৫০ পয়েন্টে আটকে আছে পুঁজিবাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেল করোনা ভাইরাসের কারণে সাধারণ ছুটির সময় ৬৫ দিন বন্ধ ছিল দেশের পুঁজিবাজার। অবশেষে গত ৩১ মে থেকে পুঁজিবাজারে আবারো লেনদেন চালু হয়। চালুর পর প্রথম দিন ৫২ পয়েন্ট বেড়েছিল সূচক।  এর পর থেকেই প্রাণহীন হয়ে পড়েছে পুঁজিবাজার। সূচকে সামান্য উত্থান-পতন ও নামমাত্র লেনদেন হচ্ছে। গত ১৮ কার্যদিবস ৩ হাজার ৯৫০ থেকে ৪ হাজার পয়েন্টের মধ্যে উঠানামা করেছে সূচক।  ফ্লোর প্রাইসের প্রভাবে ৫০ পয়েন্টের মধ্যেই আটকে রয়েছে পুঁজিবাজার।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, ৩১ মে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান  সূচক ডিএসইএক্স ছিল ৪ হাজার ৬০ পয়েন্টে। এর পরের কার্যদিবসেই এটি নেমে আসে ৩ হাজার ৯৯৯ পয়েন্টে।এর পর থেকে সূচক আর ৪ হাজারের ঘরে পৌছায় নি। লেনদেন চালুর পর ৪ জুন ডিএসইএক্স সবচেয়ে কম ৩ হাজার ৯৫৩ পয়েন্টে অবস্থান করছিল। সর্বশেষ গতকাল সূচকটি আগের দিনের তুলনায় প্রায় দেড় পয়েন্ট বেড়ে ৩ হাজার ৯৬৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) প্রেসিডেন্ট মো. ছায়েদুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, সাধারণত প্রতিবছরই বাজেটকে কেন্দ্র করে জুন মাসে পুঁজিবাজার কিছুটা নিস্তেজ থাকে। এসময় ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বাজেটে শেষ পর্যন্ত কি পরিবর্তন আসছে সেটির অপেক্ষায় থাকেন। ৩০ জুন বাজেট পাশ হয়ে যাওয়ার পর আশাকরছি বাজারে গতি ফিরে আসবে।

গতকাল লেনদেনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সূচক প্রায় স্থিতিশীল ছিল। গতকাল ডিএসইতে সূচকের উত্থানে ভ‚মিকা ছিল বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের। এদিন কোম্পানিটির শেয়ার ১ শতাংশ বেড়েছে। গতকাল ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস দশমিক ৩৬  পয়েন্ট বেড়ে দিন শেষে ৯১৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসইর ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ দিনের ব্যবধানে প্রায় ১ পয়েন্ট বেড়ে গতকাল ১ হাজার ৩২৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের দিন শেষে যা ছিল ১ হাজার ৩২৬ পয়েন্টে। 

গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে মোট ৫৪ কোটি ১৪ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৬৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৭১টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ২৩টির, কমেছে ১৫টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২৩৩টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।

খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ৩৭ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে ওষুধ ও রাসায়নিক খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৫ শতাংশ করে দখল করে নিয়েছে ব্যাংক খাত। আর ৯ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত। আর টেলিযোগাযোগ খাতের দখলে ছিল ৭ শতাংশ।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ সিকিউরিটিজ ছিল আল-আরাফা ইসলামী ব্যাংক, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, এক্সিম ব্যাংক, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল, লিন্ডে বাংলাদেশ, এনসিসি ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন বাংলাদেশ, রেকিট বেনকিজার ও জেএমআই সিরিঞ্জ।

দর বাড়ার শীর্ষ কোম্পানির তালিকায় ছিল ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস, প্যারামাউন্ট ইন্সুরেন্স, অ্যাম্বি ফার্মাসিউটিক্যালস, আইসিবি এমপ্লয়ীজ প্রভিডেন্ট মিউচুয়াল ফান্ড ওয়ান স্কিম ওয়ান। বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল, পাওয়ার গ্রিড, এক্সিম ব্যাংক, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, সেন্ট্রাল ইন্সুরেন্স ও এনসিসি ব্যাংক।

অন্যদিকে এক্সচেঞ্জটিতে গতকাল দর পতনের শীর্ষে থাকা কোম্পানিগুলো হচ্ছে বেক্সিমকো সিনথেটিক্স, তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, প্রাইম ইন্সুরেন্স, সানলাইফ ইন্সুরেন্স, সোনালী আাঁশ, দেশ গার্মেন্টস, রেকিট বেনকিজার, জেএমআই সিরিঞ্জ ও এসিআই ফর্মুলেশন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন