কুড়িগ্রামে পানি কমলেও তীব্র হয়ে উঠছে নদ-নদীর ভাঙন

প্রকাশ: অক্টোবর ০২, ২০২৪

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম

কুড়িগ্রামে তিস্তাসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি কমতে থাকায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র হয়ে উঠেছে নদ-নদীর ভাঙন। এরই মধ্যে ভাঙনের মুখে পড়েছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, কমিউনিটি ক্লিনিক, হাট-বাজারসহ বিস্তীর্ণ জনপদ। আতঙ্কে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে নদীপারের বাসিন্দারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উজানের ঢল আর টানা বৃষ্টিতে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমারের পানি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। অন্যান্য নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে থাকলেও তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে তিস্তার দুই পারের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে তলিয়ে যায় আমন খেতসহ বিভিন্ন ফসল। একদিন পর বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার নিচে নেমে যায় তিস্তার পানি। তবে অন্যান্য নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম না করায় অববাহিকার ফসলের তেমন ক্ষতি হয়নি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, আকস্মিক বন্যায় আমনসহ ৫০০ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রোপা আমনের ক্ষতি কিছুটা কম হলেও অন্যান্য ফসলের ক্ষতি বেশি হয়েছে। ক্ষতি নিরূপণে কাজ করা হচ্ছে।

সরজমিনে দেখা গেছে, জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত চারটি প্রধান নদ-নদীর পানি হ্রাসের ফলে বিভিন্ন পয়েন্টে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নদীপারের পরিবারগুলো। উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ, সদর উপজেলার যাত্রাপুর, রাজারহাটের ঘড়িয়ালডাঙ্গা ও বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, দুধকুমার ও ধরলার ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। আতঙ্কে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে সেখানকার বাসিন্দারা। গত সোমবার উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ব্যাপারী পাড়ার একটি কমিউনিটি ক্লিনিক ও খিদেরকুটি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র ধরলা নদীতে বিলীন হয়েছে।

ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমারের মোহনায় অবস্থিত সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চরযাত্রাপুর। গত দুদিনে এ অঞ্চলের অন্তত ৩০টি ঘরবাড়ি নদ-নদীতে বিলীন হয়েছে। আতঙ্কে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে সেখানকার বাসিন্দারা।

বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবলু মিয়া জানান, একদিকে ধরলা, আরেক দিকে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে সবকিছু বিলীন হচ্ছে। কমিউনিটি ক্লিনিক, বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রসহ তার নিজের বাড়িও ভাঙনের কবলে পড়েছে।

গত দুদিনে সদর উপজেলার চর যাত্রাপুরের ৩০টি বাড়ি নদ-নদীতে বিলীন হয়েছে। কেউ কেউ ঘরবাড়ি সরিয়ে নিতে পেরেছে। কারো কারো আসবাত্র ও গাছপালা ভেঙে গেছে। অন্যদিকে তিস্তার ভাঙনে বিলীন হচ্ছে রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ও বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমিসহ গাছপালা।

এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, দুধকুমারের সাতটি পয়েন্টে বন্যার পানি সমতলে হ্রাস পাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি হচ্ছে। পানি কমায় এসব নদ-নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙন শুরু হয়েছে। আমরা ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। বিভিন্ন স্থাপনা রক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে কাজ করা হচ্ছে।’


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫