চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) সাইবার নিরাপত্তা প্রযুক্তিপণ্য ও পরিষেবার বাজার আগের বছরের তুলনায় ৯ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে। এতে বাজারের আকার দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ১০০ কোটি ডলার। সম্প্রতি ক্যানালিসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সাইবার নিরাপত্তা খাতের কোম্পানিগুলোর ক্রস-সেলিং বা একই গ্রাহকের কাছে পণ্য ও সেবার বিক্রি বাড়ায় বাজারের আকার বেড়েছে। তবে এটি ক্যানালিসের পূর্বাভাসের তুলনায় কিছুটা কম।
চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে এ খাতের শীর্ষ ১২ কোম্পানি সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে। এ সময় সাইবার নিরাপত্তা খাতে মোট ব্যয়ের ৫৩ দশমিক ২ শতাংশ হিস্যা ছিল এসব কোম্পানির। গত বছর এ পরিমাণ ছিল ৫১ দশমিক ৯ শতাংশ।
কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্যালো আল্টো নেটওয়ার্কসের প্রিসমা ক্লাউড, কর্টেক্স ফর সেকঅপস, নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি সফটওয়্যার প্রভৃতি পরিষেবার বাজার সম্প্রসারণ হয়েছে। এতে কোম্পানিটির বাজার হিস্যা বেড়েছে ১১ দশমিক ২ শতাংশ। আইবিএমের কিউরাডার অধিগ্রহণ করায় এটি আরো বাড়বে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
১১ দশমিক ১ শতাংশ হিস্যা নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে ছিল ফোর্টিনেট। এছাড়া মাইক্রোসফটের ১৮ দশমিক ৬, সিসকো ৫ দশমিক ৩ শতাংশ হিস্যা বেড়েছে। ফ্যালকনের বাজার সম্প্রসারণের কারণে ক্রাউডস্ট্রাইকের বাজার হিস্যা ৩৩ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। তবে গত জুলাইয়ে হওয়া বিভ্রাটের কারণে ভবিষ্যতে কোম্পানিটির হিস্যা কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে মোট বিনিয়োগের ৯১ দশমিক ৩ শতাংশ করা হয়েছে সাইবার নিরাপত্তা পরিষেবা প্রদানকারী এসব প্রতিষ্ঠানে। সিস্টেম ইন্টিগ্রেটর ও এমএসএসপির মাধ্যমে ব্যয় যথাক্রমে ৯ দশমিক ৩ শতাংশ ও ১২ শতাংশ বেড়েছে।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে মোটামুটি সব অঞ্চলেই সাইবার নিরাপত্তা খাতে বিনিয়োগ বেড়েছে। এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে ৮ শতাংশ এবং ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকায় ৯ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে। উত্তর আমেরিকায় এ হার ১০ দশমিক ৩ শতাংশ। যদিও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় কম। লাতিন আমেরিকায় বেড়েছে ১১ দশমিক ২ শতাংশ।
ক্যানালিসের প্রধান বিশ্লেষক ম্যাথিউ বল বলেন, ‘বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের তথ্যপ্রযুক্তি কাঠামোকে ক্লাউড ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) জন্য পুনর্গঠন করছে। একই সঙ্গে তাদের সাইবার নিরাপত্তাকেও পুনর্গঠন করতে হবে, যাতে তারা আরো স্থিতিশীল হতে এবং র্যানসমওয়্যার আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে।’
তিনি জানান, বিক্রেতারা তাদের সাইবার নিরাপত্তা প্লাটফর্মকে এমনভাবে সাজাচ্ছে, যাতে গ্রাহকদের জন্য জটিলতা হ্রাস পায়। তবে এটি একই সঙ্গে স্বল্পসংখ্যক কোম্পানির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়িয়ে তুলছে। তাই এখানে একটি ভারসাম্যপূর্ণ কৌশল গ্রহণ প্রয়োজন।
ক্যানালিসের গবেষণা বিশ্লেষক শ্রীকর উপাধ্যায় বলেন, ‘সাইবার নিরাপত্তা পরিষেবাগুলো আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে আরো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। কারণ কোম্পানিগুলো পরামর্শ, নকশা, ক্রয়, নির্মাণ, গ্রহণ ও পরিচালনার ক্ষেত্রে সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে অংশীদারত্বে দিনদিন আরো নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। চলতি বছর কোম্পানিগুলোর প্রতি ডলার বিনিয়োগ থেকে সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ১ ডলার ৯০ সেন্ট আয় করবে। সাইবার নিরাপত্তা পরিষেবায় বিনিয়োগ চলতি বছর ১২ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে ১৬ হাজার ৩৩০ কোটি ডলারে দাঁড়াবে।’