গ্রাহকের কাছে ছয় বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির পাওনা অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৯৪ কোটি ১৬ লাখ ৬৫ হাজার ১০০ টাকা। এ বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় গ্রাহকদের বিরুদ্ধে ২১ হাজার ৮৩৮টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গতকাল বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিদ্যুৎ বিভাগের উপস্থাপিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বৈঠকে বিদ্যুতায়িত হয়ে হাতি মৃত্যুর ঘটনাও তদন্ত করতে বলেছে সংসদীয় কমিটি।
কমিটির সভাপতি ওয়াসিকা আয়শা খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, আবু জাহির, এসএম জগলুল হায়দার, আছলাম হোসেন সওদাগর, খালেদা খানম ও নার্গিস রহমান বৈঠকে অংশ নেন।
বৈঠকের কার্যপত্র সূত্রে জানা যায়, সবচেয়ে বেশি মামলা দায়ের করেছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড। তাদের দায়ের করা চলমান মামলার সংখ্যা ৯ হাজার ৮৪৫টি। এসব মামলার বিপরীতে অনাদায়ী অর্থের পরিমাণ ৫২ কোটি ২৭ লাখ ৫৩ হাজার ২৫৪ টাকা। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের করা মামলা আছে ৪ হাজার ৪৬৬টি। তাদের পাওনা ৫৮ কোটি ২৭ লাখ ৫৪ হাজার ১৩৪ টাকা। ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) দায়ের করা মামলা আছে ৩ হাজার ৫৩৮টি। মোট ১৮৪ কোটি ৭৩ লাখ ৯০ হাজার ৮৯৭ টাকা পাওনা আদায়ের জন্য এসব মামলা করেছে সংস্থাটি। ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) দায়ের করা মামলার সংখ্যা ১৪টি। এসব মামলার বিপরীতে তাদের পাওনা প্রায় ১৪০ কোটি টাকা। নর্দার্ন ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (নেসকো) মামলা করেছে ৩ হাজার ৯৮৮টি। এসব মামলায় তাদের পাওনা প্রায় ৪৪ কোটি টাকা। আর ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) দায়ের করা মামলা আছে ৪৭টি। এসব মামলার বিপরীতে তাদের পাওনা প্রায় ১১৫ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গতকালের বৈঠকে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থায় ভূগর্ভস্থ বৈদ্যুতিক কেবল স্থাপন নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে মন্ত্রণালয় জানায়, এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৬৯২ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ লাইনের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে ডিপিডিসির ২ হাজার ৪২২ কিলোমিটার ও ডেসকোর ৪৮৮ কিলোমিটার লাইন স্থাপন করা হবে। ভূগর্ভস্থ লাইন নির্মাণকাজের পরামর্শক বিদেশী। করোনা পরিস্থিতির কারণে কাঙ্ক্ষিতভাবে কাজ এগোয়নি।
বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থায় ভূগর্ভস্থ বৈদ্যুতিক কেবল স্থাপনের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে একটি প্রতিবেদন দিতে বলেছে সংসদীয় কমিটি। এছাড়া বিদ্যুতায়িত হয়ে হাতি মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করে মন্ত্রণালয়কে একটি প্রতিবেদন দিতে বলেছে সংসদীয় কমিটি।