কুয়েট বন্ধ ঘোষণা, শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, খুলনা

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অধ্যাপক মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে আগামী ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী সাজ্জাদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীদের বিকাল ৪টার মধ্যে হল ত্যাগ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীরা জানান, শুক্রবার সিন্ডিকেট সভা শুরু হওয়ার পর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। এসময় তারা ছাত্র রাজনীতি বন্ধ না করাসহ ৫ দফা দাবিতে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন।

মঙ্গলবার দুপুরে ক্যাম্পাসের বাসায় শৌচাগারে অচেতন হয়ে পড়ার পর ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ও লালন শাহ হলের প্রভোস্ট সেলিমকে হাসপাতালে নেওয়া হয়; সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওই দিন বাসায় ফেরার আগে তাকে ছাত্রলীগের একটি অংশ লাঞ্ছিত করেছিল বলে অভিযোগ উঠে। যদিও অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

এ ঘটনা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কমিটি গঠনের দুদিন পর বৃহস্পতিবার দুই সদস্য তদন্তে অপারগতা প্রকাশের কথা জানান, উপাচার্য অধ্যাপক কাজী সাজ্জাদ হোসেন।

তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির সভাপতি করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মো. আরিফুল ইসলাম। সদস্য করা হয় সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক আতাউর রহমান ও ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক কল্যাণ কুমার হালদারকে। 

উপাচার্য অধ্যাপক কাজী সাজ্জাদ সাংবাদিকদের বলেন, এদের মধ্যে থেকে কল্যাণ কুমার হালদার লিখিতভাবে এবং মো. আরিফুল ইসলাম মৌখিকভাবে তদন্ত করতে অপারগতা জানিয়েছেন।

তবে কী কারণে এই অপারগতা, তা জানতে ওই দুই শিক্ষককে একাধিক বার ফোন করা হলেও তারা ধরেননি।

অধ্যাপক সেলিমের মৃত্যুর পর একটি ভিডিও গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। সেখানে তাকে অনুসরণ করে কয়েকজন ছাত্রকে তার কক্ষে যেতে দেখা গেছে। সিসিটিভি ফুটেজের বরাত দিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বে একদল ছাত্র ক্যাম্পাসের রাস্তায় অধ্যাপক সেলিমকে জেরা করেন। পরে তাকে অনুসরণ করে  তারা তড়িৎ প্রকৌশল ভবনে তার কক্ষে যান। তারা আধা ঘণ্টার মতো অধ্যাপক সেলিমের সঙ্গে ছিলেন এবং পরে অধ্যাপক সেলিম বের হয়ে বাসার দিকে যান।

অধ্যাপক সেলিমের কক্ষে ওই ছাত্ররা তাকে লাঞ্ছিত করে থাকতে পারেন, যা তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয় বলে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।

বুধবার রাতে অধ্যাপক সেলিমকে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর বাঁশগ্রামে নিজ বাড়িতে দাফন করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন