সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন
এস মুরশিদ বলেছেন, আসন্ন শারদীয় দুর্গাপুজা আনন্দঘন পরিবেশে নিরাপদে উদযাপনের লক্ষ্যে
সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সমাজকল্যাণ
মন্ত্রণালয়ের ৮৪ হাজার কর্মীবাহিনী ৩২ হাজার পুজামণ্ডপে আগামীকাল শুক্রবার (৪ অক্টোবর)
থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত স্বেচ্ছাসেবী
হিসেবে কাজ করবেন। তিনি বলেন, প্রতিদিন সব
কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পূজামণ্ডপ অনুসারে ৮ ঘণ্টা করে ৩ শিফটে রোস্টার দায়িত্ব প্রদান
করার জন্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সব দপ্তর বা সংস্থাকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
এছাড়াও পুলিশের সঙ্গে নাগরিক সমাজ ও বিপ্লবী ছাত্ররাও থাকবেন।
আজ বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা
সুষ্ঠুভাবে উদযাপন উপলক্ষে গৃহীত কার্যক্রম সম্পর্কে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা
বলেন।
তিনি বলেন, আমরা মুসলমান হিন্দু খ্রিস্টান বা বৌদ্ধ বলে আর বিভেদ
সৃষ্টি করতে দিতে পারি না। আমরা পূজামণ্ডপগুলো নজরদারি করব, যদিও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
ব্যাপক নজরদারি করছে।
উপদেষ্টা বলেন, সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের লক্ষ্যে সমাজকল্যাণ এবং
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন প্রকল্পে কর্মরত বা দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের
পূজামণ্ডপে দায়িত্ব থাকবে।
কেন্দ্রীয়ভাবে একটি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। সারা দেশের পূজামণ্ডপের
মনিটরিং রিপোর্ট এ কট্রোলরুমে সরবরাহ করা হবে (কন্ট্রোল রুমের যোগাযোগ নাম্বার: ১০৯৮)।
এছাড়াও সংশ্লিষ্ট সব দপ্তর বা সংস্থার সদর কার্যালয়ে কন্ট্রোল রুম স্থাপন করার নির্দেশনা
প্রদান করা হয়েছে যা ৪ অক্টোবর থেকে ১৩ অক্টোবর ২০২৪ পর্যন্ত চালু থাকবে। এছাড়া সব
কর্মকর্তা বা কর্মচারীর (সনাতন ধর্মের কর্মকর্তা-কর্মচারী ব্যতীত) পূজাকালীন সময়ে ছুটি
বাতিল করার জন্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সব দপ্তর ও সংস্থাকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে
বলেও জানান তিনি।
সচিব নাজমা মোবারেক বলেন, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি,
জাতীয় মহিলা সংস্থা, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, প্রোগ্রাম অফিসার, উপজেলা শিশু
বিষয়ক কর্মকর্তা (৬টি উপজেলা), উপজেলা কর্মকর্তা, ক্রেডিট সুপারভাইজার, তথ্য সেবা কর্মকর্তা
ও তথ্য সেবা সহকারী, ফিল্ড সুপারভাইজার ও জেন্ডার প্রোমোটার, প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা ও
প্রশিক্ষক, স্বেচ্ছাসেবী সমিতিগুলোর প্রতিনিধিসহ সর্বমোট ২৭ হাজার ৮২৮ জনকে দায়িত্ব
প্রদান করা হয়েছে।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, সারা দেশে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের
১ হাজার ৮৯টি অফিস রয়েছে। এছাড়াও ৭০ হাজার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রয়েছে যারা স্বপ্রণোদিত
হয়ে পূজামণ্ডপে দায়িত্ব পালন করবে।
অতিরিক্ত সচিব রেখা রানী বালো বলেন, নিরাপত্তা যেন না দিতে হয় আমরা
সে বাংলাদেশ চাই। সে শান্তি যেন আসে। এর চেয়ে সুখের আর কিছু হতে পারে না। এবার সরকার
পুজা উদযাপন নিয়ে যে পদক্ষেপ নিচ্ছে তা সত্যি সুখকর।
সংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ঢাকাসহ কিছু জায়গায় পূজামণ্ডপে
হামলা হয়েছে, যারা এর সঙ্গে জড়িত ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের আটক করেছে। আমাদের এ
ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। দুষ্কৃতকারীরা নানা কূটচালে আমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে
চাচ্ছে তা হতে দেয়া যাবে না আমাদের সবাইকে সচেষ্ট হতে হবে। ডিসি নিয়োগে অনিয়ম প্রসঙ্গে
বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত খবরের সত্যতা যাচাই করতে টেকনিক্যাল ইন্টিগ্রিটির আলোকে
তদন্ত করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ দরকার।
প্রেস ব্রিফিংয়ে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক,
সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের
অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অনুবিভাগ) রেখা রানী বালো কথা বলেন।