দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন ও দুর্নীতি দমন—এ পাঁচ বিষয়ে সংস্কারের জন্য পৃথক কমিশন গঠন করে গতকাল প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। ছয়টির মধ্যে এখন শুধু সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রজ্ঞাপন জারি বাকি রইল।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গত ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে ছয়টি কমিশন গঠনের কথা জানান। এর মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান করা হয়েছে বদিউল আলম মজুমদারকে। পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে আছেন সফর রাজ হোসেন। এছাড়া বিচার বিভাগ সংস্কারে বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনে ইফতেখারুজ্জামান ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনে আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীকে প্রধান করা হয়েছে। আর সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে প্রথমে আইনজীবী শাহদীন মালিকের নাম ঘোষণা করা হয়। পরে তার জায়গায় দায়িত্ব দেয়া হয় অধ্যাপক আলী রীয়াজকে। প্রজ্ঞাপনের কারণে পাঁচটি কমিশন এখন আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করতে পারবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারে বদিউল আলম মজুমদারের সঙ্গে সদস্য হিসেবে থাকছেন স্থানীয় সরকার ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহেমদ, নির্বাচন কমিশনের সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলী, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ মো. আবদুল আলীম, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ ডা. জাহেদ উর রহমান, শাসন প্রক্রিয়া ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার বিশেষজ্ঞ মীর নাদিয়া নিভিন, ইলেকট্রনিক ভোটিং ও ব্লকচেইন বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ সাদেক ফেরদৌস। এছাড়া একজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি থাকবেন এ কমিশনে, যার নাম ঘোষণা করা হয়নি।
পুলিশ সংস্কার কমিশনে সদস্য হিসেবে আছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (জননিরাপত্তা বিভাগ) আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইকবাল, সাবেক বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ হারুন চৌধুরী, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক শেখ সাজ্জাদ আলী ও মো. গোলাম রসুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শাহনাজ হুদা, মানবাধিকারকর্মী এএসএম নাসিরউদ্দিন এলান ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।
বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনে সদস্য করা হয়েছে হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এমদাদুল হক, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ এবং হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ফরিদ আহমেদ শিবলী, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ সাইয়েদ আমিনুল ইসলাম, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ মাজদার হোসেন, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী তানিম হোসেন শাওন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক (সুপন) ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনে সদস্যের দায়িত্ব পালন করবেন সাবেক সচিব মোহাম্মদ তারেক ও মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোখলেস উর রহমান, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. হাফিজুর রহমান, সাবেক অতিরিক্ত সচিব রিজওয়ান খায়ের, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক একেএ ফিরোজ আহমেদ ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।
দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনে সদস্য হিসেবে আছেন সাবেক কম্পট্রোলার ও অডিটর জেনারেল মাসুদ আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেম, ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের অধ্যাপক মোস্তাক খান, ব্যারিস্টার মাহদীন চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফারজানা শারমিন ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।