‘তারগোভিকজানিন’ ওলগা তোকারচুকের নোবেল

আন্দালিব রাশদী

তারগোভিকজানিনগালিটা ভীষণ কড়া। প্রাচীন পোলিশ শব্দের গালির মানে বিশ্বাসঘাতক। পোলিশ সরকার, পোল্যান্ডের রক্ষণশীল নাগরিক, পোলিশ এলিট, পোলিশ পুলিশপ্রায় সবার কাছেই ওলগা তোকারচুক হচ্ছেন তারগোভিকজানিন। ওলগার ফিকশনে উঠে এসেছে পোল্যান্ডেরই ইতিহাসের কিছু কালো অধ্যায়, যা ইতিহাসের বইতে উপেক্ষিত। তারটা রাজনৈতিক ইতিহাস নয়, বরং ইতিহাসের উপেক্ষিত মানুষের কাহিনী। ওলগা বলেন, ‘আমি এতটাই সরল ছিলাম যে ভেবেছি, এই অন্ধকার এলাকাগুলো নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত করা যাবে। কিন্তু তা যে ঝুঁকিবহুল হবে, ভাবিনি।গ্রন্থ প্রকাশের পর শারীরিক আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য তার প্রকাশক তাকে বডিগার্ড দিয়েছিলেন।

নোবেল সাহিত্য পুরস্কারের গুণগত মান নিয়ে (বিশেষ করে স্ফেতলানা অ্যালেক্সিয়েভিচ বব ডিলানকে পুরস্কৃত করার পর) প্রশ্ন যখন সুইডিশ একাডেমিকে বর্শার মতো বিদ্ধ করছে, তখন কমিটির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের যৌন কেলেঙ্কারি গোপনীয়তা ফাঁসের অভিযোগ একাডেমিকে সাময়িকভাবে অকার্যকর করে তোলে। ২০১৮তে কমিটির সাতজন সদস্যের পদত্যাগের কারণে ন্যূনতম ১২ সদস্যের কোরাম গঠনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় বলে ২০১৮তে পুরস্কার ঘোষণা সম্ভব হয়নি। ২০১৯-এর অক্টোবরে ঘোষিত হয়েছে দুই বছরের পুরস্কার

২০১৮ সালের পুরস্কারটি দেয়া হয়েছে পোলিশ কথাসাহিত্যিক ওলগা তোকারচুককে।

ওলগা অপেক্ষাকৃত কম বয়সেই নোবেল পেলেন। তার জন্ম ১৯৬২ সালে। রবীন্দ্রনাথ ৫৪ বছর বয়সে পুরস্কৃত হয়েছিলেন আর আলবেয়ার কামু যখন পুরস্কৃত হন, তার বয়স তখন ৪৭ বছর।

ওলগা পুরস্কারের জন্য অযোগ্য এমন কেউ বলেননি, তবে তার চেয়ে বড় মাপের বেশ কজন নারী লেখক উপেক্ষিত হয়েছেন, অভিযোগ কেউ কেউ করেছেন।

নোবেল সাহিত্য পুরস্কার বিজয়ী চতুর্দশ নারী:

১৯০১ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত ১১৯ বছরে সাহিত্য নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ১২৭ জন। তাদের মধ্যে নারী মাত্র ১৪ জন। পুরুষ ১১৩ জন। ওলগা তোকারচুক চতুর্দশ নারী।

নারী বিজয়ীরা হচ্ছেন সেলমা লেগারলফ ১৯০৯, গ্রাজিয়া দেলেদ্দা ১৯২৬, সিগরিদ উনসেন ১৯২৮, পার্ল এস বাক ১৯৩৮, গ্যাব্রিয়েলা মিস্ত্রাল ১৯৪৫, ন্যালি স্যাকস ১৯৬৬, নাদিন গর্দিমার ১৯৯১, টনি মরিসন ১৯৯৩, বিশ্লাভা শিমবোর্স্কা ১৯৯৬, এলফ্রিদে এলিনেক ২০০৪, ডরিস লেসিং ২০০৭, হের্টা মুলার ২০০৯, এলিস মুনরো ২০১৩, স্ফেতলানা অ্যালেক্সিয়েভিচ ২০১৫ ওলগা তোকারচুক ২০১৮।

নোবেল সাহিত্য পুরস্কার বিজয়ী ষষ্ঠ পোলিশ

বিজ্ঞানের ম্যারি কুরিকে দিয়ে পোলিশদের নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির সূচনা ১৯০৩ সালে। প্রথম সাহিত্য পুরস্কার আসে ১৯০৫ সালে হেনরিক সিংকিভিচের মাধ্যমে। সাহিত্যে দ্বিতীয় বিজয়ী ল্যাডিস্লাভ র্যায়মন্ড নোবেল পেলেন ১৯২৪ সালে, পোলিশ বংশোদ্ভূত আইজাক বাসেভিস সিঙ্গার নোবেল ভূষিত হন ১৯৭৮ সালে, ১৯৮০ সালে আবার পোলিশ চতুর্থ বিজয়ী চেশওয়া মিয়োশ; পঞ্চম বিজয়ী বিশ্লাভা শিমবোর্স্কা ১৯৯৬ সালের নোবেল লরিয়েট। ষষ্ঠ পোলিশ নোবেল লরিয়েট ২০১৮ সালে ওলগা তোকারচুক।

নিবন্ধে ওলগা তোকারচুকের একটি সাক্ষাত্কারের অনুবাদ সংযোজিত হলো:

প্রশ্ন: রাজনীতিকে সংজ্ঞায়িত করতে কিংবা সক্রিয়তাবাদে অবদান রাখতে সাহিত্যের কি কোনো ভূমিকা রয়েছে? নাকি এটা সাহিত্যের একটি শিল্পকৌশল যে ধরনের অঙ্গন থেকে দূরে থাকতে হবে?

ওলগা তোকারচুক: যদি সাহিত্য কোনো ভূমিকা পালন করে থাকে, তা অবশ্য সচেতনভাবে নয়। কেবল সক্রিয়তাবাদের প্রমাণ দিতেই যদি কোনো লেখক উপন্যাস লিখেন, তা কখনো ভালো শিল্প হবে না। আপনাদের মনে রাখতে হবে আমি বেড়ে উঠেছি একটি কমিউনিস্ট শাসনকালে, যেখানে প্রোপাগান্ডা ছিল প্রবল শক্তিশালী। প্রোপাগান্ডা কেমন

");

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন