোধন

আবারো ৭ হাজারের নিচে নামল সূচক

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি সপ্তাহের সোম মঙ্গলবার টানা দুদিন সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার পর গতকাল বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মুনাফা তুলে নেয়ার প্রবণতা দেখা গেছে। ফলে দুদিনের উত্থান শেষে গতকাল দর সংশোধন হয়েছে পুঁজিবাজারে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স কমেছে দশমিক শতাংশ। পাশাপাশি এক্সচেঞ্জটির দৈনিক লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল সূচক কমলেও দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত দুই সপ্তাহে সার্বিকভাবে ঊর্ধ্বমুখী অবস্থানে ছিল পুঁজিবাজার। এতে বেশকিছু কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা তুলে নিচ্ছেন। সাম্প্রতিক সময়ে শেয়ারের দর কয়েকদিন বাড়লেই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তা বিক্রি করে দেয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। আগের মতো তারা বেশি দিন শেয়ার ধরে রাখছেন না। মূলত পুঁজিবাজারের ঊর্ধ্বমুখিতা দীর্ঘস্থায়ী হবে কিনা সেটি নিয়ে শঙ্কা থাকার কারণেই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বল্প সময়ে যা মুনাফা আসে সেটি তুলে নিতে দেখা যাচ্ছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল লেনদেনের শুরুর পর ২০ মিনিট পর্যন্ত সূচক ঊর্ধ্বমুখী ছিল। এর পর থেকে শেয়ার বিক্রির চাপে পয়েন্ট হারাতে থাকে সূচক। শেষ পর্যন্ত গতকাল দিনশেষে ৫৩ পয়েন্ট কমে হাজার ৯৯৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে ডিএসইএক্স, যা এর আগের কার্যদিবসে ছিল হাজার ৪৯ পয়েন্টে। গতকাল সূচকের পতনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে বেক্সিমকো লিমিটেড, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ (এলএইচবিএল), বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি) স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার।

ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল দিনশেষে পয়েন্ট কমে হাজার ৪৯৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে, যা আগের দিন ছিল হাজার ৪৯৬ পয়েন্টে। ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ দিনের ব্যবধানে ২০ পয়েন্ট কমে গতকাল হাজার ৬০৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের দিন শেষে যা ছিল হাজার ৬২৭ পয়েন্টে।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে হাজার ৬৬৪ কোটি টাকা। এর আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল হাজার ৯৭৬ কোটি টাকা। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৮২টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ৮৮টির, কমেছে ২৪৩টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৫১টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।

খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ১২ দশমিক শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে বিবিধ এবং জ্বালানি বিদ্যুৎ খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দশমিক শতাংশ দখলে নিয়েছে প্রকৌশল খাত। শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে চামড়া খাত। চতুর্থ অবস্থানে থাকা ওষুধ রসায়ন খাতের দখলে ছিল লেনদেনের দশমিক শতাংশ। বস্ত্র খাতের দখলে ছিল মোট লেনদেনের দশমিক শতাংশ। গতকাল সিরামিক খাতে সবচেয়ে বেশি দশমিক শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। অন্যদিকে নেতিবাচক রিটার্নের শীর্ষে ছিল সেবা আবাসন খাত।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ সিকিউরিটিজ ছিল ফরচুন সুজ, বেক্সিমকো লিমিটেড, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি), পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি), আরএকে সিরামিক, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, রবি আজিয়াটা, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি (বিএসসিসিএল) বসুন্ধরা পেপার মিলস লিমিটেড।  

গতকাল ডিএসইতে দর বৃদ্ধির শীর্ষ সিকিউরিটিজ ছিল তাওফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম, আরএকে সিরামিক, রংপুর ফাউন্ড্রি, এএমসিএল (প্রাণ), রবি আজিয়াটা, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, মুন্নু এগ্রো অ্যান্ড জেনারেল মেশিনারি, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল), ফরচুন সুজ আমান কটন ফাইব্রাস লিমিটেড।

অন্যদিকে গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে দর কমার শীর্ষে থাকা কোম্পানির মধ্যে রয়েছে বিএসসি, দুলামিয়া কটন মিলস, ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো), ন্যাশনাল টিউবস, পিজিসিবি, বিএসসিসিএল, ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, এটলাস বাংলাদেশ দ্য পেনিনসুলা চিটাগং লিমিটেড।

অন্যদিকে সিএসইতে গতকাল সিএসসিএক্স সূচক দিনের ব্যবধানে ১০৪ পয়েন্ট কমে ১২ হাজার ৩১৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল ১২ হাজার ৪১৮ পয়েন্টে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ২৯৮টি কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৮১টির, কমেছে ১৯৪টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২৩টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে মোট ৭২ কোটি ৪০ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৬২ কোটি ৭০ লাখ টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন