প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল
বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে যেসব শ্রমিক ভাই-বোন যাচ্ছেন তাদের জন্য বিমানবন্দরে আলাদা স্পেশাল
লাউঞ্জের ব্যবস্থা করব। আমরা এরই মধ্যে জায়গা ঠিক করেছি, সিভিল এভিয়েশনের সঙ্গে কথা
হয়েছে, আশা করি দুই সপ্তাহের মধ্যে হয়ে যাবে।
শনিবার (৫ অক্টোবর) বিকালে প্রবাসী কল্যাণ ভবনের বিজয় একাত্তর হলে
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মীদের সুরক্ষা ও কল্যাণ
বিষয়ে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড এবং মালয়েশিয়ার পার্কেসোর মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর
অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, লাউঞ্জ হলে প্রবাসী শ্রমিক ভাই-বোনদের যন্ত্রণা
অনেক লাঘব হবে। এর পাশাপাশি অন্যান্য যে ভিআইপি সুবিধা সেগুলোও থাকবে। বিমানবন্দরে
প্রবেশের মুহূর্ত থেকে প্লেনে ওঠার আগ পর্যন্ত যে লাউঞ্জ থাকে সে পর্যন্ত সব স্তরে
তাদের সঙ্গে একজন লোক থাকবে সহায়তার জন্য। আমরা মনে করি এটি প্রবাসীদের প্রতি উদারতা
নয়। এটি আমাদের দায়বদ্ধতা উনাদের প্রতি। এটি বহু আগে করা উচিত ছিল।
আসিফ নজরুল বলেন, গতকাল মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম
এসেছিলেন বাংলাদেশে। তার সঙ্গে বাংলাদেশের শ্রমিকদের কল্যাণ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি
বলেছেন ১৮ হাজার বাংলাদেশীকে মালয়েশিয়াতে যাওয়ার সুযোগ দিচ্ছেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
এটা মানে এই নয় যে নতুন কর্মী। আমি এটা একটু পরিষ্কার করি। এ ১৮ হাজার মানে নতুন চাকরি
না, নতুন কর্মী নেয়া হচ্ছে না। ১৭ হাজারের কিছু বেশি কর্মীর সব কাগজপত্র ঠিক থাকা সত্ত্বেও
মালয়েশিয়া সরকারের সময়সীমার মধ্যে সে দেশে যেতে পারেননি। নানা ধরনের জটিলতার কারণে
তারা মালয়েশিয়ায় যেতে পারেন নাই। যেহেতু ৩১ মে’র মধ্যে তারা যেতে পারেননি তাই মালয়েশিয়া
সরকার তাদেরকে গ্রহণ করেনি। দুর্ভাগ্যবশত আমাদের শ্রমিক ভাই-বোন অনেক টাকা দিয়েছিলেন
মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য। উনাদের কষ্ট এবং যন্ত্রণার কোনো তুলনা হয় না। গতকাল যখন বিমানবন্দর
থেকে উনারা একসঙ্গে একই গাড়িতে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে এসেছিলেন। আমি প্রধান উপদেষ্টা
ড. মুহাম্মদ ইউনুস স্যারকে বলেছিলাম এ বিষয়ে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার।
তিনি বলেন, আমরা হোটেলে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা শুরু করার আগে এ বিষয়ে
প্রধান উপদেষ্টা কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এই
১৮ হাজার বাংলাদেশীকে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার সুযোগ দেয়া হবে। এখন একটা বিষয় মাথায় রাখতে
হবে, প্রতিশ্রুতি মানেই কিন্তু নিশ্চিত না। আমরা মালয়েশিয়ায় আমাদের হাইকমিশন এবং আমাদের
মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এ প্রতিশ্রুতি কার্যকর করতে যত দ্রুত সম্ভব প্রচেষ্টা চালাব।
আজকে রাতে মালয়েশিয়ার হাইকমিশনারের সঙ্গে মিটিং আছে সেখানে আমি বিষয়টি নিয়ে আলাপ করব,
আমরা একটা রোডম্যাপ তৈরি করব।
তিনি জানান, আমি বৈঠকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তিনটি বিষয়ে
আলোচনা করেছি। তার মধ্যে বলেছি মালয়েশিয়ার বন্ধ শ্রম বাজার পুনরায় চালু করার বিষয়ে।
পাশাপাশি যে ১০০ রিক্রুটিং এজেন্সির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল রিক্রুটমেন্ট প্রসেস সেটি উন্মুক্ত
করে দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছি। সব রিক্রুটিং এজেন্সি যাতে কাজ করতে পারে এবং প্রক্রিয়াটি
যেন স্বচ্ছ হয়। তৃতীয়ত বলেছিলাম, কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি করা যায় কিনা। আমার কাছে মনে
হয় মানবিক দৃষ্টি থেকে বিবেচনায় নিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান
মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রুহুল আমিন, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক হামিদুর
রহমান প্রমুখ।