যৌনকর্মীর পারিশ্রমিক পরিশোধের বিরোধে সংঘটিত ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইলের ওষুধের দোকানদার মাজহারুল ইসলাম পল্টন হত্যা মামলায় ১০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় বিচারক সাতজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার এই রায় ঘোষণা করেন ঢাকার এক নম্বর দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- এখলাছ উদ্দিন ওরফে জুয়েল, আবুল কাশেম ফকির ওরফে বাচ্চু মেম্বার, আবুল কালাম আজাদ ওরফে পিনু ডাক্তার, চন্দন, শুক্কুর আলী ওরফে আশ্রাফ আলী, কবির মিয়া, আবুল কাশেম, বাদল মিয়া, ফারুক মিয়া ও রুমা আক্তার।
এছাড়া খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন আফতাব উদ্দিন ওরফে আক্রাম আলী, বদরুল আলম ওরফে বদরুল, ইসমাইল হোসেন, কাজল মিয়া, রফিক, আবু সিদ্দিক ও দুলাল।
আসামিদের মধ্যে ফারুক মিয়া, রফিক ও রুমা আক্তার পলাতক। এছাড়াও চার্জশিটভুক্ত আসামি জব্বর মোহরী মারা যাওয়ায় তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
আদালত জব্বর মোহরীকে অব্যাহতি দিয়ে ১৭ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার কার্য শুরুর আদেশ দেন।
এ মামলায় আদালত চার্জশিটভুক্ত ৩৫ সাক্ষীর মধ্যে ৩০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
গত ৫ ডিসেম্বর আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের মাধ্যমে বিচারকাজ শেষ হয়। আদালতে হাজির থাকা সকল আসামীদের জামিন বাতিল করে ওইদিনই কারাগারে পাঠান আদালত। ওইদিনই আদালত রায়ের জন্য ২৪ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন।
মামলার অভিযোগে জানা যায়, ২০০৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত থেকে ১ মার্চ সকাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে পল্টনকে তার ওষুধের দোকানে মাথা ও কপালে আঘাত করে খুন করা হয়। দোকানের ভিতরে বাঁশের খুটির সঙ্গে গামছা দিয়ে মরদেহ বেঁধে রেখে দোকানে তালা দিয়ে চলে যায় খুনিরা।
এ বিষয়ে ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ কৌঁসুলি আবু আব্দুল্লাহ ভূঞা জানান, আসামিদের মধ্যে রুমা আক্তার ও ফারুক আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন।
ওই জবানবন্দীতে তারা জানান, ‘রুমা আক্তার একজন যৌনকর্মী। সেই রাতে পল্টনের ওষুধের দোকানে আসামিদের কয়েকজন রুমার সঙ্গে যৌনকর্মে লিপ্ত হয়। পরে তারা টাকা দিতে অস্বীকার করলে রুমা ফার্মেসি মালিক পল্টনকে সেই টাকার জন্য চাপ দেয়। কিন্তু পল্টন তাতে রাজি না হলে তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে আসামিরা পল্টনকে পিটিয়ে হত্যা করে।’
এ ঘটনায় নিহত পল্টনের বোন বিউটি আক্তার ১ মার্চ নান্দাইল থানায় মামলা করেন। ২০০৮ সালের ৩১ জানুয়ারি ১৮ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন।