সিপিডির ওয়েবিনারে বক্তারা

এলডিসি উত্তরণ পূর্ববর্তী সময় কাজে লাগানো দরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ হওয়ার সুপারিশ করেছে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট (সিডিপি) ২০২৪ সালে উত্তরণ হওয়ার কথা থাকলেও কভিড-১৯-এর কারণে আরো দুই বছর বৃদ্ধি করে ২০২৬ সাল নির্ধারণ করা হয়েছে। হিসাবে বাংলাদেশের হাতে পুরো পাঁচ বছর সময় রয়েছে। ফলে এলডিসি উত্তরণ-পরবর্তী বাণিজ্যিকসহ যেসব চ্যালেঞ্জ আছে, সেগুলো মোকাবেলায় পাঁচ বছর যথাযথভাবে কাজে লাগানো দরকার বলে মনে করছেন গবেষকরা। গতকাল সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত স্বল্পোন্নত দেশ থেকে গতিময়তার সঙ্গে উত্তরণের কৌশল শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা।

ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ এমপি।

ওয়েবিনারে আলোচকরা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ প্রথম স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় নাম লেখায়। আর ২০১৮ সালের মার্চে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তীর্ণ হওয়ার তিনটি লক্ষ্যই সফলতার সঙ্গে অর্জনের মাধ্যমে উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ পেয়েছে। মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা থেকে উত্তরণ লাভের কথা থাকলেও আরো দুই বছর বেড়ে ২০২৬ পর্যন্ত করা হয়েছে। পাঁচ বছরের মধ্যে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল, আন্তর্জাতিক বাজারে বিনা সুদে ঋণ, অর্থনৈতিক সক্ষমতা আরো শক্তিশালী এবং ওষুধ শিল্পের রফতানির বাজার আরো বাড়ানোর দিকে জোর দিতে হবে। সেটি করতে পারলে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ হতে বাংলাদেশের জন্য আর কোনো বাধা থাকবে না।

বক্তারা বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নত দেশে উত্তরণের পাশাপাশি আমরা নিম্নআয়ের দেশ থেকে নিম্নমধ্য আয়ের দেশেও উত্তরণ করছি। তার মানে আমাদের দ্বৈত উত্তরণ ঘটতে যাচ্ছে।

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নত দেশে উত্তরণ হওয়ার জন্য সিপিডি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সুপারিশ গবেষণা করে আসছে। গতকালের ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, আমরা শুধু অর্থনৈতিক দিক থেকেই উন্নত দেশে পরিণত হতে চাই না। আমরা চাই অর্থনৈতিক, সামাজিক পরিবেশের দিক থেকে উন্নত দেশে পরিণত হতে। উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার পর আমাদের সামনে চারটি চ্যালেঞ্জ এসে দাঁড়াবে।

চার চ্যালেঞ্জের ব্যাখ্যা করে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা এখন বৈশ্বিক বাজারের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছি। উন্নত দেশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজার উৎপাদনেও আমাদের উল্লেখযোগ্য অবদানের চেষ্টা করতে হবে। স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে আমরা গ্রাহকদের থেকে বিভিন্ন সুবিধা নিচ্ছি। যখন উন্নত দেশে পরিণত হবে, তখন তাদেরও সুবিধা দেয়ার সক্ষমতা থাকতে হবে আমাদের। তৃতীয় ব্যাপারটি হলো, এখন আমরা কিছু কিছু নিয়মনীতির ক্ষেত্রে ছাড় পাচ্ছি। ক্রমে আমাদের নীতিমান্যতা অর্থাৎ নীতিশৃঙ্খলায় অভ্যস্ত হতে হবে। এছাড়া নীতির প্রায়োগিকতায়ও আমাদের বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে। অর্থাৎ আগে যেসব ব্যাপারে শৈথিল্যের সুযোগ ছিল। উন্নত দেশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শৈথিল্যের সে সুযোগ আর থাকবে না। সুতরাং চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলার জন্য এখন থেকেই আমাদের চিন্তাভাবনা করার পাশাপাশি প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মতিন চৌধুরী, বাংলাদেশ টেক্সটাইল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রুবানা হক, ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের পরিচালক . সলিমুল হক এবং ন্যাশনাল গার্মেন্ট ওয়ার্কার ফেডারেশনের সভাপতি . আমিনুল হক প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন